World

পদত্যাগ করলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো

আন্তর্জাতিক

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগের ঘোষণা করেছেন। ‘‘আমি এই দেশকে নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং কানাডিয়ানদের সর্বোত্তম স্বার্থে আমি সবসময় অনুপ্রাণিত থাকব। কানাডার ইতিহাসে সংখ্যালঘু পার্লামেন্টের দীর্ঘতম অধিবেশনের পর কয়েক মাস ধরে পার্লামেন্ট অচল হয়ে পড়েছে,’’ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয় বছর এবং লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে ১১ বছর দায়িত্ব পালনের পর পদত্যাগ করে এই কথা বলেন ট্রুডো। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া, জনমত সমীক্ষায় ভয়াবহতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের হুমকির মুখে পড়েছেন ট্রুডো।
গত বছর ট্রুডোর উপ-প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগের পর ট্রুডোর সরকার বেকায়দায় পড়েছিল, যিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে একটি কঠোর চিঠি লিখেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডা থেকে আসা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেয়ার এক মাস পর ট্রুডো পদত্যাগ করলেন। এই হুমকির পরে, কানাডিয়ান নেতা ট্রাম্পের সাথে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাতের জন্য ফ্লোরিডায় ছুটে গিয়েছিলেন, যার পরে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে ট্রুডো ‘‘আমাদের সাথে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন’’। ট্রুডোর পদত্যাগের প্রতিক্রিয়ায়, ট্রাম্প আরও একবার জনসমক্ষে তাকে খাটো করার সিদ্ধান্ত নেন, দক্ষিণপন্থী সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ দাবি করেন যে কানাডার যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মিশে যাওয়া উচিত। টুইটে ট্রাম্প বলেন, ‘কানাডার অনেক মানুষ ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে থাকতে চায়’। তিনি বলেন, ‘কানাডাকে টিকিয়ে রাখতে যে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি ও ভর্তুকি দরকার, তা যুক্তরাষ্ট্র আর ভোগ করতে পারবে না। জাস্টিন ট্রুডো বিষয়টি জানতেন এবং পদত্যাগ করেন’।
ট্রুডো গাজায় গণহত্যা চালাতে ইজরায়েলকে সহায়তা করার একটি উত্তরাধিকারও রেখে গেছেন, ২০২৩ সালে ইজরায়েলে কানাডার সামরিক রফতানির একটি নতুন রেকর্ড স্থাপন করেন তিনি, যার মোট মূল্য ৩০.৬ মিলিয়ন ডলার। 
কানাডার বামপন্থী নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা জগমিত সিং ট্রুডোর পদত্যাগের প্রতিক্রিয়ায় কানাডিয়ানদের উদ্দেশ্যে বলেন, মধ্যপন্থী প্রধানমন্ত্রী ‘আপনাদের বারবার হতাশ করেছেন’। সিংয়ের মতে, ট্রুডো কানাডিয়ানদের মুদি ও আবাসন ব্যয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ঠিক করার বিষয়ে হতাশ করেছেন। প্রকৃতপক্ষে, ক্রমবর্ধমান আবাসন ব্যয় ট্রুডোর আমলে কানাডিয়ানদের জর্জরিত করেছে। ২০২০ সাল থেকে গড়ে আবাসনের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি। এবং অনেকটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো, খাদ্যের দামের মুদ্রাস্ফীতি কানাডায় মজুরি বৃদ্ধিকে ছাড়িয়ে গেছে, যার ফলে শ্রমিকদের ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment