Dinhata

আসামের বিদেশী ট্রাইবুনালের নোটিশ, আতঙ্কে দিনহাটার বাসিন্দা

জেলা

জন্মসূত্রে বসবাসকারী এক ভারতীয় নাগরিকের নামে বিদেশী আইনে মামলা দায়ের হয়েছে আসামের বিদেশী চিহ্নিতকরণ ট্রাইবুনালে। রেশন কার্ড বা আধারের মতো নথি দিয়েও রেহাই পাননি দিনহাটার বাসিন্দা উত্তম ব্রজবাসী। ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে আরও নথিপত্র জমা না দিলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে আদালত। 
দিনহাটা-২ ব্লকের সাদিয়ালের কুঠি গ্রামের বাসিন্দা উত্তম ব্রজবাসী। মামলার নোটিশ পেয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তিনি। কোচবিহারের জেলা শাসককে চিঠি লিখে প্রতিকারের আবেদন জানিয়েছেন তিনি। আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে নাগরিকত্ব প্রমাণের নথিপত্র দাখিল করতে না পারলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। 
ঘটনার বিবরণে জানা গিয়েছে, দিনহাটা-২ ব্লকের সাদিয়ালের কুঠি গ্রামের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের উত্তম ব্রজবাসী। তাঁর জন্ম ওই গ্রামেই। পিতা নরেন্দ্রনাথ ব্রজবাসীও জন্মসূত্রে এখানকার বাসিন্দা। তিনি কোনদিন আসামে যাননি। এ বছরের জানুয়ারিতে আসামের গুয়াহাটি থেকে কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে তাঁর নামে একটি নোটিশ আসে। ওই নোটিশ মারফত তিনি জানতে পারেন আসামে বিদেশী আইনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এই নোটিশ পেয়ে তিনি তাঁর ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড আদালতে দেখিয়েছেন। কিন্তু আদালত সেই প্রমাণকে মান্যতা দেয়নি। 
আদালত নির্দেশ দেয় যে ১৯৭০ সালের আগে থেকে পিতার মৃত্যু পর্যন্ত ভোটার তালিকায় নামের সার্টিফায়েড কপি দিতে হবে উত্তম ব্রজবাসীকে। সেই সঙ্গে জমা দিতে হবে ১৯৭০ সালের আগের জমির কাগজপত্র। ব্রজবাসী ১৯৬৬ সালের ভোটার তালিকায় বাবার নামের সার্টিফিকেট কপি দেখাতে পারলেও তার আগের কোন জমির কাগজপত্র দেখাতে পারছেন না। তিনি জানিয়েছেন যে ১৯৭২ সালে কোচবিহার ট্রেজারিতে আগুন লেগে সেই সব নথি পুড়ে গিয়েছে। গত ২৪ জুন কোচবিহারের জেলা শাসককে লিখিতভাবে জানিয়ে সমস্যা মেটানোর আর্জি জানিয়েছেন তিনি। জেলা শাসক এখনো কোনো সাড়া দেননি। 
উত্তম ব্রজবাসী বলেন, ‘‘আমার বাবা জন্মসূত্রে এখানকার নাগরিক ছিলেন। আমার কাছে বৈধ ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড সবই রয়েছে। আমি জন্মসূত্রে এখানকার বাসিন্দা। এমনকি কোনদিন আসামে যাইনি। কাজেই কি করব বুঝতে পারছি না।’’ 
উল্লেখ্য, উত্তম ব্রজবাসী রাজবংশী পরিবারের। তিনি জন্মসূত্রে ভারতের নাগরিক। অথচ তাঁকে বাংলাদেশী বলে দেগে দেওয়ার  প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সুবিচার না পাওয়ার অভিযোগ তুলছেন তিনি।

Comments :0

Login to leave a comment