CPI(M) HOWRAH RALLY

পুলিশের বাধা উড়িয়েই হাওড়ায় মিছিল বামফ্রন্টের

রাজ্য জেলা

CPIM BJP RSS TMC WEST BENGAL POLITICS BENGALI NEWS HOWRAH RALLY KOLKATA HIGH COURT

আজ দুপুরবেলা অবধি স্পষ্ট ছিল না, মিছিল করা যাবে কি যাবে না। এরাজ্যে দাঙ্গাবাজরা মিছিলের অনুমতি পায়, আর বামপন্থীরা সম্প্রীতি ফেরানোর দাবিতে মিছিল করতে চাইলে পুলিশ অনুমতি দেয় না। আদালত থেকে অনুমতি জোগাড় করতে হয়। কোন রাজ্যে বাস করছি আমরা?  সোমবার হাওড়া ময়দানের সভা থেকে এই প্রশ্ন তুললেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।

সোমবার হাওড়ার শিবপুর কাজীপাড়া থেকে হাওড়া ময়দান অবধি মিছিল এবং সভা করে হাওড়া জেলা বামফ্রন্ট। এই কর্মসূচি প্রথম থেকেই বানচাল করার চেষ্টা করে তৃণমূল এবং হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট। পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন নেতৃবৃন্দ। বামফ্রন্টের আবেদনে সাড়া দিয়ে মিছিলের অনুমোদন দেয় আদালত।

এদিন প্রথমার্ধে হাওড়ার মিছিলের অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় জেলা বামফ্রন্ট। এই আবেদনের শুনানি চলে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে। জেলা বামফ্রন্টের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। আবেদনে বলা হয়, ১৮ মে প্রশাসনের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসন অনুমতি দিচ্ছে না রাজনৈতিক কারণে। 

রাজ্য সরকারের আইনজীবী আদালতকে জানায়, গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। গোয়েন্দা বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে রাম নবমীর দাঙ্গা হওয়া অঞ্চলের উপর দিয়ে মিছিল যাওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে মিছিল থেকে উষ্কানি দেওয়া না হলেও বাইরে থেকে প্ররোচনা সৃষ্টি করা হতে পারে। এমনটাই গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে এসেছে। তাই আমরা বামফ্রন্টকে অনুরোধ করছি, ওই এলাকার বাইরে মিছিল করার জন্য। 

দুই তরফের বক্তব্য শোনার পরে বিচারপতি মান্থা মিছিলের অনুমতি দেন। যদিও তিনি বলেন, মিছিল থেকে কোনও রকমের উত্তেজক স্লোগান দেওয়া কিংবা মাইক ব্যবহার করা যাবে না। একইসঙ্গে বিকেল চারটে থেকে পাঁচটার মধ্যে মিছিল শেষ করতে হবে। তারপর সভা করতে হবে। চওড়া বস্তি, মল্লিক ফটক, ফাজির বস্তি ইত্যাদি  স্পর্শকাতর এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় কোনও ধরণের কোনও ইঙ্গিতবাহী স্লোগান তোলা যাবে না। যদিও হাওড়া ময়দানের সভায় মাইক ব্যবহারের অনুমতি দেন বিচারপতি মান্থা। 

আদালতের নির্দেশ মেনেই সোমবার বিকেলে হাওড়ায় মিছিল এবং সভা হয়। সভা এবং মিছিলে মহম্মদ সেলিম, শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, দিলীপ ঘোষ প্রমুখ বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

এদিন হাওড়া ময়দানের সভা থেকে সেলিম বলেন, দাঙ্গা লাগানোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় দেওয়া হয়। এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে দেওয়া হয়, যাতে এক সম্প্রদায়ের মানুষ আরেক সম্প্রদায়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যাবে। তখন মুখ্যমন্ত্রী ধর্ণা মঞ্চ থেকে বলছেন হাওড়ায় দাঙ্গা হয়েছে আমি খবর পেয়েছি। আর যখন ধুলাগড় কিংবা বসিরহাটে দাঙ্গা হয়েছে, যখন পুলিশের রিপোর্ট বলছে গত ৫-৭ বছরে রাজ্যের অন্তত ১০০ জায়গায় দাঙ্গা বাঁধানো হয়েছে, তখন মমতা ব্যানার্জি মুখে কুলুপ এঁটে বলেছিলেন, কোথায় দাঙ্গা? কোথাও কিচ্ছু হচ্ছে না। 

সেলিম আরও বলেন, দাঙ্গাবাজরা যেমন দাঙ্গার জন্য উপযুক্ত সময় বেছে নেয়, তেমনই মুখ্যমন্ত্রীও সময় বেছে নেন, কখন দাঙ্গা বলবেন, আর কখন বলবেন না। 

সেলিম পুলিশকে কটাক্ষ করে বলেন, আজকের হাইকোর্টের রায়ে বেকায়দায় পড়েছে হাওড়া কমিশনারেটের পুলিশ। এর পর থেকে লালঝাণ্ডার মিছিল আটকানোর আগে দশবার ভাববেন। নইলে একই ভাবে আদালতে ল্যাজে গোবরে হতে হবে। 

এদিন সেলিমের পাশাপাশি শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, দিলীপ ঘোষ প্রমুখ বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ সভায় বক্তব্য রাখেন। খালি গলায় মিছিল হলেও তাকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে যথেষ্ট উদ্দীপনা ছিল। 

Comments :0

Login to leave a comment