বক্তা আর কেউ নন, বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী।
শুক্রবার ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। সেই পোস্টের ছত্রে ছত্রে সাংগঠনিক স্তরে নিজের দলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হন তিনি।
এই সেই ফেসবুক পোস্ট।
বর্তমানে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের প্রধান অভিযোগই হল দুর্নীতির। তাঁদের অভিযোগ, নিয়োগ থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত- সরকারি ব্যবস্থাপনার এমন কোনও অঙ্গ নেই, যেখানে দুর্নীতি করেনি তৃণমূল। নিয়ম করে তৃণমূলকে ‘চোর’ উপাধিতে ভূষিতও করে থাকেন বিরোধীরা। যদিও প্রতি ক্ষেত্রেই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে রাজ্যের শাসকদল।
কিন্তু এবার খোদ তৃণমূল বিধায়ক উগড়ে দিলেন নিজের ক্ষোভ। শুক্রবার তাঁর করা ফেসবুক পোস্টের নির্যাস, বিপুল সংখ্যক চোর এবং ধান্দাবাজের অত্যাচারে তিনি অতিষ্ট।
প্রসঙ্গত, বলাগড় ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্ত বৃহস্পতিবার ভোটের শেষ মুহুর্তের রনকৌশল ঠিক করতে ব্লকের নেতা ও প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে ডাকা হয়নি বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীকে। মূলত সেই বিষয়টিকেই শুক্রবার নিশানা করেছেন তিনি। তাঁর করা পোস্ট অনুযায়ী, তৃণমূলের হুগলী জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন পঞ্চায়েত প্রার্থীদের জন্য বরাদ্দ অর্থ বলাগড় ব্লকের সভাপতি নবীন গাঙ্গুলীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু নবীন গাঙ্গুলী সেই টাকা প্রার্থীদের হাতে তুলে দেননি।
বিধায়কের ইঙ্গিত, এক্ষেত্রে পূর্ণ মাত্রায় দুর্নীতি হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বিধায়কের সঙ্গে ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বের বিরোধ যদিও প্রকট হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই।
প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে বিধায়কের ক্ষোভ এমন জায়গায় পৌঁছায়, যে ফেসবুকে পোস্ট করে দলের দুটি পদ ছেড়ে দেন তিনি। টাকার বিনিময়ে টিকিট বিলি হয়েছে বলেও সেই সময় অভিযোগ করেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী।
এরপর কিছুদিন চুপ করে থাকার পর দলের প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করবেন বলে জনান মনোরঞ্জন ব্যাপারী।
যদিও তাল কাটে বৃহস্পতিবার। ব্যাপারীর মূল অভিযোগ বলাগড় ব্লকের তৃণমূল সভাপতি নবীন গাঙ্গুলীর বিরুদ্ধে। কিন্তু তাঁকে বাদ দিয়ে সেই নবীন গাঙ্গুলীর সঙ্গেই সব্যসাচী দত্ত বৈঠক করায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন মনোরঞ্জন ব্যাপারী।
তিনি ফেসবুকে লেখেন, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া, আবার ভোটের পর বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফেরা এক নেতা বলাগড়ে মিটিং করে গেলেন। আমি বলাগড়ের জনগণের ভোটে নির্বাচিত বিধায়ক। অথচ আমাকে একবার খবর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করলেন না। কারা তাঁকে ঘিরে বসেছিল বলাগড়ের মানুষ দেখেছেন। তাঁদের সবাই চেনেন, তাই আমি কিছু বলতে চাইছি না।সব ভোটের বাক্স খুললে বোঝা যাবে। মানুষ ভোটের বাক্সে হিসেব বুঝিয়ে দেবেন।
যদিও ব্যাপারীর যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে নবীন গাঙ্গুলী জানিয়েছেন, ‘‘ বিধায়ক আর আমার লেভেল আলাদা। ওনার অভিযোগের জবাব জেলা সভাপতি বা নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দিতে পারবেন।’’
Comments :0