Singur

সিঙ্গুরের কারখানার জমির ওপর নজর পড়েছে জমি মাফিয়াদের

রাজ্য

সু্প্রিম কোর্ট ২০১৬ সালে নির্দেশ দিয়েছিল সিঙ্গুরের জমি চাষ যোগ্য করে কৃষকদের হাতে ফিরিয়ে দিতে। মমতা ব্যানার্জির মন্ত্রিসভাও ২০১১ সালে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জমি ফেরত দেওয়ার। কিন্তু তা হয়নি। জমি চাষ যোগ্য হয়নি। জমি ভাগও করা হয়নি বলে দাবি করছেন সিঙ্গুরের কৃষকরা। 

সিঙ্গুরের সারা ভারত কৃষক সভার সম্পাদক দেবাশিস চ্যাটার্জির কথায়, ‘‘জমি কোন ভাবেই চাষ যোগ্য করা হয়নি। ওই জমিতে আর চাষ হয়না। ভেরি করা হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। জমি মাফিদের নজর পড়েছে জমির ওপর।’’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে রাজ্যে তৃণমূলে ক্ষমতায় আসার পিছনে সিঙ্গুরের আন্দোলনকে ব্যবহার করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। অষ্টম শ্রেণির পাঠ্য বইয়েও জায়গা পেয়েছে সিঙ্গুর আন্দোলন।

তৃণমূল শাসনে রাজ্যে নতুন করে কোন শিল্প আসেনি। উল্টে ট্রাইবুনালের রায়ের ফলে রাজ্যের কোষাগার থেকে টাটাকে দিতে হবে বিপুল পরিমান ক্ষতিপূরন। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল দাবি করছে এই ঘটনার দায় নিতে হবে পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারকে। ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি মঙ্গলবার এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘সিঙ্গুরের দায় নিতে হবে মমতা ব্যানার্জিকে। ডিনামাইট দিয়ে কারখানা তিনি ভেঙেছেন। জমি চিহ্নিত না করেই তাতে ধান ছড়িয়েছেন, ভেড়ি করেছেন। বাংলার যুবকদের ভবিষ্যৎ শেষ করেছেন। এই দায় তার। রাজ্য জুড়ে ইনসাফ যাত্রা দাবি তুলবে শিল্পায়নের, কর্মসংস্থানের।’’ 

ঠিক ১৫ বছর আগে অর্থাৎ ২০০৮ সালে টাটারা সিঙ্গুর ছাড়ার কথা ঘোষনা করেছিলেন। সেই সময় মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন, ‘‘আমার কিছু যায় আসে না।’’

কিন্তু ট্রাইবুনাল যেই রায় দিয়েছে তাতে চাপে পড়েছে রাজ্য সরকার। সিঙ্গুরের অধিগৃহীত জমিতে শিল্প না হওয়ায় টাটা মোটরসকে ৭৬৫ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমকে। সোমবার টাটা মোটর্স জানিয়েছে তিন সদস্যের বিরোধ নিষ্পত্তি ট্রাইবুনাল সর্বসম্মতিতে ক্ষতিপূরণের রায় দিয়েছে। একইসঙ্গে টাটা মোটরস জানিয়েছে, মোট অর্থের উপর ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে শিল্পোন্নয়ন নিগমকে। মূলধনী বিনিয়োগের ক্ষতিপূরণ চেয়ে ট্রাইবুনালে আবেদন জানিয়েছিল টাটা মোটর্স।

২০১৬ সালে বুলডোজার এবং ডিনামাইট দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয় পরিত্যক্ত কারখানার কাঠামো। সরকারের যুক্তি ছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু জমি চাষ যোগ্য করার ক্ষেত্রে কোন নির্দেশই মানেনি রাজ্য। 

দেবাশিস চ্যাটার্জি বলেন, ‘‘আজ থেকে ১৭-১৮ বছর আগে সিঙ্গুর সহ গোটা রাজ্যের যুবক, যুবতীরা স্বপ্ন দেখেছিলেন কর্মসংস্থানের। সেই স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে মমতা ব্যানার্জি। নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে সিঙ্গুরকে তিনি ব্যবহার করেছেন। বাংলার ভবিষ্যতের কথা তিনি ভাবেননি।’’

Comments :0

Login to leave a comment