Farmer Suicide

ফের আত্মঘাতী আলু চাষী

রাজ্য জেলা

এবার আত্মঘাতী হলেন মালবাজারের ক্রান্তি ব্লকের এক আলু চাষী। কীটনাশক খেয়ে শনিবার মৃত্যু হলো মাল ব্লকের চেংমারী গ্রাম পঞ্চায়েতের গোলাবাড়ীর আলু চাষি দীপক রায়ের (৫৭)। 
পরিবার সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে যে চাষজনিত হতাশায় তিনি গত ২৫ ডিসেম্বর কীটনাশক খান। প্রথমে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় মাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেই হাসপাতালের খরচ বহন করা তাঁর পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয় বলে তাঁকে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার গভীর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
ধান উঠতে না উঠতেই শুরু হয়ে গেছে আলু চাষের তোড়জোড়। আর আলু চাষ শুরু হতেই কিছু অসাধু সার ব্যবসায়ী জোরকদমে কালোবাজারি করছেন বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বহুজাতিক সংস্থার হাতে কুক্ষিগত চাষের উপকরণের দাম। 
ওই উপকরণ বেশি দামে কিনে ফসল ফলিয়ে সেই ফসল যখন কৃষকেরা বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন তখন আর ফসলের ন্যায্য দাম মিলছে না। এই প্রক্রিয়ায় কৃষকেরা ঋণের ফাঁসে জড়িয়ে পড়ছেন। এক সময় পাওনাদারদের চাপের মুখে পড়ে কৃষক আত্মঘাতী হতে বাধ্য হচ্ছেন। 

আত্মঘাতী কৃষকের আলু চাষের জমি।


মৃত কৃষকের শ্যালক মানিক রায় বলেন, ‘‘আলু চাষের জন্য বাজার থেকে পঞ্জাবের স্পেশাল সিড লেবেল লাগান আলু বীজ কিনেছিলেন স্থানীয় এক মহাজনের কাছ থেকে। সেই আলু বীজ লাগিয়েছিলেন সাড়ে সাত বিঘা জমিতে। তিনি আশা করেছিলেন যে চাষ করে যা আয় হবে তা দিয়ে মহজনের ঋণ শোধ করবেন এবং মেয়ের বিয়ে দেবেন। কিন্তু দেখা গেল পাঁচ বিঘা জমিতে লাগানো আলুর বীজ গজিয়ে তা কুঁকড়ে যাচ্ছে। আবার বেশ কিছু আলুর বীজই গজায়নি। তা দেখে হতাশায় ভেঙে পড়েন তিনি। ২৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে কীটনাশক খান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয় শনিবার।’’ 
ঘটনায় শোকের আবহ তৈরি হয়েছে গোটা গ্রামে। ঘটনায় আতঙ্কিত স্থানীয় কৃষকরা। তাঁদের বক্তব্য, বেশ কিছু দিন আগে ধুপগুড়িতে ভেজাল পাঞ্জাব আলুর বীজ বিক্রির বিরুদ্ধে পুলিশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছিল। তাঁদের প্রশ্ন সেই ভেজাল বীজের শিকার হলেন কী দীপক রায়! 
কৃষি দপ্তরের আরো সজাগ হওয়া দরকার বলে দাবি করেছেন স্থানীয় আলু চাষীরা।

Comments :0

Login to leave a comment