এদিন নিয়োগ দুর্নীতির সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট আদালতে জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট বা ইডি। আদালতকে ইডি’র তদন্তকারীরা জানান, নিয়োগ দুর্নীতি কান্ডে ধৃত অয়ন শীলের সল্টলেকের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে কার্যত সোনার খনির হদিস মিলেছে। তল্লাশি থেকে পাওয়া বিভিন্ন নথি এবং পারিপার্শ্বিক প্রমাণ থেকে স্পষ্ট, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্র ছাড়াও রাজ্যের পৌরসভাগুলির নিয়োগের ক্ষেত্রেও বড়সড় গোলমাল হয়েছে।
আদালতে ইডি জানায়, প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, পৌরসভা নিয়োগ দুর্নীতির পরিমাণ ১০০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। ইডি’র আইনজীবী আদালতকে জানান, এই সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য এবং নথি সিবিআই’র তদন্তকারীদের দেওয়া হয়েছে।
এরপরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পৌরসভা নিয়োগ দুর্নীতিরও তদন্ত করতে পারবে সিবিআই।’’
বিচারপতি নিজের নির্দেশে বলেন, প্রয়োজন পৃথক এফআইআর দায়ের করে তদন্তের কাজ এগোতে পারবে সিবিআই। তদন্তের কাজ কতটা এগোল, ৭ দিন পরে তা আদালতকে জানানোরও নির্দেশ এদিন দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির চক্র চালানোর অভিযোগে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছেন কুন্তল ঘোষ, অয়ন শীলের মতো তৃণমূল ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা। অয়ন শীলকে এই দুর্নীতির অন্যতম মাথা মনে করা হচ্ছে। তদন্তকারীদের অনুমাণ, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মোট পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকারও বেশি। ইতিমধ্যেই অন্যতম মূল অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষের বয়ানে অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের নাম উঠে এসেছে। এরই মাঝে পৌরসভাগুলিতে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেও দুর্নীতি হয়েছে বলে মনে করছে আদালত। এই তদন্ত যত এগোবে, ততই এরসঙ্গে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের যোগ স্পষ্ট হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
উল্লেখ্য, এদিন নিজের পর্যবেক্ষণ দেওয়ার সময় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, সামান্য টাকা উপার্জন করতে কালঘাম ছুটছে সাধারণ মানুষের। আর অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের মতো অপরাধীরা টাকার পাহাড়ে বসে রয়েছেন। এক শ্রেণীর রাজনৈতিক নেতাদের গায়ে টোকা মারলেই টাকা খসে পড়ছে। এই টাকার উৎস খুঁজে বের করা প্রয়োজন।
Comments :0