তিনি বলেছেন, দিন ঘোষণার ক্ষেত্রে তৎপরতা দেখিয়েছেন নব নিযুক্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। তাঁকে অভিনন্দন। কিন্তু শুধু দিন প্রকাশের ক্ষেত্রে তৎপরতা দেখিয়ে থেমে থাকলেই হবে না। আমাদের দাবি, সুষ্ঠু ভাবে মনোনয়ন পত্র জমা নেওয়া, সমস্ত রাজনৈতিক দলকে অবাধে প্রচার করার সুযোগ করে দেওয়া এবং সাধারণ মানুষকে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হওয়া অবধি এমনই সজাগ, সক্রিয় এবং তৎপর ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে।
বামফ্রন্টের বাইরে থাকা তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলিকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সেলিম বলেন, আমরা যাঁরা তৃণমূল এবং বিজেপিকে হারাতে চাই, তাঁদের হাতে হাত ধরে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। পায়ে পা মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
সেলিম বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপই হল নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। কেবলমাত্র নির্বাচনের দিন কিংবা ভোট গণনার দিনে নিরাপত্তার কড়াকড়ি করলে চলবে না। গোটা মাস জুড়ে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। এই দাবিতে ১৫ জুন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দপ্তর অভিযান করবে রাজ্য বামফ্রন্ট।
সেলিম বলেন, মানুষের মেজাজ বুঝে কাজ না করলে ভুল করবে প্রশাসন। এরাজ্যের মানুষ চোর লুঠেরাদের হঠিয়ে ফের একবার সাধারণ মানুষের পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর। জ্যোতি বসুর নেতৃত্বে বামফ্রন্ট সরকার এমন ভাবে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল, সংবিধান সংশোধন করা হয়েছিল, যাতে কোনও রাজ্য সরকার চাইলেও পঞ্চায়েত নির্বাচন পিছিয়ে দিতে পারবে না। পাঁচ বছরের মধ্যেই নির্বাচন করতে হবে।
সেলিম বলেন, রাজ্যের নির্বাচন কর্মীরাও তাঁদের নিরাপত্তা চাইছেন। ২০১৮ সালে ভোটকর্মী রাজকুমার রায় খুন হন। পাঁচ বছর পরেও তাঁর খুনিরা গ্রেপ্তার হল না। সরকার এটাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করছে। আমরা দাবি জানাচ্ছি, ২০২৩ সালে যেন এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
রাজ্যকে তৃণমূল এবং বিজেপির অপশাসনের হাত থেকে রক্ষা করার প্রথম ধাপ হল সুষ্ঠু পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গড়ে তোলা। সাধারণ মানুষ ভোট দেওয়ার রাস্তা খুঁজে নেবেন। লালঝান্ডা ও বামফ্রন্ট তাঁদের সব রকম ভাবে সাহায্য করবেন। গ্রামে কাজ নেই। ১০০ দিনের টাকা লুঠ হয়েছে। গ্রামের ছেলেরা কাজের খোঁজে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিলে মোদীর ট্রেনে মারা পড়ছে। তাঁরা যেখানে গিয়ে পৌঁছবেন, সেখানে তাঁদের বাংলাদেশি কিংবা রোহিঙ্গা বলে দাগিয়ে দিয়ে অত্যাচার চালানো হবে। তাঁদের উপর বুলডোজার চালানো হবে।
সেলিম বলেন, ভোটার তালিকায় সমস্ত বৈধ ভোটরের নাম নথিভুক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে ভোট লুঠ করার জন্য ভোটার তালিকায় থাকা সমস্ত ডুপ্লিকেট নাম বাদ দিতে হবে।
মহম্মদ সেলিম বলেন, আমরা আগেই আশঙ্কা করেছিলাম রাজ্য সরকার খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে পারে। তাই আমরা আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলাম। আমরা বামফ্রন্ট এবং সিপিআই(এম)’র কর্মীদের আহ্বান করছি, সমস্ত জেলা নেতৃত্বকে আহ্বান করছি, যত দ্রুত সম্ভব প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দেওয়াল লিখন শুরু করে দেওয়ার। মানুষ যাতে নিজের ভোট নিজে দিতে পারে, সেই ভরসা ও সাহস যোগাতে হবে।
সেলিম এদিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমরা চাই প্রশাসন মানুষের ভোটাধিকার সুনিশ্চিত করুক। কারণ মানুষ নিজের হাতে এই দায়িত্ব তুলে নিলে তা সরকারের জন্য ভালো হবে না, এবং যথেষ্ট পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। আমরা চাই না সেটা হোক।
Comments :0