France Protests

ফ্রান্সে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র, গ্রেপ্তার আরও ১৩০০

আন্তর্জাতিক

France Protests

অক্ষমতা ঢাকতে হিংসার ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমকেই শূলে চড়িয়েছেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ। সেই সূত্র ধরেই হিংসা ছড়ানোর জন্য টিকটক, স্ন্যাপচ্যাট প্রভৃতি সামাজিক মাধ্যমের গতিবিধি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গত মঙ্গলবার রাজধানী প্যারিসের কাছে নান্তেয়ায় পুলিশের গুলিতে ১৭ বছরের কিশোরের মৃত্যু হয়। তারপর গোটা দেশে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। 
রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রঁ দবি করেছেন, ‘বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এমন অনেক বিষয় রয়েছে যার সঙ্গে বর্তমানের অশান্তির মিল আছে।’ এক্ষেত্রে ম্যাক্রঁ নির্দিষ্টভাবেই তুলে ধরেন ভিডিও গেমসের ভূমিকা। একই সঙ্গে বলেন, ‘এমন স্পর্শকাতর বিষয়বস্তু সামাজিক মাধ্যমের বিভিন্ন মঞ্চ থেকে ক্রমশ তুলে নেওয়া হবে।’ শনিবার বিষয়টি নিয়ে স্ন্যাপচ্যাটের মুখপাত্র রাচেল রাকুসেনকে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি নজরদারি বাড়ানোর কথা বলেন। শুক্রবার বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে সংঘর্ষের পথ ছেড়ে গঠনমূলক আলোচনায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন ফ্রান্সের জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক কিলিয়ন এমবাপে এবং কোচ দিদিয়ের দেশঁ।  


 

এদিকে শুক্রবার নিয়ে লাগাতার চতুর্থ রাতেও বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ চলে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় ১,৩০০ বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত থেকে এপর্যন্ত ২, ৪০০ বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা বহু সরকারি দপ্তর, গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। প্যারিস সহ একাধিক স্থান থেকে দোকান বাজারে লুটপাটের খবর পাওয়া গিয়েছে। অবস্থা সামলাতে ৪৫ হাজারের বেশি পুলিশ নামানো হয়েছে। শুধু প্যারিসেই নিরাপত্তা বজায় রাখতে মোতায়েন করা হয়েছে ৫ হাজারের বেশি পুলিশকর্মী। অনেক এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কিশোর বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বাধ্য হয়েই রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রঁ অভিভাবকদের কাছে সন্তানদের বাড়িতে রাখার জন্য আবেদন করেছেন। পুলিশের বিবৃতি অনুসারে, ২,৫০০ বেশি আগুন লাগানোর ঘটনা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত ৩৫০ বেশি পুলিশকর্মী।
দেশজুড়ে উত্তেজনার মাঝে শনিবার পুলিশের গুলিতে নিহত কিশোর নাহেলের শেষকৃত্যের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। আগত মানুষের দেখার জন্য খোলা কফিনে কিশোরের দেহ রাখা হয়েছে। পরে দেহটি স্থানীয় মসজিদে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য আনা হয়। সব শেষে নান্তেয়ার সমাধিক্ষেত্রে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। সমগ্র পর্বেই দেখা গিয়েছে কাতারে কাতারে লোকের ভিড়।


প্যারিস থেকে মার্সেই, লিও অথবা ফরাসি গায়না— সর্বত্রই তীব্র বিক্ষোভ। শুক্রবারই ফরাসি গায়নায় গুলিতে মারা যান কিশোর। আহত হন বহু দমকল কর্মী। ‘‘ফ্রান্সে দীর্ঘ সময় ধরে জমে থাকা আর্থ-সামজিক বঞ্চনার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। পুলিশের গুলিতে কিশোরের মৃত্যু স্ফুলিঙ্গের কাজ করেছে। সামাজিক বৈষম্য, দারিদ্র, বর্ণবিদ্বেষ, বেকারি এবং সুযোগের অভাবের বিরুদ্ধে রাজপথে নিজেদের ক্ষোভ উগ্রে দিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। প্যারিসের আশপাশেই তাঁদের অধিকাংশের ঠিকানা,’’ জানান পরিবহণ কর্মী সাম্বা সেক (৩৯)। তাঁরই আবাসনের তলায় দাঁড়িয়ে রয়েছে শতাধিক পোড়া গাড়ি।   

Comments :0

Login to leave a comment