BRIGADE

প্রচারে বেনজির সাড়া, বন্দোবস্ত ঠিক করতে ব্রিগেডের মাঠে নেতৃবৃন্দ

রাজ্য ব্রিগেড

মঙ্গলবার ব্রিগেডের মাঠে নেতৃবৃন্দ। ছবি: প্রিতম ঘোষ

অরিজিৎ মণ্ডল 

২০ এপ্রিল ব্রিগেড। শ্রমজীবী কৃষিজীবী ও বস্তিবাসী আন্দোলনে ডাকে হবে ব্রিগ্রেড সমাবেশ। রাজ্য জুড়ে প্রস্তুতি তুঙ্গে। এলাকায় এলাকায় হচ্ছে সভা প্রচার জাঠা। 
মঙ্গলবার বিকেলে ব্রিগেডের ময়দান ঘুরে দেখলেন সিআইটিইউ নেতৃবৃন্দ। মঞ্চ থেকে বইয়ের স্টল কোথায় কী ভাবে থাকবে তার পরিকল্পনা করলেন নেতৃবৃন্দ। 
৪৮ ফুটের মঞ্চ তৈরি করা হবে। মাটি থেকে ১২ ফুট হবে উচ্চতা। মঞ্চের ডান দিকে থাকবে শামিয়ানা, যেখানে ব্রিগেডে আগত প্রবীণরা বসবেন। নেতৃবৃন্দ যে খসড়া ম্যাপিং করেছেন সেখানে ভিক্টোরিয়াকে পিছনে রেখে মঞ্চের মুখ করা হবে। পিআরসি'র দু’টি ক্যাম্প করা হবে। থাকবে জলের ব্যবস্থা। থাকবে প্রেস কর্নারও। দেখুন ভিডিও…..
সিআইটিইউ রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু বললেন, ‘‘রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় মিটিং মিছিল পদযাত্রা যাথা ইত্যাদি চলছে।  মানুষের দৈনন্দিন জীবন জীবিকার সমস্যা নিয়ে সিআইটিইউ, সারা ভারত কৃষকসভা, সারা ভারত খেত মজুর ইউনিয়ন এবং পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতির কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। সঙ্গে চলছে অর্থ সংগ্রহ। বিভিন্ন কলকারখানা শিল্পাঞ্চলে নিবিড়ভাবে প্রচার আমরা চালাচ্ছি।’’ 
তিনি বলেছেন, ‘‘ব্রিগেড সমাবেশের আগে তিন-চার দিন আমরা বাইক-সাইকেল, ট্রাক্টর মিছিল, মশাল মিছিল করার পরিকল্পনা নিচ্ছি।’’ 
তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতি, আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, শ্রমিক কৃষক কর্মচারীদের মজুরি বাড়ছে না, বিজেপির সরকার গোটা দেশ জুড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প বিক্রি করে দিচ্ছে, কৃষকরা ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না, ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতি, শ্রম কোড লাগু করে শ্রমিকের ওপর আক্রমণের রাস্তা নিয়েছে বিজেপি-আরএসএস। আরেকদিকে এরাই মানুষকে হিন্দু মুসলিমের নামে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে। সংসদীয় গণতন্ত্রের উপর আক্রমণ চলছে। এই আক্রমণ রোখার প্রচার চলছে। সেই সঙ্গে সংবিধান ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে রক্ষা করতে একজোট হওয়ার দাবি উঠছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে দুর্নীতি ভ্রষ্টাচার ২৬ হাজার মানুষের চাকরি চলে গেলে রাজ্যে শিল্প কলকারখানা নতুন করে তৈরি হচ্ছে না এইরকম পরিস্থিতির মধ্যেই আমরা ব্রিগেডের সমাবেশ ডেকেছি। রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থনৈতিক নীতির ফলে মানুষ আজ বিপন্ন হচ্ছে তার বিরুদ্ধে ব্রিগেডের সমাবেশে জড়ো হবেন।" 
সাহু জানান শেষ ১০ দিনে প্রচার আরো তীব্র হবে। উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার থেকে শুরু করে পশ্চিমের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া বীরভূম এবং দক্ষিণের সুন্দরবন কাকদ্বীপ থেকেও মানুষ জড়ো হবেন। হলদিয়া শিল্পাঞ্চল থেকে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল, হুগলি নদীয়া, বর্ধমানের খেতমজুর কৃষকরা আসবেন এই ব্রিগেডের সমাবেশে। 
২০ এপ্রিল সমাবেশের পর ২০ মে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের ডাকে গোটা দেশে ধর্মঘট হবে। সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হবে এই ব্রিগেডের সমাবেশ থেকে।
সিআইটিইউ রাজ্য সভাপতি সুভাষ মুখার্জি বলেন, "প্রচার এই মুহূর্তে তুঙ্গে। গ্রামাঞ্চল-শহরাঞ্চল জুড়ে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। এই রকমের ব্রিগেড অতীতে হয়নি। মেহনতি খেটে খাওয়া মানুষের ডাকে গোটা রাজ্যের আপামর মানুষ ব্রিগেডের সমাবেশে জড়ো হবেন। রাজ্য জুড়েই ভয়ঙ্কর আক্রমণের মুখে একটা প্রতিরোধী ব্রিগেড হবে এমনই একটা হাওয়া উঠেছে। রোদ ঝড় জল সমস্ত কিছুকে উপেক্ষা করেই মানুষ ব্রিগেডে আসবেন।’’
তিনি আরও বলেন, “আমরা আজ দেখতে এলাম এত গরমে মানুষ আসবেন, তাঁদের জলের ব্যবস্থা বা অন্য কোনও অসুবিধা না হয়। মেডিক্যাল ক্যাম্প সহ ন্যাশনাল বুক এজেন্সি, সিআইটিইউ ও যুব ফেডারেশনের বইয়ের স্টল হবে। এছাড়াও সুষ্ঠু বন্দোবস্ত যাতে হয় সেই মোতাবেক ম্যাপিং করে পরিকল্পনাই করব। আমরা মনে করছি এই ব্রিগেড ঐতিহাসিক ব্রিগেডে পরিণত হবেই।”

এদিন ব্রিগেডের মাঠে উপস্থিত ছিলেন গণআন্দোলনের নেতা কল্লোল মজুমদার, তরুণ ব্যানার্জি, ইন্দ্রজিৎ ঘোষ প্রমুখ।  

মন্তব্যসমূহ :0

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন