IPL Final 2024

ফের আইপিএল সেরা কলকাতা

খেলা

কলকাতা নাইট রাইডার্সের দুরন্ত বোলিং না সানরাইজার্স হায়দরাবাদের জঘন্য ব্যাটিং? এই প্রশ্নের একটাই উত্তর, নাইট রাইডার্স বোলারদের আঁটসাঁট বোলিংয়ের সামনে ফাইনালে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ এবারের আইপিএলের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপ। ট্রাভিস হেড, অভিষেক শর্মা, হেনরিচ ক্লাসেন, রাহুল ত্রিপাঠী, আইডেন মার্করাম ও নীতিশ রেড্ডি। বড় বড় সব নাম। সাম্প্রতিক ফর্ম বিচার করলে টি-২০ ফরম্যাটে এঁরাই সেরা ব্যাটার। তাঁদেরই বেহাল দশা হল মিচেল স্টার্ক, হর্ষিত রানা ও আন্দ্রে রাসেলের সামনে। নাইটদের ছ’বোলারই অনবদ্য স্পেল করলেন, তাতেই শেষ সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।

আইপিএলের ফাইনালে ইতিহাসে এক ইনিংসে সর্বনিম্ম রান করার নজির গড়ল হায়দরাবাদ। ১৮.৩ ওভারে ১১৩ রানে অলআউট নিজামের শহরের দল।টি-২০ ক্রিকেটে এই রান ডিফেন্ড করা কার্যত অসম্ভব। ভেঙ্কটেশ আইয়ারের বিস্ফোরক ব্যাটিং (অপরাজিত ৫২)। যোগ্যসঙ্গত গুরবাজের (৩৯)। ৫৭ বল বাকি থাকতে, আট উইকেটে জিতল কলকাতা নাইট রাইডার্স। ২০১২, ২০১৪’’র পর দশ বছর বাদে ফের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন কেকেআর।

টসে হারার পর, প্রথম কোয়ালিফায়ারের মতো এদিনও প্রথম ওভারে ধাক্কাটা দিলেন মিচেল স্টার্ক। ওই ওভারে তাঁর পঞ্চম বলটা মিডল-লেগে পিচ হয়ে, অফ স্টাম্প ভেঙে দিল অভিষেক শর্মার। বোল্ড হয়ে হতবাক ব্যাটার। পিচের দিকে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন কিছুক্ষণ। তারপর প্যাভিলিয়নের পথ ধরলেন তিনি। মুহূর্তে সোশাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং, এই বলটাই কী প্রতিযোগিতায় সেরা বল? সবাই বললেন, ‘স্বপ্নের ডেলিভেরি।’

শুরুর ধাক্কাটাই সামলাতে পারলোনা হায়দরাবাদ। এরপর স্টার্ক তুললেন রাহুল ত্রিপাঠীকে (৯)। দু’জন ছন্দে থাকা ব্যাটার দ্রুত প্যাভিলিয়নে ফেরায়, মনোবল ভেঙে যায় সানরাইজার্সের। পাওয়ার প্লে’তে বিপক্ষের মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্যই কেকেআর এত টাকা দিয়ে স্টার্ককে তুলেছিল নিলাম থেকে। তিনি প্রতিদান দিলেন টুর্নামেন্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি ম্যাচে। গ্রুপ পর্বে ১২ ম্যাচে মিচেলের উইকেট সংখ্যা ছিল ১২ টি। প্লে-অফের দু’টি ম্যাচে পাঁচটি উইকেট। মাঝের ওভারে ভেল্কি দেখালেন রানা ও রাসেল। বিপক্ষের মিডল অর্ডার ভাঙলেন দু’জনে। রাসেলের শিকার মার্করাম, আব্দুল সামাদ ও প্যাট কামিন্স। এবারের আইপিএলে ১৯ টি উইকেট নিলেন রাসেল। রানার ভাঁড়াড়ে নীতীশ ও ক্লাসেনের উইকেট। স্লো কাটারে ক্লাসেনকে (১৬) বোল্ড করে বিপক্ষকে লড়ার মতো স্কোর গড়তে দিলেন না রানা। গতির হেরফের করিয়ে নীতীশ রেড্ডির উইকেট তুললেন হর্ষিত। 
শেষ দু’টি আইসিসি প্রতিযোগিতায় প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ফাইনালে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন হেড। কিন্তু আইপিএলে ফাইনালে বড় রান পেলেন না। তাঁর কাছ থেকে বাড়তি কিছু আশা ছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। প্রথম বলেই আউট হয়ে প্রত্যাশাপূরণে ব্যর্থ হেড (০)। বৈভব আরোরার সুইংয়ে ঠকে গেলেন তিনি। দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ের সামনে ভরসা দিতে পারলেন না আইডেন মার্করাম (২০)। রাসেলের শর্ট বলটা দায়সারা ভাবে পুল করতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়লেন স্টার্কের হাতে। 
এম এ চিদম্বরমের উইকেট বরাবরই মন্থর। কিন্তু ধৈর্য দেখালে, বলের মেরিট অনুযায়ী খেললে রান তোলা সম্ভব। ফাইনালের পিচ দুশো রানের ছিল না। অন্তত ১৬০-১৭০ জেতার জন্য লড়াকু স্কোর। হায়দরাবাদের কোনও ব্যাটাররা উইকেটে দাঁড়ানোর ধৈর্যটুকু দেখাতে পারলেন না! নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বিপর্যয় ডেকে আনলো হায়দরাবাদ। একটা সময় মনে হচ্ছিল একশোয় পেরোবা না হায়দরাবাদ। একবার জীবনদান পেয়ে অধিনায়ক কামিন্স ২৪ রান করে দলকে পৌঁছে দিলেন ১১৩ অবধি।  

Comments :0

Login to leave a comment