এ রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ নিয়ে অসন্তুষ্ট জাতীয় নির্বাচন কমিশন। বহু জায়গায় বুথ লেভেল আধিকারিক (বিএলও)দের ভূমিকা নিয়েও কমিশনে বিস্তর অভিযোগ এসেছে। এরাজ্যের বিরোধী দলগুলির পক্ষ থেকে কমিশনে বারবার অভিযোগ জানানো হয়েছে, মৃত ভোটার নিয়ে। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, চক্রান্ত করে এরাজ্যে ভোটার তালিকায় মৃত ভোটারের নাম রেখে দেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়টি নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেওয়ার দায়িত্ব আসলে বিএলও’দের। কিন্তু তাঁরা সেই কাজটি সঠিকভাবে করছেন না।
এরাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু হয়েছে গত ১ নভেম্বর থেকে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) আরিজ আফতাব এই কাজের শুরুতে সর্বদলীয় বৈঠক করে জানিয়েছিলেন, ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলবে। এই সময়ের মধ্যে প্রতি শনিবার এবং রবিবার বুথে বুথে বসার কথা বিএলও’দের। বহু জায়গা থেকে অভিযোগ এসেছে, বিএলও’রা বুথে বসছেন না। এ বিষয় নিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করে সিইও আরিজ আফতাবের সঙ্গে কথাও বলেন সিপিআই(এম) নেতা রবীন দেব। কিন্তু তাতে স্থানীয়ভাবে অবস্থার যে খুব উন্নতি ঘটছে, তেমনটা নয়।
তবে বিরোধী দলগুলির ক্রমাগত অভিযোগের পর এবার নড়েচড়ে বসেছে নির্বাচন কমিশন। বিরোধী দলগুলির তরফে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ সম্পর্কিত অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখতে নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গে একজন সেক্রেটারি এবং একজন আন্ডার সেক্রেটারিকে পাঠিয়েছে। শুক্রবার এই দু’জন আধিকারিক বালিগঞ্জ এলাকায় ভোটার তালিকার কাজকর্ম খতিয়ে দেখেন। শনিবার তাঁরা উত্তর কলকাতার জোড়াসাঁকো কেন্দ্রে যাবেন ভোটার তালিকার কাজ খতিয়ে দেখতে। নির্বাচন কমিশনের কাছে কলকাতার সাতটি বিধানসভা এলাকায় ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ নিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জমা পড়েছে। এই বিধানসভা এলাকাগুলিতে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজের যে আবেদন জমা পড়ে তা খুবই নগণ্য। পাশাপাশি, মৃত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিএলও’দের ভূমিকা নিয়ে সন্দিহান নির্বাচন কমিশন। স্বাভাবিকভাবেই কমিশন পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
ভোটার তালিকার কাজে অতীতে কারচুপি করা গেলেও এখন নির্বাচন কমিশন সবটাই ই আর ও নেটের মাধ্যমে দিল্লিতে বসে দেখতে পায়। ফলে সেপ্টেম্বরে যে মধ্যবর্তী ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ হয়েছে সেখান থেকেই বুঝতে পারে যে এরাজ্যে বহু ভুয়ো ভোটার তালিকায় রয়ে গেছে। কমিশন আশা করেছিল, নভেম্বর মাস থেকে যে অভিযান শুরু হয়েছে সেখানে হয়তো বিএলও’রা উদ্যোগ নেবেন। বাড়ি বাড়ি ঘুরে মৃত ভোটার এবং অন্যত্র ঠিকানা পরিবর্তন করে চলে গেছেন তাঁদের চিহ্নিত করে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেবার উদ্যোগ নেবেন। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ এরাজ্যে এরকম উদ্যোগ বুথ স্তরে এখনো লক্ষ্য করা যায়নি। অথচ ভোটার তালিকা সংশোধনী অভিযান শেষ হতে আর মাত্র দু’সপ্তাহ বাকি আছে।
Comments :0