এদিন পেসকভ বলেছেন, ‘‘গোটা বিষয়টির দিকে আমরা নজর রাখছি। আমরা উদ্বিগ্ন। অবিলম্বে শান্তিপূর্ণ উপায়ে উত্তেজনা কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে। এই সংঘর্ষ ইজরায়েল প্যালেস্তাইনের সীমানা ছড়িয়ে আঞ্চলিক যুদ্ধের রূপ নিতে পারে। তাতে আশেপাশের শক্তিগুলিরও জড়িয়ে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা। সেই পরিণতি যাতে না হয়, তার জন্য পরিস্থিতির দিকে বাড়তি নজর রাখছি।’’
ইজরায়েলকে সামরিক অস্ত্র জোগানোর পাশপাশি যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পেসকভের বক্তব্যে স্পষ্ট, আমেরিকার এই ভূমিকা মেনে নিচ্ছে না রাশিয়া। রাশিয়ার সংবাদসংস্থা ‘তাস’-কে তিনি বলেছেন, ‘‘এই যুদ্ধে তৃতীয় পক্ষের জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট। তার আগেই উত্তেজনা প্রশমন জরুরি।’’
মস্কো বলছে, উত্তেজনা কমাতে কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে আলোচনা। রাশিয়ার অবস্থান, ১৯৬৭ সালের ইজরায়েলের সীমানার মধ্যে স্বাধীন প্যালেস্তাইন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া। এবং স্বাধীন প্যালেস্তাইনের রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম শহর।
রাশিয়া যখন উত্তেজনা প্রশমনের কথা বলছে, তখন গাজা ভূখণ্ডের সীমান্তে ১ লক্ষের কিছু বেশি সেনা জড়ো করেছে ইজরায়েল। বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধের হুঙ্কার দিয়েছেন ইতিমধ্যেই। ইজরায়েল সেনার শীর্ষকর্তারা বলছেন, গাজায় পুরোদস্তুর সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
উত্তেজনা বৃদ্ধিতে ভূমিকা নিয়েছে আমেরিকাও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভূমধ্যসাগরে বাড়তি যুদ্ধ জাহাজ পাঠিয়েছেন। সামরিক অস্ত্র জোগানোর ঘোষণাও করেছেন। জার্মানির তরফেও জানানো হয়েছে, প্যালেস্তাইনকে পাঠানো সমস্ত মানবিক সহায়তা বন্ধ করা হচ্ছে।
এরপরই রাশিয়ার ‘তৃতীয় শক্তির হস্তক্ষেপে’ আপত্তি সারা বিশ্বের নজর টেনেছে। মস্কোর সঙ্গে ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইন- দুই তরফেরই কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। দু’পক্ষকেই সংযত হওয়ার বার্তা দিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার বক্তব্য, পশ্চিমী দেশগুলির উস্কানির ফলেই প্যালেস্তাইন সমস্যার দীর্ঘমেয়াদী সমাধান সম্ভব হচ্ছে না।
সোমবার রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্জিও লাভরভের সঙ্গে বৈঠক করেন আরব লিগের প্রধান আহমেদ আবুল ঘাইট। তিনি মিশরের হোসনি মুবারক সরকারের বিদেশমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন দীর্ঘদিন। বৈঠক শেষে লাভরভ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘অবিলম্বে হিংসা থামানোর উদ্যোগ নিতে হবে। একইসঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা কেন জিইয়ে রইল, সেটাও উপলব্ধি করা প্রয়োজন।’’
আহমেদ আবুল ঘাইট বলেছেন, ‘‘ ইজরায়েল প্যালেস্তাইন সমস্যার সমাধান না হওয়া অবধি হিংসা থামানো সম্ভব নয়। আমরা সম্পূর্ণ ভাবে হিংসা বিরুদ্ধে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, আমরা দুই তরফেরই হিংসার নিন্দা করছি।’’
ঘাইট আরও বলেছেন, ‘‘এই সংঘাতের রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন। এবং সেই সমাধান হতে হবে ন্যায্য। নইলে নতুন করে হিংসা এবং সংঘাত মাথাচাড়া দেবে।’’
Comments :0