AIPSO ISRAEL-PALESTINE CONFLICT

প্যালেস্তাইনের সংহতিতে পথ হাঁটল কলকাতা

রাজ্য কলকাতা

israel palestine conflict hamas usa israel iran india bengali news AIPSO

অনিন্দ্য হাজরা 

 

প্যালেস্তাইনের সমর্থনে পথে হাঁটলেন কলকাতা সহ রাজ্যের কয়েক হাজার মানুষ। বুধবার শিয়ালদহ স্টেশন সংলগ্ন অঞ্চল থেকে রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ অবধি মিছিলের ডাক দেয় সারাভারত শান্তি ও সংহতি সংস্থা বা এআইপিএসও’র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি। শান্তি আন্দোলনের কর্মীদের পাশাপাশি মিছিলে শান্তি আন্দোলনের কর্মীদের পাশাপাশি ছাত্র, যুব, মহিলা, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী, শ্রমিক সহ সমাজের সমস্ত অংশের মানুষ পা মেলান।  মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সভা হয়। সভা থেকে বক্তারা জানান, ভারত সরকারকে বাধ্য করতে হবে ইজরায়েলের পাশ থেকে সরে দাঁড়াতে। তারজন্য প্রয়োজন ব্যপক জনমত গঠন। 

এদিনের মিছিল ঘিরে যথেষ্ট উৎসাহ দেখা গিয়েছে পথ চলতি সাধারণ মানুষের মধ্যে। যানজটের ফলে আটকে পড়া বাসের সিট থেকে মিছিলের ছবি এবং ভিডিও তুলতে দেখা গিয়েছে বহু মানুষকে। মিছিলে হাঁটতে হাঁটতেই ‘যুদ্ধ নয় শান্তি চাই’ গান গাইতে শুরু করেন সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কর্মীরা। ছাত্র-যুব সহ অন্যান্য অংশের মানুষ সেই সুরে গলা মেলান। 

মিছিল রাজাবাজারে পৌঁছলে, রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের গেটে সংক্ষিপ্ত সভা শুরু হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ক্যাম্পাসের কর্মচারীরা উদ্যোগ নেন সভা যাতে সুষ্ঠু ভাবে করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর থেকে আসে কাঠের চেয়ার এবং বেঞ্চ। অটোয় মাইক বেঁধে, বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে প্যালেস্তাইনের পাশে থাকার বার্তা দেয় বুধবারের কলকাতা। 

এদিনের সভায় বক্তারা বলেছেন, স্বাধীন ভারতবর্ষের কূটনৈতিক ইতিহাসে প্রথমবারের জন্য খোলাখুলি ইজরায়েলকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লি। রাষ্ট্রসংঘে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সমর্থন জানায়নি ভারত। এর নেপথ্যে একদিকে ইসলাম বিদ্বেষ থাকলেও অপরদিকে রয়েছে আদানি গোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষা। কারণ ইজরায়েলের হাইফা বন্দরে বিপুল অর্থ লগ্নি করেছে আদানি গোষ্ঠী। একইসঙ্গে ইজরায়েলের পেগাসাস প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিরোধীদের ফোন এবং কম্পিউটারে আড়ি পেতেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। একই কায়দায় ইজরায়েলের বিরুদ্ধে কিংবা প্যালেস্তাইনের সমর্থনে একটিও শব্দ খরচ করেনি রাজ্যের তৃণমূল সরকার। 

বক্তাদের একটা অংশ মনে করেছেন, তৃণমূল সরকারও ইজরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখতে আগ্রহী। তাই কলকাতার ইজরায়েলি কনসুলেটে ‘হনোরারি কনসল জেনারেল’ হয়েছেন তৃণমূল ঘনিষ্ঠ এক শিল্পপতি। অপরদিকে ছাত্র যুবদের প্যালেস্তাইনের সংহতিতে হওয়া মিছিল গায়ের জোরে আটকে দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। ইডেন গার্ডন্সে বাংলাদেশ পাকিস্তান ম্যাচেও দর্শকদের প্যালেস্তাইনের পতাকা নিয়ে প্রবেশে বাধা দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। 

বক্তারা একযোগে তুলে ধরেন ৩ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কিভাবে আমেরিকার মদতে  অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে নরমেধ যজ্ঞ চালাচ্ছে ইজরায়েল। সমস্ত আন্তর্জাতিক এবং মানবিক আইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে। ভারত সরকার এই অবস্থাতেও ইজরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আমেরিকার সহযোগি দেশগুলিও একই ভূমিকা নিয়েছে। এর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই গোটা পশ্চিমী বিশ্বে পথে নেমেছেন মানুষ। লন্ডন, নিউ ইয়র্ক, প্যারিস, বার্লিন সহ একের পর এক শহরে লক্ষ লক্ষ মানুষের মিছিল হচ্ছে। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা প্যালেস্তাইনের সংহতিতে সাদা-কালো চেক স্কার্ফ বা কাফিয়ে পরে সংহতি জানাচ্ছেন প্যালেস্তাইন মুক্তি আন্দোলনকে। একই কায়দায় আমাদেরও বিজেপি সরকারকে বাধ্য করতে হবে নিজেদের নীতি বদলাতে। তারজন্য ব্যপক অংশের মানুষকে সংগঠিত করে জনমত গঠন করতে হবে। 

এদিনের মিছিলে পা মেলান অমিয় পাত্র, জিয়াউল আলমসুজন চক্রবর্তী, পলাশ দাসবাসুদেব বসু , কনিনীকা ঘোষমালিনী ভট্টাচার্য, দিপালী ভট্টাচার্যঅঞ্জন বেরা, তুষার ঘোষবিপ্লব মজুমদার, রজত ব্যানার্জিদিব্যেন্দু চ্যাটার্জিসৈকত গিরি, সদানন্দ ভট্টাচার্যসৃজন ভট্টাচার্য, কেশব ভট্টাচার্যতরুণ পাত্র, ধ্রুবজ্যোতি সাহাপ্রদীপ মহাপাত্র, শ্যামল চক্রবর্তীধ্রুবশেখর মন্ডল, সুখরঞ্জন দেগৌতম সেনগুপ্ত, প্রমুখ। 

সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তব্য রাখেন অঞ্জন বেরা, চিকিৎসক ডাঃ সুদীপ চক্রবর্তীবাসুদেব বসু, শ্রীকুমার মুখার্জিঝুমা দাস, শর্বাণী ভট্টাচার্যরজত বন্দোপাধ্যায়, ঈশিতা মুখার্জি এবং ইরশাদ গৌহ্বর। ধন্যবাদ জানান বিনায়ক ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন শান্তি আন্দোলনের সর্বভারতীয় নেতা রবীন দেব।

Comments :0

Login to leave a comment