Dhupguri Cold Storage

জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ হিম ঘর কর্তৃপক্ষ, বিপাকে কৃষকেরা

জেলা

জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্বিমত হিমঘর মালিক সমিতির। বিভ্রান্তিকর অবস্থায় কৃষক। হিমঘরে আলু রাখতে আর দিতে হবে না বন্ডের জন্য অতিরিক্ত ১৮ টাকা, নির্দেশ দিয়েছে জেলাশাসক। এই খবর মোবাইলে মোবাইলে মোবাইলের ছড়িয়ে পড়তে হিমঘরে কৃষকদের ভিড়। যদিও সেই নির্দেশিকার কথা অস্বীকার করেছে হিমঘর কর্তৃপক্ষ। 
শুক্রবার ধূপগুড়ি মাগুরমাড়ি এলাকায় অবস্থিত ধূপগুড়ি হিমঘরে সকাল থেকেই আলুর বন্ডের জন্য ভিড় জমান কৃষকরা। কৃষকরা দাবি করেন জেলাশাসক নির্দেশ দিয়েছেন, আলু রাখার জন্য এতদিন প্যাকেট প্রতি যে ১৮ টাকা করে বন্ডের জন্য দিতে হত তা আর দিতে হবে না। যদিও সেই দাবি মানতে নারাজ হিম ঘর কর্তৃপক্ষ।
এই নির্দেশিকাকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক, তৈরি হয় উত্তেজনা। ক্ষেত থেকে কেবল আলু উঠতে শুরু করেছে, আর আলু হিমঘরে সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন বন্ড, সেই প্রয়োজনীয় বন্ড সংগ্রহ করতে কৃষকরা ধূপগুড়ির বিভিন্ন হিমঘরের সামনে ভিড় জমাচ্ছেন। বিগত দিনের নিয়ম অনুযায়ী আলুর বন্ডের জন্য কৃষকদের প্যাকেট প্রতি ২০ টাকা করে দিতে হয়। তবে এ বছর  সারা ভারত কৃষক সভার পক্ষ থেকে মহুকুমা ও জেলা প্রশাসনের কাছে আগেই দাবি জানানো  হয়েছে প্যাকেট প্রতি কোনো মূল্য নেওয়া চলবে না। সেই মতই জেলাশাসক মহকুমা শাসককে জানিয়ে দেন হিমঘরে আলু রাখার জন্য কৃষকদের দিতে হবে না বাড়তি কোন টাকা, শুধু আলু নামানোর যে শ্রমিকদের লাগে তাঁর খরচ বহন করতে হবে কৃষকদের। 
শুক্রবার এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই সমস্যায় পড়েন হিমঘর কর্তৃপক্ষ। হিম ঘরের সামনে গিয়ে কৃষকরা বিনামূল্যে বন্ডের দাবি করেন। সারা ভারত কৃষক সভার জেলা সভাপতি প্রানগোপাল ভাওয়াল বলেন,‘‘ গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ডেপুটেশন দিয়ে দাবি জানাই। প্রশাসন এটা কার্যকরী  করতে পারলে ধন্যবাদ জানাব। আমরা দীর্ঘদিন থেকেই দাবি করছিলাম।
যদিও বিনামূল্যে বন্ড দেওয়ার দাবিতে অরাজি হিমঘর কর্তৃপক্ষ। কারণ অর্ধেকের বেশি আলুরও বন্ড বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে পয়সার বিনিময়। এখন যদি বিনামূল্যে বন্ধ হয় তাহলে বাকিদের টাকা ফেরত দিতে হবে কর্তৃপক্ষকে। যা কোনোভাবেই করা সম্ভব না বলে দাবি করেছে হিমঘর কর্তৃপক্ষ। এমনকি জেলার সমস্ত হিমঘরে আলুর বন্ড দেওয়া শেষ। আর ঠিক এই সময় এই ধরনের নির্দেশকায় উপকৃত হবে কৃষকরা। তবে সমস্যায় পড়বেন হিম ঘর কর্তৃপক্ষ। এমনটাই দাবি করেছে হিম ঘর মালিক কর্তৃপক্ষ। 
কৃষক আজিনুর ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা শুনেছি জেলাশাসক নির্দেশ দিয়েছেন যে আলুর বন্ডের জন্য প্যাকেট প্রতি ১৮ টাকা করে দিতে হবে না। দাসত্ব হিম ঘর কর্তৃপক্ষ আমাদের থেকে জোরপূর্বক নিচ্ছে। ১৮ টাকা মুকুব করলে আমাদের অনেক উপকার হবে।’’
অপর কৃষক আকতার উদ্দিন বলেন, ‘‘হিম ঘরে আলো রাখার জন্য আমরা খরচ দিয়ে থাকি। তা সত্ত্বেও বন্ড নেওয়ার সময় ১৮ টাকা করে প্যাকেট প্রতি অতিরিক্ত নেওয়া হচ্ছে।’’
কল্যান ব্যানার্জি হিমঘর কর্তৃপক্ষ বলেন, ‘‘মানুষের মধ্যে ভুল ম্যাসেজ গিয়েছে। সরকারিভাবে কোন লিখিত নির্দেশিকা আমাদের কাছে পৌঁছায়নি। যদি আমরা বিনামূল্যে আলুর বন্ড বিতরণ করে দেই। তাহলে কৃষকরায় সমস্যায় পড়বেন। কৃষকদের চিহ্নিত করে তাদের তালিকা করে আলুর বন্ড দেওয়া হচ্ছে। বিনামূল্য হলে ওপেন টু অল করে দিতে হবে। আর প্যাকেট প্রতি যে ১৮ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে সেটা গত বছরের নির্দেশিকা মেনেই নেওয়া হচ্ছে।’’
ধূপগুড়ি মহকুমা শাসক পুষ্পা দলমা লেপচা বলেন, ‘‘আলুর বন্ড নিয়ে জেলাশাসক নির্দেশ দিয়েছেন কৃষকদেরকে প্যাকেট প্রতি যে ১৮ টাকা করে দিতে হতো, সেটা আর হিমঘর মালিকরা নিবেন না। শুধুমাত্র শ্রমিকদের খরচ কৃষকদের দিতে হবে। আর যদি কৃষকরা মনে করেন আলু নামানোর জন্য শ্রমিক নিজেরাই নিয়ে আসবেন সেটাও করতে পারেন।’’

Comments :0

Login to leave a comment