অনন্ত সাঁতরা
নার্সিং হোমে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে নার্সের। সিঙ্গুরের এই ঘটনার তদন্তের বদলে ধামাচাপা দিতে মরিয়া থেকেছে প্রশাসন। শুক্রবার দিনভর দেখা গিয়েছে পুলিশ, প্রশাসন, হাসপাতালের এমন তৎপরতা। শনিবার তার বিরুদ্ধে হলো প্রতিবাদ। এক বছর আগে আর জি করে চিকিৎসক মৃত্যুতে এমনই তৎপরতা দেখিয়েছিল পুলিশ-প্রশাসন, বলল প্রতিবাদ সভা।
সিঙ্গুরের বড়া তেলিয়ার মোড়ের নার্সিংহোমে মৃত নার্সের লাশ পাচারের সঙ্গে অভিযুক্ত শ্রীরামপুর থানার আইসি, এসিপি এবং শ্রীরামপুরের ওয়ালস হাসপাতালের সুপারের অবিলম্বে পদত্যাগ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শনিবার শ্রীরামপুরে মিছিল ও থানার সামনে তুমুল বিক্ষোভ হয়। 
শুক্রবারই পরিবার খুনের অভিযোগ তুলেছে। নন্দীগ্রামে তাঁদের বাড়ি থেকে আসার আগেই দেহ সরিয়ে ফেলা হয়। 
শনিবার এই ঘটনায় সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘বোঝাই গেল পুলিশ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। তা’হলে পুলিশের ওপর মানুষ ভরসা করবেন কেন?’’
চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘মানুষের এই ধারণাই আরও জোরালো হচ্ছে যে পুলিশ এবং প্রশাসন অপরাধীদের পাশে।’’ (দেখুন ভিডিও এই লিঙ্কে ক্লিক করে)।
হুগলী জেলা এসএফআই,  ডিওয়াইএফআই, মহিলা সমিতি ও সিআইটিইউ সহ বিভিন্ন গণসংগঠনের উদ্যোগে মিছিল শুরু  হয় শ্রীরামপুর আরএমএস ময়দান থেকে। বিপি দে স্ট্রিট হয়ে মিছিল থানার সামনে পৌঁছায়। অবস্থান বিক্ষোভ সভা হয়। মিছিল ও বিক্ষোভ সভায় জেলার বিভিন্ন  প্রান্ত থেকে  বহু মানুষ সমবেত হন। এমনকি সংগঠনের রাজ্য স্তরের নেতা নেত্রীরা অংশগ্রহণ করে প্রতিবাদে শামিল হন। 
বক্তব্য রাখেন সিআইটিইউ হুগলীর জেলা সাধারণ সম্পাদক তীর্থঙ্কর রায়,  সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদিকা কনীনিকা ঘোষ,  এসএসআই রাজ্য সভাপতি প্রণয় কার্য্যী, জেলা যুব সভাপতি প্রতীক চক্রবর্তী, সিআইটিইউ রাজ্য নেত্রী  গার্গী চ্যাটার্জি। বক্তব্য রাখেন দীপ্সিতা ধর, মধুজা সেনরায়ও। বিক্ষোভ সভা পরিচালনা করেন সিআইটিইউ জেলা সম্পাদক মলয় সরকার। 
তীর্থঙ্কর রায় বলেন, ওয়ালস হাসপাতাল মর্গের বেহাল পরিকাঠামো,  সিসিটিভি ভাঙা রয়েছে। মর্গের ভিতর অনেকগুলি দরজা রয়েছে যেখান দিয়ে লাশ সহজে পাচার করা যেতে পারে। আমাদের দাবি ছিল প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্টেটের উপস্থিতিতে ভিডিওগ্রাফি করে ময়নাতদন্ত করতে হবে।  কিন্তু ময়নাতদন্তের কাজে নানাভাবে টালবাহানা তৈরি  করে। সন্ধ্যা পাঁচটায় পর ময়নাতদন্ত হয় না । পুলিশ ও হাসপাতাল সুপার মরদেহ এখান থেকে গাড়িতে কলকাতার হাসপাতালের উদ্দেশ্যে পাঠানোর উদ্যোগ নেন। বাম গণসংগঠনের কর্মীরা প্রবল বাধা দেন। 
পুলিশের লাঠিচার্জে তীর্থঙ্কর রায়, নবনীতা চক্রবর্তী, শিবাণী দাশগুপ্ত,  বাদশা দাস, মৌমিতা দাস সহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
বিক্ষোভ সভায় মহিলা নেত্রী কনীনিকা ঘোষ বলেন, এ রাজ্যে মহিলাদের কোন নিরাপত্তা নেই। পুলিশ লাশ পাচার করে অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা করে। শাসকদলের পাশে দাঁড়ায়।  মলয় সরকার বলেন, দিকে দিকে তীব্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নবান্নের ১৪ তলাকে রাস্তায় নামানোর আহবান জানানো হচ্ছে। 
সিঙ্গুরে বড়া তেলিয়ার মোড়ের অদূরে শিবম সেবাসদন নামে নার্সিংহোমে  নার্সের মৃত্যুর ঘটনাকে পুলিশ প্রশাসন প্রথম থেকেই  ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। মৃতা নার্সের বাবা সিঙ্গুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি তাঁর কন্যার মৃতদেহ প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্টেটের উপস্থিতিতে ভিডিগ্রাফি করে ময়নাতদন্তের দাবি জানান।
                                        
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
Comments :0