INDIAN FOOTBALL

জটিলতা থাকলেও আইএসএল নিয়ে আশাবাদী কলকাতার দুই প্রধান

খেলা

কোন পথে চলেছে ভারতীয় ফুটবল, গত কয়েকদিন ধরে ক্রীড়া মহলে চলছে এই আলোচনা। কিছুদিন আগেই আইএসএলের পৃষ্ঠপোষক এফএসডিএল (ফুটবল স্পোর্টস ডেভলপমেন্ট লিমিটেড) একটি চিঠি দিয়ে আইএসএলের সমস্ত ক্লাবগুলিকে জানিয়ে দিয়েছে যে এই মরশুমের আইএসএল আপাতত স্থগিত। কারণ ২০১০ সালে এফএসডিএলের সঙ্গে এআইএফএফের  (AIFF) যে মাস্টার্স রাইটস এগ্রিমেন্ট (MRA) চুক্তি হয়েছিল তার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ডিসেম্বরে। ফলে এখনই চুক্তি নবীকরণ না করতে পারলে আইএসএল হওয়া সম্ভবপর নয়। এই বিষয়ে এফএসডিএল এআইএফএফকে যে নতুন মডেলের প্রস্তাব দিয়েছে তাতে আইএসএল থেকে প্রত্যেক মরশুমে যে আয় হবে তার ৬০শতাংশ লভ্যাংশ যুগ্মভাবে পাবে আইএসএলের সমস্ত ক্লাবগুলি। ২৪ শতাংশ পাবে এফএসডিএল এবং ১৪ শতাংশ এআইএফএফ। তবে এই মডেল মানতে নারাজ ফেডারেশন। এই বিষয়টি এখন রয়েছে কোর্টের অধীনে। এই ব্যাপারে রায় জানানোর পরই সিদ্ধান্ত হবে আগামী ভবিষ্যতের। শোনা যাচ্ছে যে আগামী আগস্টে হতে পারে ফেডারেশনের নির্বাচন। তারপর সমস্ত টেলিভশন স্বত্ব , অন্যান্য স্বত্বগুলি বিক্রয় প্রক্রিয়া শেষ হলে তারপর খেলার তারিখ ও দিনক্ষণ ঘোষণা করতে হবে। সবমিলিয়ে সময় লেগে যাবে প্রায় ২ মাস। অর্থাৎ আগামী সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে কোন মতেই শুরু করা যাবেনা ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতা।

এই প্রসঙ্গে ভারতীয় তথা বাংলা ফুটবলের দুই প্রধানের কর্তারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। ইস্টবেঙ্গল শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকারের যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় দুই পক্ষেরই একটু সমঝোতার ভুল হয়েছে । তবে আমি বিশ্বাস করি যে ফুটবল বন্ধ হবেনা। যে কোন পরিস্থিতিতেই খেলা হবে।’’ ইতিমধ্যেই সরকারিভাবে ইস্টবেঙ্গলের সমস্ত নতুন সই করা খেলোয়াড়দের নাম ঘোষণা শুরু করে দিয়েছে। শুরু হয়ে গিয়েছে প্রাক মরশুমের প্রস্তুতিও। তবে আইএসএল প্রতিযোগিতা শুরু হতে দেরি হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে সেই সময়টায় অন্য প্রতিযোগিতা খেলার পথও খোলা রাখছে ইস্টবেঙ্গল দল। দেবব্রত সরকার বলেন, ‘‘এই ব্যাপারটি পুরোটাই কোচের উপর নির্ভরশীল। তিনি যদি মনে করেন ওই সময়ে অন্য কোনো প্রতিযোগিতা অথবা বিদেশে গিয়ে কোনো প্রতিযোগিতা খেলবেন। সেটা আমরা করতে পারি।’’ এর সঙ্গে সঙ্গে তিনি এও জানিয়ে রাখেন যে , আসন্ন ডুরান্ড কাপে ইস্টবেঙ্গল নিজেদের পূর্ণশক্তির দল অর্থাৎ বিদেশী নিয়েই মাঠে নামবে।

কলকাতার আর এক প্রধান মোহনবাগান ক্লাবের অবস্থানও এই বিষয়ে অনেকটাই একইরকম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্লাবের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘‘আমাদের ধারণা এফএসডিএল ও এআইএফএফের মধ্যেকার এই জটিলতার খুব শীঘ্রই সমাধান সূত্র বের হবে।’’ তবে আইএসএল নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও মোহনবাগানের সামনেই রয়েছে এএফসি এসিএল ২ (এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২) এর ম্যাচ। গত মরশুমে লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে আইএসএল শিল্ড জিতেছিল মোহনবাগান। তাই এই মরশুমে এই এশিয়ান প্রতিযোগিতার গ্রুপ পর্বে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে সবুজ মেরুন। চলতি মাসের আগামী ২৭ তারিখ থেকে শুরু হয়ে যাবে মোহনবাগানের সিনিয়র দলের অনুশীলন। সমস্ত সিনিয়র খেলোয়াড়দের আসার সঙ্গে সঙ্গেই চলে আসবেন বিদেশীরাও। সম্ভবত মোহনবাগান মাঠেই অনুশীলন হতে পারে। সেই মতন মাঠের প্রস্তুতিও চলছে। আগামী আগস্ট মাসের ১৩ তারিখ এসিএল ২ -র যোগ্যতা অর্জন পর্বের প্লেঅফ রাউন্ডের ম্যাচে ওমানের দল আল সিবের বিরুদ্ধে এফসি গোয়া। খেলাটি হবে গোয়ার জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে। গত এপ্রিলে ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে জামশেদপুর এফসিকে হারিয়ে সুপার কাপ জিতেছিল এফসি গোয়া। সেই জয়ের ফলেই তারা এসিএল ২ -র যোগ্যতা অর্জনের প্লে অফে খেলার সুযোগ পেয়েছে। সম্ভবত এই ম্যাচের পরই এই প্রতিযোগিতার মূলপর্বের খেলা শুরু হয়ে যাবে।

অর্থাৎ দুই প্রধানের বক্তব্যেই স্পষ্ট যে তারা আশাবাদী এই মরশুমের আইএসএল হওয়া নিয়ে। সেই মতো তারা অনুশীলন শুরু করে দিচ্ছেন। 

Comments :0

Login to leave a comment