সোমবার রাতেই গ্রামে খবর পৌঁছে গিয়েছিল যে আঘরপুর ডুংরি কাণ্ডে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ১৩ জন মহিলার জামিন হয়েছে। কিন্তু আদালত থেকে সংশোধনাগারে কাগজপত্র যেতে দেরি হওয়ায় আটকে দিয়েছিল তাদের মুক্তি। তবে গ্রামের মানুষ রাত থেকেই প্রহর গুনেছে কখন ফিরবে ঘরের মেয়েরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে গোটা গ্রাম অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। সংশোধনাগার থেকে গ্রামে ঢোকার পথেই গোটা গ্রামের মানুষ বরণ করে নিল কোলে বাচ্চা সহ মহিলাদের। বাসকী মাহাতো, প্রমিলা মাহাতো, নমিতা মাহাতো, কলাবতী মাহাতো, সরিতা মাহাতো,অলকা মাহাতো, ঊষা রানী মাহাতোরা গ্রামে ঢুকতেই প্রত্যেককে মালা পড়িয়ে সম্বর্ধনা জানানো হয়। লাল আবিরে ভরে যায় গোটা শরীর। ঘরের মেয়েরা ঘরে ফিরেছে কিন্তু লড়াই এখনো শেষ হয়নি। এই অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই আন্দোলন জারি রাখার কথা শোনা গেল ওদের কণ্ঠে। আন্দোলনের প্রথম দিন থেকে ওদের পাশে ছিল সিপিআই(এম) কর্মী সমর্থকেরা। এদিন সংশোধনাগার থেকে ওদের সঙ্গী হয়েছিল এসএফআই জেলা সম্পাদক সুব্রত মাহাতো এবং সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের জেলা সভাপতি শ্যামল মাহাতো। সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় ওই মহিলাদের লড়াকু মনোভাবকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন অন্যায় কখনোই মেনে নেওয়া হবে না।
পুরুলিয়ার জয়পুর ব্লকের আঘরপুর ডুংরির ১৭ একর জায়গা নিয়ে শিল্প কারখানা গড়ার কথা শোনা যাচ্ছে। আদৌ সেখানে কি হবে সেটা জানেন না। কেউ কেউ বলছেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব হবে, কেউ বলছেন কেমিক্যাল হাব হবে, আবার কেউ বলছেন মদের কারখানা হবে। গ্রামের মানুষ কেউ কিন্তু শিল্পের বিরোধী নয়। তাদের বক্তব্য আঘরপুর ডুংরির সৌন্দর্য নষ্ট না করে বিস্তীর্ণ এলাকার কিছুটা অংশ নিয়ে যদি কোন কিছু শিল্প হয় তাদের কোন আপত্তি নাই। গত ৪ নভেম্বর যখন সীমানা প্রাচীরের কাজ শুরু হয়েছিল তখন গ্রামের মহিলারা কোলে বাচ্চা নিয়ে এসেছিলেন কথা বলতে, জানতে চাইছিলেন যে ওখানে কি হবে এবং তাদের কিছু দাবির কথাও সেদিন তারা বলতে এসেছিলেন। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন তাদের কোন কথাই শোনেনি। অভিযোগ অন্যায় ভাবে তাদের মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ওই ১৩ জন মহিলার সঙ্গে তিনজন শিশু গত ১৬ দিন ধরে সংশোধনাগারে বন্দী ছিলেন।
Comments :0