CPIM 27th state conference

পার্টিতে মহিলা-যুব অংশগ্রহণ, শিক্ষায় ড্রপ আউটও আলোচনায় রাজ্য সম্মেলনে

রাজ্য

‘‘প্রান্তিক মানুষের কাছে আরও বেশি করে যেতে হবে। সাংগঠনিক দুর্বলতা কিছুটা কেটেছে। আরও কাটাতে হবে।’’ 
ডানকুনিতে, কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নগর এবং কমরেড সীতারাম ইয়েচুরি মঞ্চে, চলছে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্মেলন। তার দ্বিতীয় দিনে সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বললেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। 
সম্মেলনে আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পার্টিতে মহিলা, যুব সামাজিক বিন্যাসের ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু তা আশানুরূপ নয়। তা আরও বাড়াতে হবে।’’
সেলিম বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষ সমর্থন করেছিলেন। ১০০ দিনের কাজ নিয়ে নাটক হচ্ছে। গরিব মানুষের সেই টাকা আদায় করবে বামপন্থীরা।’’ 
উল্লেখ্য, তৃণমূল দাবি করছে কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের টাকা আটকে রেখেছে। পাল্টা বিজেপি বলছে টাকা লুঠ করেছে তৃণমূল। বর্তমান সরকারের আমলে রাজ্যে ভুয়ো জব কার্ডের সংখ্যা বেড়েছে। দুর্নীতি হয়েছে কিন্তু কতো টাকার দুর্নীতি তা বলতে পারছে না কেন্দ্রীয় সরকার। বামপন্থীরা বার বার দাবি করে আসছে ১০০ দিনের টাকা নিয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্য দুজনই শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোন সরকার তা করে উঠতে পারেনি।
রাজ্যে বেড়ে চলা ড্রপ আউট সম্মেলনে প্রতিনিধিদের আলোচনায় উঠে এসেছে বলে জানান সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক। সেলিম বলেন, ‘‘আগে বিহার, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশে ড্রপ আউট বেশি থাকতো। আর এখন ড্রপ আউট সব থেকে বেশি এরাজ্যে। গরীব মানুষ স্কুল থেকে দুরে চলে যাচ্ছে। তাদের নাম বাদ যাচ্ছে আবাসের টাকা থেকে এদের নিয়ে বামপন্থীরা আবার লড়াই করবে। এই সম্মেলনে অনেক ক্ষেতমজুর, গরীব মানুষ, মধ্যবিত্ত এগিয়ে এসেছেন সাহায্য করেছেন।’’
সেলিম বলেন, ‘‘বামপন্থীদের রাজ্যে শূন্য করা হয়েছে কোটি কোটি টাকা ব্যবহার করে। ২০১৬ থেকে ২০২১ মানুষের রায়কে পাল্টানো হয়েছে টাকা দিয়ে। এখানে লুঠ হয়েছে ভোট, গননা কেন্দ্র বদলানো হয়েছে। এই মানুষকে সাথে নিয়েই লড়াই করতে হবে। দাবি আদায় করতে হবে।’’
রাজ্যে বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের পাশাপাশি পুলিশও আক্রান্ত হচ্ছেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে সেলিম বলেন, ‘‘গ্রামাঞ্চলে শহরে বিভিন্ন এলাকায় বেআইনি কাজ করার জন্য রাজনৈতিক নেতা, পুলিশ, দুষ্কৃতীদের একটা জোট গড়ে উঠেছে তার ফলাফল বীরভূম। তার ফলাফল চন্ডীতলা।’’
উল্লেখ্য, হাওড়ায় চন্ডীতলায় আইসিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেলিম বলেন, ‘‘চন্ডীতলার আধিকারিক যে গুলি খেয়েছে তিনি ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছিল। দলদাস পুলিশ। আমাদের দুর্ভাগ্য এই ধরনের পুলিশ রাজ্যে আছে।’’
ভোটার তালিকায় মৃতদের নাম সংক্রান্ত প্রশ্নে সেলিম বলেন, ‘‘গোটা দেশের ভোটার তালিকা থেকে মৃতদের নাম কেন বাদ দেওয়া হচ্ছে না। এখন জন্ম, মৃত্যুর তথ্য থাকে। পৌরসভায় থাকে সেই তথ্য কোন ব্যবহার করা হচ্ছে না মৃত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে। এরাজ্য দেখা গিয়েছে ভোটের দিন ‘মৃত ভোটাররা’ এসে ভোট দিয়ে গিয়েছে। দিল্লির ভোট এরাজ্যের ভোট দেখা গিয়েছে বিজেপি তৃণমূল এই মৃত ভোটের জোরে নির্বাচনে জেতে।’’ 
বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন সম্পর্কিত একটি প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘বাণিজ্য সম্মেলনে বলা হয় কোটি কোটি টাকার প্রস্তাব এসেছে তাহলে রাজ্যের মানুষ কেন জানতে পারে না কতো বাস্তবায়িত হয়েছে। দেউচা পাঁচামির আদিবাসীরা যখন প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন ডাকে তখন পুলিশ দিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। কোথায় গণতন্ত্র। এর আগে রাজ্যে এমন ঘটনা ঘটেছে?’’

Comments :0

Login to leave a comment