দেশ জুড়ে বিজেপি'র বিভাজন ও ঘৃনার রাজনীতি ও রাজ্যে তৃণমূল সরকারের দুর্নীতি অরাজকতার বিরুদ্ধে সহ একাধিক দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি হয়েছে সিপিআই(এম) দার্জিলিঙ জেলা কমিটির পক্ষ থেকে শিলিগুড়ি হাসমিচকে। শুক্রবার দুপুর প্রায় আড়াইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত প্রতিকূল আবহাওয়াকে উপেক্ষা করেই এই কর্মসূচী হয়। একদেশ এক নির্বাচনের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে, ক্রমাগত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে, খুচরো বাজারে পেট্রোল ডিজেলের মূল্য হ্রাসের দাবিতে, নারীদের ওপর সংঘটিত অপরাধ কমানো এবং শিশু কন্যাদের ওপর যৌন নির্যাতন বন্ধের দাবিতে দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই অবস্থানে বক্তব্য রাখেন নেতৃবৃন্দ।
এদিনের অবস্থানের সভাপতি তথা সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকার বলেন, "সারা দেশে ও রাজ্য জুড়ে অরাজকতা চলছে। জনগনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে কেন্দ্রের বিজেপি এবং রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। দ্রব্যমূল্য প্রতিনিয়ত ক্রমবর্ধমান। সরকারের দ্বারা উৎসাহিত হয়ে সর্বত্র বিভাজনের রাজনীতি কায়েম করার চেষ্টা চলছে। ঐক্য সম্প্রীতির পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। চারিদিকে বেকারদের সংখ্যাও বাড়ছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির কোন চেষ্টা নেই সরকারের। অন্যদিকে রাজ্যে স্বৈরাচারী দুর্নীতি পরায়ন তৃণমূল কংগ্রেস সরকার চলছে। আর জি কর হাসপাতালের নৃশংস ঘটনা ঘটে গেছে। এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে নারী সুরক্ষার গোটা রাজ্যের চিত্র পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে। পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে সরকারের উঁচু তলা পর্যন্ত তৃণমূলী দুষ্কৃতিরাজ চলছে। থ্রেট কালচারের পাশাপাশি দুর্নীতিপরায়ন প্রশাসনকে দিয়ে জনগনকে নানাভাবে জনগনের বঞ্চিত করার কাজে লাগানো হচ্ছে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ ও শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনে দুর্নীতির ছায়া পড়েছে। পৌর পরিষেবা তলানিতে ঠেকেছে। গ্রামীণ উন্নয়ন থমকে গেছে। প্রতারনা, অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এর বিরুদ্ধেই আমাদের প্রতিবাদ।" এই প্রতিবাদ আন্দোলনে শিলিগুড়ির মানুষের স্বার্থে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
সিপিআই(এম) দার্জিলিঙ জেলা সম্পাদক সমন পাঠক বলেন, "চরম দুর্নীতি চলছে দেশ ও রাজ্য জুড়ে। আরজি করের বিচার ও নৃশংস ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও রয়েছে আমাদের। সিবিআই'র তদন্তের গতিপ্রকৃতি এখনও স্পষ্ট নয়। এই লড়াই এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেশ রাজ্যের কর্মসংস্থান, সহ উন্নয়নের দিশাহীনতার বিরুদ্ধে আমাদের ধারাবাহিক আন্দোলন চলবে। দেশ জুড়ে একটা রাষ্ট্র একটা নির্বাচন বলে যে প্রচার চলছে তা সম্পূর্ণভাবে গণতন্ত্র বিরোধী। গণতান্ত্রিক দেশে একতান্ত্রিক প্রচার পরিবেশ কায়েম করার চেষ্টা হচ্ছে। শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের সার্বিক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। দুই সরকারের নানা জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক লড়াই চলবে।"
অশোক ভট্টাচার্য বলেন, দুই সরকারের জনবিরোধী নীতির কারণে দেশ ও রাজ্যের জনজীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলার ক্রমাবনতি ঘটছে। পুলিশ প্রশাসন বলে কিছু নেই। নারীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ সরকার। কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতি সহ নানা বিষয়ে তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন তিনি।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন নুরুল ইসলাম, দিলীপ সিং, জয় চক্রবর্তী, অঙ্কিত দে প্রমুখ।
Comments :0