‘‘আমি আপনাদের পাহারাদার হয়ে থাকবো ভয় পাবেন না।’’ আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনি সভা থেকে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তাঁর কথায় কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে বিভিন্ন ভাবে বঞ্চনা করছে। টাকা দিচ্ছে না। তাই ১০০ দিনের টাকা বাকি থাকছে। এই প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য তিনি মানুষের পাহারাদার হয়ে তাদের রক্ষা করবেন।
আলিপুরদুয়ার থেকে মুখ্যমন্ত্রী যখন এই কথা বলছেন তখন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দিদির দূতদের পড়তে হচ্ছে মানুষের ক্ষোভের মুখে। কোথাও আবাস যোজনা নিয়ে দুর্নীতি, তো কোথাও সরকারি ভাতা না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ। সোমবার সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রীর সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে, ‘‘গত ১০ বছরে এই প্রথম তৃণমূলকে কোন ডিফেন্সিভ কর্মসূচি নিতে দেখা যাচ্ছে।’’ তার ইঙ্গিত ছিল রাজ্য জুড়ে যেই দুর্নীতির জাল তৃণমূল ছড়িয়েছে তার থেকে নিজেদের বাঁচাতে এই কর্মসূচি। এদিনের সভা থেকেও আবাস যোজনার দুর্নীতি ঘুড়িয়ে মানলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ১১ লক্ষ বাড়ি দিয়েছি আবাস যোজনায়। ৫০ লক্ষ আবেদন জমা পড়ে। তার থেকে ১৭ লক্ষ নাম বাদ গিয়েছে, কারণ সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে তাদের পাকা বাড়ি রয়েছে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, সরকার যদি সমীক্ষা অনুযায়ী নাম বাদ দেয় তাহলে কি ভাবে তৃণমূল পঞ্চায়ের সদস্য যার তিন তলা বাড়ি রয়েছে তার পরিবারের লোকেরা বাড়ি পায়? কি করে পূর্ব মেদিনীপুরের বাড়ি চাইতে গিয়ে জেলে থাকা আরজুনা বিবির নাম বাদ যায় তালিকা থেকে? শুধু একটা আরজুনা বিবি নয় রাজ্য জুড়ে সিপিআই(এম) যখন এই দূর্নীতির বিরুদ্ধে লাগাতার পথে নামে তখন যারা মিছিল গুলিতে পা মিলিয়ে ছিল তাদের নাম বাদ গেল কি করে যদি সঠিক ভাবে সমীক্ষা করা হয়।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন যে, মুখ্যমন্ত্রী’র সুরক্ষা কবচে যেই অভিযোগ গুলি জমা পড়ছে তা সরাসরি তাঁর কাছে আসবে এবং তিনি সেই অভিযোগ গুলি খতিয়ে দেখবেন। তবে এই কথা বলার আগে তিনি বলেন, ‘‘আমি তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারপার্সেন হিসাবে বলছি। মুখ্যমন্ত্রী’র সুরক্ষা কবচে যেই যেই অভিযোগ জমা পড়বে তা আমি নিজে খতিয়ে দেখবো।’’ কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সেই অভিযোগ গুলি তাঁর কাছে যাবে কি ভাবে? কোন অ্যাপ, নম্বর বা ফর্ম তো নেই। আর এদিন মুখ্যমন্ত্রী যখন এই কথা গুলি বলছেন তখন তাঁর পাশে মঞ্চে ছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি।
Comments :0