Bhajan from Dhupguri

সান্তার বেশে পরিবেশ রক্ষার ঝুলি নিয়ে খুদেদের কাছে ধূপগুড়ির ভজন

জেলা

বন্যা কবলিত এলাকায় সান্তার বেশে টোটো চালক ভজন। ছবি কৌশিক দাম।

পরনে সেই পরিচিত লাল রঙের আলখাল্লা, মাথায় টুপি আর সাদা দাড়ি। কিন্তু তার বাহন কোনো বলগা হরিণ টানা স্লেজ গাড়ি নয়, বরং সুসজ্জিত একটি টোটো। বড়দিনের সকালে এভাবেই বন্যা কবলিত ধূপগুড়ির রাস্তায় সকলকে চমকে দিলেন আশুতোষ ছোট রায়, এলাকায় যিনি ‘ভজন’ নামেই বেশি পরিচিত। পেশায় টোটো চালক ভজনবাবু নিজের দৈনন্দিন অভাব-অনটন ভুলে এদিন খুদেদের কাছে ধরা দিলেন ‘সান্তাক্লজ’ রূপে। তবে তাঁর ঝুলিতে শুধু চকোলেট নয়, ছিল পরিবেশ রক্ষার বিশেষ বার্তাও।
ধূপগুড়ি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ভজনবাবু সারা বছর হাড়ভাঙা খাটুনি করে তিলতিল করে টাকা জমান। সেই জমানো টাকা দিয়েই বড়দিনের উৎসবে মেতে ওঠেন তিনি। প্রতি বছরের মতো এবারও তিনি নিজের টোটোটিকে সুন্দর করে সাজিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে মহকুমার বিভিন্ন বন্যা দুর্গত এলাকায়। উপহার হিসেবে শিশুদের হাতে তুলে দিচ্ছেন চকোলেট এবং নানা ধরণের ফুল ও ফলের চারাগাছ।


বিশ্ব উষ্ণায়নের আবহে পরিবেশ রক্ষা যে অত্যন্ত জরুরি, সেই সচেতনতা ছোটদের মনে গেঁথে দিতেই এই চারাগাছ বিলি, এমনটাই জানালেন ভজনবাবু। বড়দিনে প্রিয় সান্তার কাছ থেকে উপহার পেয়ে খুশি খুদেদের দল। অভিভাবকদের গলাতেও শোনা গেল প্রশংসার সুর। এক অভিভাবক অপর্ণা দত্ত বলেন, ‘‘একজন সাধারণ টোটো চালক হয়েও ভজনবাবু যেভাবে সমাজের কথা ভাবছেন, তা দৃষ্টান্তমূলক।’’
উল্লেখ্য, ভজনবাবুর এই সমাজসেবা কেবল বড়দিনেই সীমাবদ্ধ নয়। বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ক্লাবের রক্তদান শিবির হোক বা জরুরি প্রয়োজনে আর্তের পাশে দাঁড়ানো, বিনামূল্যে টোটো পরিষেবা দিতে তিনি সর্বদা প্রস্তুত থাকেন। নিজের জীবনের শত কষ্টের মাঝেও অন্যের মুখে হাসি ফোটানোই তাঁর জীবনের মূল লক্ষ্য। বড়দিনের সকালে ভজনবাবুর এই মানবিক উদ্যোগ আরও একবার মনে করিয়ে দিল যে, উৎসবের প্রকৃত আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার মধ্যেই লুকিয়ে আছে।

Comments :0

Login to leave a comment