Minakhan Bomb Blast

মীনাখাঁ বোমা বিস্ফোরণে এখনও নিখোঁজ দুই শিশু

রাজ্য

Minakhan bomb blast এই সেই তৃণমূল কর্মী আবুল হোসেনের বাড়ি। এই বাড়িতেই বুধবার সন্ধ্যায় ঘটে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা

পুলিশের আবেদনে আবুল হোসেন গাইনের আট দিনের হেফাজত দিয়েছে বসিরহাট মহকুমা আদালত। আগামী ২৪ নভেম্বর ফের তাকে আদালতে তোলা হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে। গাইনের বাড়িতে মজুত বোমা ফেটে মারা গিয়েছে এক শিশু। নিখোঁজ আরও দুই শিশু।
চাপালি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আবদুল হামিদ মোল্লাও বলেছেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি আজিজুল গাজির ঘনিষ্ঠ আবুল হোসেন গাইন। যদিও দলের উপপ্রধানের এই অভিযোগ অস্বীকার করে আজিজুল গাজি বলেন, আবুল হোসেনকে আমি চিনি না।


বুধবার রাতে মিনাখাঁয় মজুত করে রাখা বোমা ফেটে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীর মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম হয় আরো দুই শিশু। খোঁজও নেই আরও দুই শিশুর। যার মধ্যে এক শিশু কন্যা আবুল হোসেন গাজির। নিখোঁজ অপর শিশু তাঁরই এক আত্মীয়ের। 
স্থানীয়রা বলছেন ঘটনার পর পুলিশ তাদের নিয়ে গেছে। কোথায় আছে সোহানা খাতুন ওরফে ঝুমার খেলার সাথীরা? বোমা বিস্ফোরণের সময় তারা সোহানার সঙ্গেই ছিল, গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় সূত্রে এমনই খবর। আদৌ কী তারা বেঁচে আছে? প্রশ্ন করছেন বকচোরা গাইন পাড়া সহ গোটা মিনাখাঁ ব্লক। 
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গাইন পাড়ায় গেলে মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে গোটা গ্রাম। পুলিশকে প্রশ্ন করা হলে স্পষ্ট করে কিছুই বলতে চাইছে না। অভিযুক্ত আবুল হোসেন গাইনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পুলিশ ভারতীয় দন্ডবিধির ৯(বি), ২৮৬, ৩০২-৩৪ ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। 

 


ঘটনাস্থলে প্রচুর সংখ্যায় বোমা মজুত ছিল। জানা গিয়েছে, সোহানার মৃত্যুর পরই বাকি বোমা সরিয়ে ফেলে আবুল। তৃণমূল কর্মী আবুল মূলত আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমার কারবারি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী, ক্যানিং থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বোমা এনে এলাকায় বিক্রি করত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। তাছাড়া এলাকায় মেছোঘেরির ব্যবসাও ছিল। ডাকাতি, ছিনতাই তোলাবাজিতে সিদ্ধহস্ত আবুল। একসময় সে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানা গড়ে তুলেছিল ৪ নম্বর চৈতল এলাকায়। পুলিশের খাতায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে। 
স্থানীয়দের অভিযোগ, দলের মদতেই অপরাধমূলক কাজ চালাতো আবুল। চাপালি অঞ্চল সভাপতি তৃণমূলের আজিজুল গাজি এবং ১৫০, ১৫১ নং বুথের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য বাকিবিল্লা মণ্ডলের হাত ছিল পিঠে। চাপালি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আবদুল হামিদ মোল্লাও সে কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন আজিজুল গাজির ঘনিষ্ঠ আবুল হোসেন গাইন। যদিও দলের উপপ্রধানের এই অভিযোগ অস্বীকার করে আজিজুল গাজি বলেন, আবুল হোসেনকে আমি চিনি না। 

 

 


বুধবার বকচোরা গাইন পাড়ায় তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ ও বোমার আঘাতে শিশু কন্যার মৃত্যুর প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে মিনাখাঁ থানায় বিক্ষোভ দেখায় সিপিআই(এম)'র কর্মী সমর্থকরা।তারা এদিন মিছিল করে যায় মিনাখাঁ থানায়।থানায় ঢুকতে গেলে তাদের সাথে পুলিশের ধ্বস্তাধ্বস্তি বেঁধে যায়।শেষে আগামী ১০দিনের মধ্যে তৃণমূল আশ্রিত বাকি দুষ্কৃতিদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থেকে সরে আসে সিপিআই(এম)'র কর্মী সমর্থকরা।

 

 

মিনাখাঁর বকচোরার ঘটনায় একেবারে প্রকাশ্যে চলে এলো তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব। এদিন বিকালে চাপালিতে বিক্ষোভ দেখালো ব্লক সভাপতি তাজউদ্দিন মোল্লা ও চাপালি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আবদুল হামিদ মোল্লার অনুগামীরা। তাদের দাবি অবিলম্বে তৃণমূলের চাপালি অঞ্চল সভাপতি আজিজুল গাজিকে গ্রেপ্তার করতে হবে। এই দাবিতে দীর্ঘক্ষণ রাস্তা অব‍রোধ ক‍রে চলে বিক্ষোভ।
 

Comments :0

Login to leave a comment