বছরখানেক ধরে কাতারে আটক ৮ প্রাক্তন ভারতীয় নৌসেনা অফিসার এবং জওয়ানকে প্রাণদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে সেদেশের ‘কোর্ট অফ ফার্স্ট ইন্সট্যান্স’। এই ঘটনা সামনে আসতে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে দেশের কূটনৈতিক মহলে। নয়াদিল্লির তরফে বলা হয়েছে, তাঁরা কাতারের এই সিদ্ধান্তে স্তম্ভিত।
সরকারি স্তরে জানা গিয়েছে, ওই ৮ প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী ‘দাহরা গ্লোবাল টেকনোলজিস অ্যান্ড কনসাল্টেন্সি সার্ভিসেস’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন। এই সংস্থা কাতারের সশস্ত্র বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ করে। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে এই ৮জনকে হেফাজতে নেন কাতারের গোয়েন্দারা। তাঁদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়। হেফাজতে থাকাকালীন একাধিকবার তাঁদের জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে।
ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের একাধিক সূত্র জানাচ্ছে, ধৃত ৮জন হলেন, ক্যাপ্টেন নভতেজ সিং গিল, ক্যাপ্টেন বীরেন্দ্র কুমার ভার্মা, ক্যাপ্টেন সৌরভ বশিষ্ট, কমোডর অমিত নাগপাল, কমোডর পূর্ণেন্দু তিওয়ারি, কমোডর সুগুনাকর পাকালা, কমোডর সঞ্জীব গুপ্তা এবং নাবিক রাগেশ।
এই প্রসঙ্গে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি’তে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা প্রাণদণ্ডের নির্দেশে স্তম্ভিত। আমরা কাতারের আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ের অপেক্ষা করছি। ৮জনের পরিবার এবং তাঁদের আইনজীবী দলের সঙ্গে আমরা নিয়মিত সংযোগ রক্ষা করে চলেছি। মুক্তির সমস্ত আইনি পথ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমাদের তরফে বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। আগামীতেও সমস্ত ধরণের কূটনৈতিক এবং আইনি সহায়তা প্রদান করা হবে।। কাতার সরকারের সঙ্গেও এই রায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শুরু হয়েছে।’’
মন্ত্রকের তরফে সাংবাদিকদের বলা হয়েছে, গোটা বিষয়টির সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের কূটনীতি জড়িয়ে থাকায় এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।
সরকারি ভাবে এই মামলার বিশদ কোনও তথ্য সামনে আসেনি। বিক্ষিপ্ত কিছু রিপোর্ট অনুযায়ী, ধৃত ৮ প্রাক্তন ভারতীয় নৌসেনা অফিসার এবং জওয়ানের বিরুদ্ধে ইজরায়েলের হয়ে কাতারে গুপ্তচর বৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছে। কাতারের অভিযোগ, তাঁদের ডুবোজাহাজ প্রকল্পের স্পর্শকাতর তথ্য ইজরায়েলকে পাচার করেছেন ধৃত ৮জন। কাতারের দাবি, এই অভিযোগের সপক্ষে যথেষ্ট বৈদ্যুতিন তথ্য প্রমাণ রয়েছে তাঁদের কাছে।
Comments :0