COMMUNALISM IN MADHYA PRADESH

মধ্যপ্রদেশের আইন কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ আনল এবিভিপি

জাতীয়

ABVP COMMUNALISM BJP MADHYA PRADESH চেনা ছন্দেই মধ্যপ্রদেশে উষ্কানি দিয়েছে এবিভিপি। ছবি প্রতিকী।

আইনের বইয়ে লেখা রয়েছে ‘‘ হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি একটি ধ্বংসাত্মক আদর্শ। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং আরএসএস’র মতো সংগঠনগুলি হিন্দুরাষ্ট্র গঠন করতে চায়, এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করতে চায়’’। এই জাতীয় বক্তব্যের ফলে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হতে পারে, এই অভিযোগ তুলে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের একটি সরকারি আইন কলেজের অধ্যক্ষকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করল সংঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন এভিবিপি। এর পাশাপাশি প্রাক্তন অধ্যক্ষ, বইটির লেখক এবং প্রকাশকের নামে এফআইআরও দায়ের করেছে বিজেপি শাসিত রাজ্যের পুলিশ। 


ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। এবিভিপি’র তরফে অভিযোগ আনা হয়, ইন্দোরের নিউ গভর্নমেন্ট ল’ কলেজের অধ্যক্ষ ইনামুল রহমান ‘দেশবিরোধী’ কার্যকলাপ চালাচ্ছেন। তাঁর ইন্ধনেই কলেজ লাইব্রেরিতে ফারহাত খানের লেখা ‘কালেক্টিভ ভায়োলেন্স অ্যান্ড ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেম’ নামের একটি ঠাঁই পেয়েছে। এই বইটির একাধিক বক্তব্য ‘হিন্দুত্ব’ বিরোধী, এবং সেগুলি হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত করেছে। এভিবিপি’র আরও অভিযোগ, কলেজ ক্যাম্পাসে লাভ জিহাদ চালানো হচ্ছে। চালাচ্ছেন বেশ কিছু অধ্যাপক। 


এই ঘটনা সামনে আসায় আসরে নামেন মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্রা। তাঁর অভিযোগ, নিউ গভর্নমেন্ট ল’ কলেজে সিলেবাসের বাইরের বিষয় পড়ানো হচ্ছে, এবং এর পিছনে দেশদ্রোহী শক্তিগুলির মদত রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, আইনের পড়ুয়াদের ৩৭০ ধারা সম্পর্কে ভুল তথ্য দিচ্ছেন কলেজের অধ্যাপকরা। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে হিন্দুত্ব বিদ্বেষী আইনজীবী তৈরির চক্রান্ত চলছে। এর মোকাবিলায় তিনি পুলিশকে যথাযত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। 


সেই মোতাবেক ইনামুল রহমান, ফারহাত খান, কলেজের অধ্যাপক মির্জা মোজিস বেগ এবং বইয়ের প্রকাশক অমর ল’ পাবলিকেশনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। চাপের মুখে শনিবারই অধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগ করেন ইনামুল রহমান। 
ইনামুল রহমানের দাবি, তিনি ২০১৯ সালে কলেজের দায়িত্ব পান। ওই বইটি ২০১৪ সাল নাগাদ সংশ্লিষ্ট বিভাগের পরামর্শে কেনা হয়। তাই এই ঘটনার সঙ্গে তিনি কোনও ভাবেই যুক্ত নন। অমর ল’ পাবলিকেশনের দাবি, কিছু ক্ষেত্রে বিতর্কের জেরে ২০২১ সালে বইটির বেশ কিছু অংশে বদল আনা হয়। সেই সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তিও পরবর্তী সংষ্করণগুলিতে ছাপা হয়েছে। পুরোনো সংষ্করণের বই হওয়ার ফলে এই বইটিতে সেই বিজ্ঞপ্তিটি নেই। 


মধ্যপ্রদেশের বিরোধীদের দাবি, বইটিতে কোনও নতুন তথ্য ছাপা হয়নি। ভারতীয় রাজনীতি সম্পর্কে সামান্যতম ওয়াকিবহাল ব্যক্তিই আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সহ গোটা সংঘ পরিবারের প্রকৃত রূপের সঙ্গে পরিচিত। এই সংগঠনগুলি একাধিক ‘কালেক্টিভ ভায়োলেন্স’এর ঘটনায় অভিযুক্ত। মধ্যপ্রদেশের বহু আদালতে এখনও সেই সংক্রান্ত মামলাগুলি চলছে। স্বাভাবিক ভাবে কালেক্টিভ ভায়োলেন্স বা দলবদ্ধ হিংসা সংক্রান্ত আইনের বইয়ে এই সংগঠনগুলির উল্লেখ থাকবে, এবং এদের ঘোষিত কর্মসূচির কথা থাকবে। কিন্তু তারপরেও কেবলমাত্র প্রতিহিংসা থেকে  প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের হেনস্থা করা হচ্ছে।

Comments :0

Login to leave a comment