রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিসৌধে হামলা এবং পরে বুলডোজার দিয়ে আগুন ধরিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। স্মৃতি জাদুঘর (যা বঙ্গবন্ধু ভবন নামেও পরিচিত) ধ্বংস করার পর সারা দেশে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘর ও দলীয় কার্যালয়ে আরেক দফা ভাঙচুর চালানো হয়। লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতেও হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লাইভ ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় এই হিংসা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। বঙ্গবন্ধু ভবন ধ্বংসের দিন সন্ধ্যায় প্রচারিত ওই ভাষণে শেখ হাসিনা নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উগ্রবাদীদের আশ্রয় দিয়ে দেশকে ধ্বংস করার জন্য অভিযুক্ত করেন।
‘‘বাংলাদেশকে ঘিরে ধ্বংসের খেলা শুরু হয়েছে, যা এক পর্যায় বিশৃঙ্খলা ও উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সারা বিশ্বে উন্নয়নের মডেল হওয়া বাংলাদেশ এখন সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের জনপদে পরিণত হয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে আমাদের সবার জন্য চরম দুর্ভাগ্যের বিষয়,’’ বলেন হাসিনা।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মৃণাল দাস বঙ্গবন্ধু ভবনে হামলাকে দেশের স্বাধীনতা, ধর্মনিরপেক্ষতা ও উদারতার প্রতীকের ওপর হামলা বলে অভিহিত করেছেন, ‘এই ধ্বংসপ্রবণতা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, প্রগতিবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক প্রকৃতির উগ্রবাদীদের সৃষ্টি, যারা দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে’।
আওয়ামী লীগও এই কাজের নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি জারি করেছে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই ধরনের কাজ থেকে ‘‘দায়মুক্ত’’ থাকার অভিযোগ করেছে। এতে বলা হয়, ‘ড. ইউনূস এবং পুরো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গতরাতের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের দায় এড়াতে পারে না’।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক বারবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও শেখ হাসিনাকে (৭৭) বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিসৌধ ধ্বংসের ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ বলে এটিকে ‘দখলদার ও নিপীড়নের শক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধের প্রতীক’ বলে অভিহিত করেছে।
বাংলাদেশের আরও কয়েকটি দল এই ভাঙচুরের নিন্দা জানিয়েছে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থতার জন্য অভিযুক্ত করেছে।
Comments :0