ক্যানিংয়ে পুলিশ কোয়ার্টারে মহিলা হোমগার্ডের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় অভিযুক্ত ক্যানিং থানার সাব ইনসপেক্টর সায়ন ভট্টাচার্য’র গ্রেপ্তারের দাবিতে সরব হলো সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটি। সোমবার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার ও
কঠোর শাস্তির দাবিতে ক্যানিং থানায় বিক্ষোভ, ডেপুটেশন শেষে থানার সামনে পথ অবরোধ করা হয়।
মহিলা হোমগার্ডকে পুলিশ আবাসনে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তকে আড়াল করার চেষ্টা হলে বিচারের দাবিতে থানা ঘেরাও করার হুঁশিয়ারী দেন এদিন মহিলা সমিতির নেত্রীবৃন্দ। ক্যানিংয়ের জীবনতলা থানা এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলা হোমগার্ডের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় থানার পুলিশ আবাসনে। এই ঘটনায় মৃতর পরিবার থানায় এফআইআর করে অভিযুক্ত সায়ন ভট্টাচার্য’র কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন। ক্যানিং থানার পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে। এই খুনের ঘটনার তদন্তে বারুইপুর পুলিশ জেলার তরফে সিট গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রূপান্তর সেনগুপ্ত’র নেতৃত্বে ৬ সদস্যর টিম গঠন করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত ক্যানিং থানার সাব ইন্সপেক্টর। মহিলা হোমগার্ডকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় বিচারের দাবিতে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটির উদ্যোগে ক্যানিং থানায় ডেপুটেশন দেওয়া হয়। মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদিকা মোনালিসা সিনহা, জেলা সম্পাদিকা চন্দনা বাগচীর নেতৃত্বে মহিলারা থানায় বিক্ষোভ দেখান ও ডেপুটেশন দেন। ডেপুটেশনে আইনজীবী অতনু চ্যাটার্জি উপস্থিত ছিলেন। এই কর্মসুচিকে কেন্দ্র করে থানার সামনে আয়োজিত ধিক্কার সভায় বক্তব্য রাখেন মোনালিসা সিনহা, চন্দনা বাগচী, মানসী ঘোষ, সুচরিতা বসু, দীপালি অধিকারী, ডিওয়াইএফআই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা, দেবাশিস দেবনাথ প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন মহিলা নেত্রী ঈপ্সিতা সেন।
মোনালিসা সিনহা সভায় পুলিশের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেন, "বিচারের দাবিতে আমরা মহিলারা এসেছি। বিচার না হলে এরপর থানা ঘেরাও করা হবে। পুলিশ আবাসনে মহিলা হোমগার্ডের নিহত হওয়ার ঘটনায় অপরাধীকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে। আর জি কর হাসপাতালের তিলোত্তমার ঘটনাতেও অপরাধীদেরকে আড়াল করেছে তৃণমূল সরকারের পুলিশ। এখানেও আড়াল করা হচ্ছে। মহিলা হোমগার্ডকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি ক্যানিং থানার পুলিশ। সাধারণ মহিলারা আতঙ্কিত আশঙ্কিত। তিনি বলেন যে ক্যানিং থানার আইসি ভয় পেয়েছেন। মহিলা সমিতি ডেপুটেশন দিতে আসবে জানা সত্বেও তিনি থানায় ছিলেন না। অভিযুক্তকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
চন্দনা বাগচী বলেন, "মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মহিলাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। অপরাধীরা শাস্তি পাচ্ছে না। নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, খুনের ঘটনা রাজ্য জুড়ে বেড়েই চলেছে। অপরাধীদের শাস্তি না হওয়ায় অপরাধীরা মনে করছে রাজ্যে তাদের সরকার চলছে। নিহতর পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী পুলিশ আবাসনে মহিলা হোমগার্ডকে ধর্ষণ, খুন হতে হলো পুলিশের সাব ইন্সপেক্টরের কাছে। মহিলা হোমগার্ডের এই মৃত্যুর ঘটনার বিচার চাই আমরা।"
বিচারের দাবিতে মহিলা সমিতির এই লড়াইয়ে সমস্ত মহিলাদের সামিল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ধিক্কার সভা শেষে থানার সামনে রাস্তায় পথ অবরোধ করা হয়। ছিলেন ছাত্র ও যুব আন্দোলনের কর্মীরাও।
Comments :0