ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া ছাপিয়ে যাচ্ছে গোটা রাজ্যে। কলকাতায় এক জনের মৃত্যু ম্যালেরিয়া। গত বছরের তুলনায় এবার কলকাতায় ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কম। সম্প্রতি
এমনটাই দাবি করেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলিতে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে উদাসীনতার জেরে ক্রমশ বাড়ছে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা। এবার ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে বেহালার সখের বাজার এলাকায় এক ৪৭ বছর বয়সী ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে প্রথমে বিষ্ণুপুরের ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি ছিলেন। সেখানে ১২ দিন থাকার পর তাঁর শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে টালিগঞ্জের বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত ৭৮ জন। ওই জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১৭২ জন।
ডেঙ্গুর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ। যদিও করোনা তথ্যের মতোই ডেঙ্গু ম্যালেরিয়ার প্রকৃত তথ্যও আড়াল করতে উঠে পড়ে লেগেছে স্বাস্থ্য প্রশাসন। মশা বাহিত রোগ নিয়ে নির্বিকার কলকাতা পৌরসভার প্রশাসকরা।
এবছর বাঁকুড়ায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছুঁইছুঁই। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ ছারিয়েছে।
জেলা স্বাস্থ দপ্তর সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে মুর্শিদাবাদ জেলায় জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫০ জন। ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ২৪৫ জন।
আলিপুরদুয়ারে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। কালচিনি ব্লকে আক্রান্তের সংখ্যা ১১৩ জন।
বর্ধমান শহরে একই ওয়ার্ডে ১২ জনের ডেঙ্গু আক্রান্ত। এলাকাবাসীর ক্ষোভের মুখে পড়েছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। তাদের অভিযোগ মশার আঁতুর ঘর হয়ে উঠেছে বর্ধমান শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড। দীর্ঘদিন ড্রেন পরিস্কার হয় না। ডোবা, নালা সবই আবর্জনায় ভর্তি। দুর্গন্ধ ছড়ায়।
গত বুধবার কালনা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ১২ জন। বৃহস্পতিবার সেই সংখ্যা বেড়ে হয় ১৪ জন। জ্বর নিয়ে মোট রোগী ভর্তি ছিল ২৯ জন।
হুগলি জেলায় চলতি বছরে ১৯০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। শুধুমাত্র বলাগড় ব্লকে ৩২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। তার মধ্যে গুপ্তিপাড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েতের ২৪ জন। সারদা নগর গ্রামের ২১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন।
গত ২১ জুলাই শিলিগুড়িতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ও এলাকা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার প্রশ্নে প্রশাসনের উদাসীনতার বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলছেন মানুষ। গোটা শিলিগুড়িতে সেদিন পর্যন্ত ৪৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত বলে দাবি করা হয়। ডেঙ্গু নিয়ে তথ্য গোপনীয়তার অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার বিরুদ্ধে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৬ মাসে রাজ্যে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ১৬৪ জন। গত বছর সেই সংখ্যাটি ছিল ৩ হাজার ৬৫ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন এবং ২ জনের মৃত্যু হয়। গত জুলাই মাসে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে এক জনের মৃত্যু হয়। আগস্ট মাসের প্রথম দিনই ফের ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল বেলার এক ব্যক্তির।
Malaria Death Kolkata
ম্যালেরিয়া আক্রান্তের মৃত্যু কলকাতায়
×
Comments :0