Bangladesh

বাংলাদেশে থাকা ভারতীয়দের জন্য চালু হলো হেল্পলাইন নম্বর

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশে থাকা ভারতীয় এবং ভারতীয় ছাত্রদের জন্য নির্দেশিকা জারি করলো ঢাকার ভারতীয় দূতাবাস। এর পাশাপাশি চালু করা হয়েছে হেল্পলাইন নম্বর বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাতায় রেখে ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে জারি জরা নির্দেশে বলা হয়েছে প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন রাস্তায় না বেরোয়। 
ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তাল বাংলাদেশ। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে কয়েকজন ছাত্রের। এই পরিস্থিতিতে দেশের সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের সরকার। গোটা ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 
এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে হেল্পলাইন নম্বরও চালু করা হয়েছে। 
ঢাকার ভারতীয় দূতাবাস নম্বর - 880-1937400591
চট্টগ্রামের উপ-দূতাবাস নম্বর – 880-1814654797 / 880-1814654799
শীলেটের উপ-দূতাবাস নম্বর – 880-1313076411
খুলনার উপ-দূতাবাস নম্বর - 880-1812817799
গত সোমবার থেকে সরকারি কাজে সংরক্ষণ ব্যবস্থা সংস্কারের দাবি ঘিরে ছাত্র সংঘর্ষে উত্তাল রাজধানী ঢাকা সহ দেশের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শহর। ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়া হিংসায় ৩ জন পড়ুয়া সহ অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ৫০০-র  বেশি। মঙ্গলবার রাতে অবস্থা সামলাতে প্রশাসন দেশের সব স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করে। রাতেই ঢাকা ও বিভিন্ন স্থান থেকে হিংসার খবর পাওয়া যায়।
বুধবার সকাল থেকে কোটা বাতিলের দাবিতে সোচ্চার ছাত্র আন্দোলনকারীরা ঢাকার শনিরআখড়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। সন্ধ্যার পর ছাত্রদের হটিয়ে দিতে পুলিশ লাঠি চালায়। ঢাকার শনিরআখড়ায় পুলিশের গুলিতে শিশু সহ ৬ জন আহত হন। গুলিবিদ্ধদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। এছাড়া কাছেরই কাজলায় হানিফ সেতুতে বিক্ষোভকারীরা আগুন লাগিয়ে দেয়। এই সময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে ছররা গুলি এবং টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে। পুলিশর লাঠির আঘাতে বেশ কিছু পড়ুয়া রক্তাক্ত হন।
বাংলাদেশের নাগরিক সমাজে সরকারি কাজের চাহিদা বেশি। কারণ, এক্ষেত্রে বেতন ছাড়াও বিভিন্ন রকমের সুযোগ সুবিধা বেশি। কিন্তু মোট সরকারি চাকরির আর্ধেকের বেশি আসনই বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোটায় সংরক্ষিত।
বিরোধীদের অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামি লিগ সরকারের সমর্থক একটি অংশ এই সংরক্ষণ ব্যবস্থার সুবিধা সব থেকে বেশি পায়। এদের জন্যই হাসিনা চতুর্থবারের জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পেরেছেন। অবশ্য আওয়ামি লিগ বিরোধীদের এহেন অভিযোগ সরাসরি উড়িয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হাসিনার দলের তরফে জানানো হয়েছে, সরকারি কাজে মুক্তি যোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য সংরক্ষণ যুক্তিসঙ্গত।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে বিক্ষোভের জেরে হাসিনার সরকার কোটা ব্যবস্থা তুলে দেয়। কিন্তু সম্প্রতি আদালত ওই ব্যবস্থা পুনরায় ফিরিয়ে আনে। তার পর থেকেই শুরু হয় কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন। আওয়ামি লিগ সরকারের তরফে হিংসার জন্য বিরোধীদেরই দায়ী করা হয়েছে। 
‘‘জামাত-ই-ইসলামি এবং বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি)’র ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ভিড়ে মিশে রয়েছে। এরাই হিংসায় জড়িত,’’ বুধবার ঢাকায় সাংবাদিকদের জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
গত দু’সপ্তাহ ধরে কোটা বিরোধী আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশের শীর্ষ আদালত গত সপ্তাহেই আদালতের সাম্প্রতিক রায়টি স্থগিত করে দেয়। কিন্তু তার পরেও সোমবার দুপুর থেকে পরিস্থিতি আশান্ত হয়ে উঠেছিল কেন তা নিয়ে বিভিন্ন মহলেই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে মনে করা হচ্ছে কোটা ব্যবস্থার যুক্তিসঙ্গত সংস্কার না হলে হিংসা চলতেই থাকবে।
‘‘আগামী ৭ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টে মামলাটির শুনানি হবে। এই সময় ছাত্ররা তাঁদের বক্তব্য রাখার সুযোগ পাবেন,’’ বলেন হক।

Comments :0

Login to leave a comment