কেবল গত দু’দিনে গাজায় নিহতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। কেবল এ বছরের এপ্রিলে নিহতের সংখ্যা ২০৩৭। আগ্রাসনের এমন ভয়াবহতা তুলে ধরে গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি ফের তুলল সিপিআই(এম)।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কাছে পলিট ব্যুরো দাবি, সংঘর্ষ বিরতির জন্য ইজরায়েলের ওপর চাপ তৈরি করতে হবে।
মঙ্গলবার গাজার প্রশাসন জানিয়েছে মাঝরাত থেকে ইজরায়েলের অনবরত হামলায় মাঝরাত থেকে ৭৩ জন নিহত। গাজা শহরের একটি ত্রাণ শিবিরেই নিহতের সংখ্যা ২২ ছাড়িয়েছে। তার মধ্যে শিশুরাও রয়েছে।
মঙ্গলবার সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো বলল, গাজায় ইজরায়েলের আগ্রাসন সমানে চলছে। চলছে আকাশ এবং মাটি থেকে হামলা। এই আগ্রাসন বন্ধ করা দরকার এখনই। জারি করতে হবে সংঘর্ষ বিরতি।
২০২৩’র ৭ অক্টোবর থেকে মোট ৫৩ হাজার ৩৮৪ প্যালেস্তিনীয় নিহত হয়েছেন গাজায়। পলিট ব্যুরো বলেছে, নিহতদের ৯৪ শতাংশ নিরস্ত্র নাগরিক। নিহতদের ৫১ শতাংশ শিশু, ১৬ শতাংশ মহিলা এবং ৮ শতাংশ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা।
পলিট ব্যুরো বলেছে যে দু’মাস গাজায় ত্রাণ সরবরাহের ট্রাক আটকে রেখেছে ইজরায়েল। এখন সামান্য ত্রাণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তার ফলে ক্ষুধার মাত্রা চরমে পৌঁছেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মদতে ইজরায়েল এখন গোটা গাজা স্ট্রিপ দখলে আনার দিকে এগচ্ছে।
পলিট ব্যুরোর দাবি, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উচিত গণহত্যা বন্ধের জন্য ইজরায়েলকে চাপ দেওয়া। ইজরায়েলের রাষ্ট্রপ্রধানদের গণহত্যার দায়ে বিচারের দাবি উঠেছে। সেই দাবিকে সমর্থন জানানো উচিত বিজেপি সরকারের।
পলিট ব্যুরো বলেছে, প্যালেস্তাইনের সাধারণ মানুষের পক্ষে ফের সংহতি জানাচ্ছে সিপিআই(এম)। ১৯৬৭’র আগের সীমান্ত অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে প্যালেস্তাইনের স্বীকৃতির দাবিকে ফের সমর্থন জানানো হচ্ছে।
সংবাদসংস্থার ভিডিও ফুটেজে অবর্ণনীয় ছবি দেখা গিয়েছে। ঘর হারিয়ে ত্রাণ শিবিরেই বেশিরভাগ মানুষ। সেই ত্রাণ শিবিরেও পড়ছে ভারী বোমা। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নিজেদের যেটুকু পাওয়া যায় খুঁজছেন জীবিতেরা। গাজা শহরের যেখানে আক্রমণ হয়েছে তার কাছেই আল আহলি হাসপাতাল। সারি দিয়ে শোয়ানো দেহ। পরিজনের সেখানেই অন্তিম প্রার্থনা করছেন।
ব্রিটেনের সংসদে সরকারের অবস্থান নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন সেদেশের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার। সংসদে তিনি জানিয়েছেন যে কানাডা ও ফ্রান্সের সঙ্গে ব্রিটেন যৌথভাবে ইজরায়েলকে আক্রমণ বন্ধের আবেদন জানিয়েছে। প্রয়োজনে ইজরায়েলের পণ্য আমদানি এবং রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করবে তিন দেশ।
প্যালেস্তাইনে ত্রাণের জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের শাখা ইউএনআরডব্লিএ’র মুখপাত্র লোউজি ওয়াটাররিজ জানিয়েছেন যে গাজায় আর সামান্য খাবার পড়ে রয়েছে। দিনে অন্তত ৫০০ ট্রাক ঢোকা দরকার। ত্রাণ আটকে রেখেছিল ইজরায়েল। এখন বড়জোর ১০০টি ট্রাক যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে। তাতেও এই ভয়াবহ সঙ্কট মিটকে না। বহু শিশু মৃত্যুর মুখে।
এর মধ্যেই ইজরায়েলের ভেতর বিবাদ বাড়ছে। বিরোধী নেতা এবং সেনার উপপ্রধান ইয়েইর গোলান বলেছেন, ইজরায়েল উন্মাদদের দেশ হয়ে উঠেছে। সুস্থ মস্তিষ্কে কেউ নিরস্ত্র নাগরিক আর শিশুদের হত্যা করে না।
Gaza Polit Bureau
দু’দিনে ২০০’র বেশি নিহত গাজায়, সংঘর্ষ বিরতিতে কেন্দ্রের ভূমিকা দাবি পলিট ব্যুরোর

×
Comments :0