ফের ভূমিকম্প দিল্লি সংলগ্ন এলাকায়। রবিবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ দিল্লি লাগোয়া উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদ অঞ্চলে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে তার তীব্রতা ছিল ২.৮।
পরপর ভূমিকম্পের গভীরতা বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীদের একাংশের আশঙ্কা, মাটির নিচের জল তোলা চলছে বেপরোয়া মাত্রায়। তার জেরে গুরুতর বিপদের মুখে পড়তে পারে রাজধানী শহর। একই প্রবণতায় বিপদে পড়তে পারে কলকাতার মতো বড় শহরও।
জাতীয় ভূকম্পন কেন্দ্র (ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলোজি) এদিন জানিয়েছে যে রবিবারের ভূমিকম্পের উৎপত্তি স্থল ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। উৎসস্থল দিল্লির মধ্যেই।
এর আগে, গত সোমবারই ভোর ৬টা নাগাদ দিল্লিতে ভূকম্পন অনুভূত হয়। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাসিন্দারা। তাঁরা বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। জাতীয় ভূকম্পন কেন্দ্র সেদিনও জানিয়েছিল যে কম্পনের উৎপত্তি হয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির ধৌলা কুঁয়া অঞ্চলে। ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার গভীরে এর উৎপত্তি।
বিভিন্ন সময়ে ভূমিকম্পের উৎস দেখা গিয়েছে দূরে, এমনকি দেশের বাইরে। মাটির অনেক গভীরে তার উৎস। কিন্তু এবার, পরপর দিল্লির দুই ভূকম্পে, তা দেখা যাচ্ছে না।
বিজ্ঞানীরা গভীরতা অনুযায়ী ভূমিকম্প উৎপত্তি তিন ভাবে ভাগ করেন। এক, অগভীর (০-৭০ কিমি) মাঝারি গভীরতা (৭০-৩০০ কিমি) এবং গভীর (৩০০-৭০০ কিমি)।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন নির্দিষ্ট ছোট অঞ্চল জুড়ে এই ভূমিকম্প অত্যন্ত উদ্বেগের। মাটির তলা থেকে বিরামহীন ভাবে ভূগর্ভস্থ জল তুলে নেওয়ার সঙ্গে এবারের দুই ভূমিকম্পের সম্পর্ক কতটা, তা খতিয়ে দেখতেও বলছেন তাঁরা।
দিল্লি বরাবরই ঝুঁকির এলাকা। ভূতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী এই শহরের অবস্থান দিল্লি-হরিদ্বার সংলগ্ন ভূ-স্তর বরাবর। এই অঞ্চলে মাটির গভীরে ইন্ডিয়ান প্লেট এবং ইউরেশিয়ান প্লেটের ধাক্কায় ভূকম্প হয়।
ভূতাত্ত্বিকদের একাংশ বলছেন, দেখা উচিত মাটির তলার জল ব্যবহারের প্রবণতার প্রভাবও। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজের স্কুল অব ন্যাচরাল সায়েন্সেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক সিপি রাজেন্দ্রন এই মতের শরিক। একটি বিজ্ঞান ও পরিবেশ পত্রিকাকে তিনি বলেছেন, ‘‘বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে মাটির তলার জল তুলে নিলে ভূগর্ভস্থ বিভিন্ন স্তরের ভারসাম্যের ক্ষতি হয়। ফাঁপা হলে মাটির তলায় শিলাস্তরে ঝাঁকুনির প্রভাব বেশি পড়ে ওপরের অংশে।’’
এই উদ্বেগ শুধু দিল্লি বা তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় নয়। দেশের সমস্ত ছোট বড় শহরে এই সমস্যা দেখা যাবে। কলকাতার অবস্থাও উদ্বেগের।
কলকাতা এবং সংলগ্ন অঞ্চলে শহর এলাকায় পরপর বাড়ি হেলে পড়ায় এই উদ্বেগ বেড়েছে। সেই সঙ্গে যদিও জলাজুমি বন্ধ করে প্রযুক্তি গত নির্দেশিকা উড়িয়ে বাড়ি তৈরির প্রবণতাও সামনে এসেছে। বিনা অনুমোদনে পরপর তৈরি হচ্ছে বাড়ি।
Earthquak
ফের ভূকম্প দিল্লিতে, মাটির তলার জল ব্যবহারে উদ্বেগ

×
Comments :0