R G Kar: AILU at Lalbazar

সমন প্রত্যাহার করুন, সংবিধানকে সম্মান করুন, লালবাজারে পুলিশকে বললেন আইনজীবীরা

রাজ্য

কলেজ স্ট্রিট থেকে লালবাজার অভিমুখে আইনজীবীদের মিছিল শনিবার।

আসল অপরাধীদের গ্রেপ্তার করুন। প্রতিবাদীদের হেনস্তা করা চলবে না। আর জি কর কাণ্ডে প্রতিবাদ দমন করতে নেমে সংবিধানের মৌলিক অধিকারকেও অস্বীকার করছে কলকাতা পুলিশ। অস্বীকার করছে কথা বলার স্বাধীনতাকে। ভয় এবং দমনের পরিবেশ কায়েম করতে চাইছে।
সংবিধানকে মনে করিয়ে পুলিশকে সরাসরি এই ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়ে এলেন আইনজীবীরা। শনিবার ছাত্র-যুব-মহিলা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে লালবাজারে যান রাজ্যের আইনজীবী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। সারা ভারত আইনজীবী ইউনিয়ন (এআইএলইউ)’র তরফে পুলিশের ভূমিকায় জানানো হয়েছে প্রতিবাদ।
আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ এবং হত্যার বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ চলছে রাজ্যজুড়ে। আর জি কর হাসপাতালেই, ১৪ আগস্ট রাতে, একদল দুষ্কৃতী তাণ্ডব চালায়। ভাঙচুর করে। সেই ঘটনায় দুষ্কৃতীদের ছবি বেরিয়ে পড়েছে। তাদের সঙ্গে তৃণমূলের যোগ স্পষ্ট। অথচ মুখ্যমন্ত্রী ভাঙচুর মধ্যে ডিওয়াইএফআই’র পতাকা দেখে ফেলেছিলেন। তারপর থেকে বিনা নোটিশে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে ছাত্র-যুবদের। বাড়ি থেকে লালবাজারে তুলে আনছে পুলিশ। পাঠানো হচ্ছে গুচ্ছ গুচ্ছ সমন। 
লালবাজারে ঢোকার মুখে পুলিশের সঙ্গে তর্ক বাঁধে আইনজীবীদের। পুলিশ বলে এতজনকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। আইনজীবীরা পালটা বলেন, সমন দেওয়া হয়েছে কনীনিকা ঘোষ বসু, মীনাক্ষী মুখার্জি, প্রণয় কার্য্যী সহ একগুচ্ছ প্রতিবাদীকে। তাঁদের সঙ্গে আইনজীবীরা যাচ্ছেন। ফলে ঢুকতে দিতে হবে। পুলিশ দাবি মানতে বাধ্য হয়।
আইনজীবী আন্দোলনের নেতা ফৈয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ বলেছিল কমিশনার কথা বলবেন না। একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারকে জানাতে হবে বক্তব্য। আমরা রাজি হইনি। শেষ পর্যন্ত জয়েন্ট সিপি হেড কোয়ার্টার বক্তব্য শোনেন।’’ 
অল ইন্ডিয়া লইয়ার্স ইউনিয়ন তিনটি দাবি জানিয়েছে। এক, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশ নিলে হেনস্তা বন্দ করতে হবে। কথা বলা বা প্রতিবাদ জানানোর স্বাধীনতা সংবিধান স্বীকৃত অধিকার। পুলিশ যেন সেই অধিকারকে সম্মান জানায়। দুই, আসল অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে ব্যবস্থা নিক পুলিশ। ভাঙচুরে যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ বন্ধ হোক। তিন, পুলিশের ভূমিকা স্বচ্ছ হওয়া উচিত। বিচার নিশ্চিত করতে কী করা হয়েছে স্পষ্ট করে জানানো হোক জনতাকে।
লালবাজারে ছিলেন এআইএলইউ’র রাজ্য সম্পাদক অরিন্দম ভট্টাচার্য, ইয়াসিন রহমানও। ফৈয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, ‘‘আমরা বলেছি যে কলকাতা হাইকোর্ট তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে সিবিআই-কে। এই তদন্তে রাজ্য সরকারের সিট তদন্তের দায়িত্বে নেই। অথচ এই সিট’র তরফ থেকেই হেনস্তা করা হচ্ছে, নোটিশ পাঠানো হচ্ছে। এটা চলবে কেন।’’ 
তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের হাবেভাবে স্পষ্ট যে অন্যায় তারাই করে চলেছে। আমরা বলেছি আর জি করে ১৪ আগস্টের রাতে ভাঙচুরের ভিডিও ফুটেজও তো আছে। পরীক্ষা করলেই জানা যায় কারা দোষী। তা’হলে এভাবে প্রতিবাদী ছাত্রদের বাড়ি থেকে তুলে আনছেন কেন। কলকাতা পুলিশের এই ভূমিকা নিন্দাজনক। আধিকারিকরা বলেন যে এমন কোন কোন ঘটনা রয়েছে বিশদে জানান, বা তাদের নিয়ে আসুন, আমরা দেখব সমস্যা যাতে না হয়। আমরা বলি, তার আগে সমন পাঠানো বন্ধ করুন। যে যে সমন পাঠিয়েছেন প্রত্যাহার করুন।’’

Comments :0

Login to leave a comment