HIJAB KARNATAKA TOPPER

হিজাবে নিষেধাজ্ঞা অসঙ্গত,
স্পষ্ট জানালো দ্বাদশে
প্রথম তবাসসুম

জাতীয়

HIJAB KARNATAKA TOPPER পরিবারের সঙ্গে তবাসসুম শেখ।

হিজাবে নিষেধাজ্ঞায় বিপর্যস্ত হতে হয়েছিল। পড়া চালিয়ে গিয়েছিল কঠিন সময়ে। কর্নাটকে দ্বাদশের পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম তবাসসুম শেখ স্পষ্ট জানিয়েছে, হিজাবে নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত, তার কাছে, অসঙ্গত এবং অবিচার। (দেখুন ভিডিও) 

কর্নাটকে দ্বাদশ স্তরের এই পরীক্ষা ‘প্রি ইউনিভার্সিটি’-র ফল বেরিয়েছে দিন দুয়েক আগে। তবাসসুমের প্রথম হওয়ার খবর বেরতেই নতুন ভাষ্য হাজির করা হয়। বলা হয়, ‘হিজাবের চেয়ে পড়াশোনাকে বেছে নিয়েছে তবাসসুম।’ সংবাদমাধ্যমে দীর্ঘ সাক্ষাৎকারের এই অংশটুকু লুফে নিয়ে প্রচারে নেমেছে হিন্দুত্ববাদীরাও। 

‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যদিও তবাসসুমই স্পষ্ট করেছে পছন্দের কোনও সুযোগ ছিল না।

আদালতের নির্দেশে হিজাবে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকে। তখন হয় পড়াশোনা ছাড়তে হত, নয়ত কলেজে ঢুকে হিজাব খুলে ক্লাসে যেতে হত। বাধ্য হয়েই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাঁকে। 

তবাসসুম বলছে, ‘‘গোড়ায় কী করব বুঝতে পারছিলাম না। হিজাব আমার পরিচিতি,আমার ধর্মের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। আমি তা ছাড়তে চাইনি। ধর্মনিরপেক্ষ দেশে এমন হওয়ার কথা নয়। আদালতের রায়কে অত্যন্ত অসঙ্গত এবং অবিচার মনে হয়েছিল। দু’সপ্তাহ কলেজে যাইনি।’’ 

৬০০’র মধ্যে ৫৯৩ নম্বর পাওয়া এই ছাত্রী জানাচ্ছেন, ‘‘অভিভাবকরা আমাকে বোঝান যে রায় যখন হয়েছে মেনে নিতে হবে। তখন মনে করেছি পড়াশোনা চালিয়ে গেলে ভবিষ্যতে অবিচার আটকানোর সুযোগ পাব।’’ 

২০২১’র ডিসেম্বরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিজেপি সরকার। তার আগে থেকে আরএসএস’র অনুগামী উগ্র হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক একাধিক গোষ্ঠী রাজ্যজুড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছিল। রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছাত্রীদের হিজাব খুলতে বাধ্য করা চলছিল। পালটা প্রতিবাদও তীব্র হয়। একলা ছাত্রীর পিছনে পিলপিল করে তাড়া করছে গেরুয়া পতাকা হাতে বাহিনী, এমন ছবি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ছাত্রীদের একাংশ হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে। হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখে বলে যে হিজাব ইসলামের অবশ্য পালনীয় অংশ নয়। সেই মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টে রয়েছে। তবাসসুমের সাফল্যকে এই পরিপ্রেক্ষিতে দেখছে একটি বড় অংশ। 

তবাসসুমের বাবা আবদুল করিম শেখ ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার, দাদা মেশিন ডিজাইনিংয়ে এম.টেক করছেন। বেঙ্গালুরুর এনএমকেআরভি কলেজের ছাত্রী তবাসসুম চাইছে মনস্তত্ত্ব নিয়ে পড়তে।  

আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য জমিরুদ্দিন শেখের মন্তব্য অনেকেরই নজর কেড়েছে। ভারতীয় সেনার অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল বলছেন, ‘‘এই মেয়ে প্রমাণ করল হিজাব কেবল মাথাই ঢাকে, মস্তিষ্ক নয়। আমি হিজাবের পক্ষে নই। কিন্তু ছাত্রীদের ব্যক্তিগত পছন্দের ওপর বিষয়টি ছাড়া উচিত।’’ 

তাঁর মত, স্কুলের পোশাকের রঙে হিজাব ব্যবহার চালু করা যেতে পারে। কারণ স্কুলের পোশাক বিধিতে হিজাব নেই, এই যুক্তিতেই কর্নাটকে জারি হয় নিষেধাজ্ঞা।  

Comments :0

Login to leave a comment