Panchayat Election

‘চোর তাড়াও’ দাবিতে পদযাত্রায় বাড়ছে গ্রামবাসীদের অংশগ্রহণ

রাজ্য

Panchayat Election


পদযাত্রা সেই তালপাটি খালের ধারে, সোনাচূড়ায়। পদযাত্রা হুগলী ছুঁয়ে থাকা জনপদ ভেকুটিয়ায়। মহম্মদপুরে। তৃণমূলের আতঙ্ক ভেঙে।
পদযাত্রা তোলা আদায়, শ্রমিকের মজুরি লুটে বিধ্বস্ত হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে। মঙ্গলবার আরও পদযাত্রা হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। 
যেমন হয়েছে নন্দকুমার ব্লকের ব্যাবত্তাহাট অঞ্চলে। সেখানে পদযাত্রায় ছিলেন সুজন চক্রবর্তী, নিরঞ্জন সিহি, পরিতোষ পট্টনায়েক, শান্তনু দাস সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। পদযাত্রা যত এগিয়েছে সাধারণ মানুষ তাঁদের জীবন যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেছেন নেতৃবৃন্দের কাছে।
গ্রামবাসীদের যন্ত্রণার অভিজ্ঞতা থেকেই পদযাত্রায় স্লোগান উঠেছে নদীর বালি লুট করতে দেব না, পঞ্চায়েতকে লুটে খাওয়ার জায়গাতে পরিণত হতে দেব না। সবাইকে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা মেটাতে হবে, দিতে হবে সামাজিক সুরক্ষা, প্রতিদিনের জীবনযন্ত্রণা থেকে মুক্তি— এমনই স্লোগান তুলে পদযাত্রায় শামিল হলেন নন্দকুমার ব্লকের ব্যাবত্তাহাট পূর্ব পঞ্চায়েতের টিকারামপুর, কাঞ্চনপুর, মীরপুর, ইছাপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা।
পদযাত্রা অংশগ্রহণ করে একটি সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূলের চোর, দুর্নীতিগ্রস্তরা এখন বিজেপি’র নেতা। তারা সৎ সাজার চেষ্টা করছে। বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে গ্রামের মানুষদের মধ্যে। সজাগ থাকতে হবে এই সমস্ত চক্রান্তকারীদের থেকে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘চোর তাড়াও বললে অনেকেই রেগে উঠছে। রাজ্যের পুরো শিক্ষা দপ্তরটাই জেলে বন্দি রয়েছে। শিক্ষাকে যারা কারাগারে পৌঁছে দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে বামপন্থীরা। স্বাধীনতা সংগ্রাম পরবর্তী সময়ে বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে থেকে রাজ্যের সংস্কৃতি, কাজ, উন্নয়ন সব ক্ষেত্রেই এ রাজ্য ছিল প্রথম সারিতে। এখন চুরি দুর্নীতিতে সারা দেশের মধ্যে প্রথমে রয়েছে এ রাজ্য। হলদিয়া শিল্পাঞ্চল বামফ্রন্ট সরকারের ফসল, এখন তৃণমূলের লুটে খাওয়ার জায়গায় পরিণত হয়েছে।’’
নন্দকুমারের বহরমপুর সমবায়ের নির্বাচন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই সমবায় দীর্ঘবছর ধরেই বামপন্থীরাই পরিচালনা করছে। গ্রামের প্রান্তিক সাধারণ মানুষজন যারা সমবায়কে বাঁচাতে চান তারা আবারও বামপন্থীদেরই নির্বাচিত করেছেন। সিপিআই(এম) ও বিজেপি’র জোট বলে যারা প্রচার চালাচ্ছে তারা মিথ্যা এবং ভ্রান্ত প্রচার করছে। সব কটি আসনেই বাম প্রগতিশীল জোটের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছে। তৃণমূল সবকটি আসনে পরাজিত হওয়াটাকে মেনে নিতে না পেরেই হতাশা থেকেই সিপিআই(এম) ও বিজেপি’র জোটের গল্প শোনাচ্ছে সাধারণ মানুষকে।’’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নদীকেন্দ্রিক এলাকা গুলির মধ্যে অন্যতম এই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। অমৃতবেড়িয়া থেকে দনিপুর বাজার হয়ে গঞ্জ নারায়ণপুর পর্যন্ত রূপনারায়ণ নদীর পাড়ে একাধিক বেআইনি বালিঘাট রয়েছে, প্রশাসনের নজরদারি হালে শুরু হলেও দেদার লুট হয় নদীর বালি। যার জন্য প্রতি বর্ষাতেই নদী বাঁধ ভেঙে এই সমস্ত গ্রামগুলি জলমগ্ন হয়। বিপর্যস্ত হয় জনজীবন। শাসক দলের মদতপুষ্টদেরই বালিঘাটগুলি। ফলে সাধারণ মানুষের জীবন যন্ত্রণা উপলব্ধি হয় না শাসকদলের। পাশাপাশি আবাস যোজনা ও ১০০ দিনের কাজে যে ব্যাপক পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে তাতে সোচ্চার হয়েছেন সাধারণ মানুষজন। এই সমস্ত কিছু দুর্নীতির প্রতিবাদ জানিয়ে পদযাত্রা হলো এদিন। ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের নারিকেলদা বাজার থেকে মোটরসাইকেল র্যা লি এবং ব্যবত্তাহাট বাজার থেকে দনিপুর বাজার পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় ৭ কিলোমিটার পদযাত্রা শেষ হয় দনিপুর বাজারে। এখানে সভায় বক্তব্য রাখেন সুজন চক্রবর্তী, পরিতোষ পট্টনায়েক। উপস্থিত ছিলেন শান্তনু দাস, করুণাশঙ্কর ভৌমিক, সন্দীপ জানা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সভায় সভাপতিত্ব করেন নারায়ণ জানা।
অন্যদিকে হলদিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকার ২৭ ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে পদযাত্রা হয়। সেইসঙ্গে নন্দীগ্রামের সোনাচুড়া ও ভেকুটিয়া পঞ্চায়েত ও পাঁশকুড়া ব্লকের চৈতন্যপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধাবণ, চক্ রাধাবন, মোহনপুরসহ কয়েকটি গ্রামের ৭টি বুথ এলাকায় পদযাত্রা হয়।

Comments :0

Login to leave a comment