Virat Kohli Retirement

অবসরে বিরাট প্রভাব ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে

ফিচার পাতা

সুমিত গাঙ্গুলি
টেস্ট ক্রিকেট থেকে সাইন অফ করেছেন ২৬৯ নম্বর ভারতীয়। তিনি বিরাট কোহলি। চমকে গিয়েছে সারা ক্রিকেট বিশ্ব। একদিনের ক্রিকেট থেকে বিদায় না নিলেও, বিরাটের এই অকস্মাৎ অবসরে মন খারাপ ক্রিকেট দুনিয়ার। কেউ মনে করছেন সেই অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বজয়ী দলের অধিনায়ক বিরাটের কথা, কেউ আবার লর্ডসে ভারতের ঐতিহাসিক জয়কে ফিরে দেখছেন। একটা গোটা প্রজন্ম যারা বিরাটের খেলায় বুঁদ হয়েছিলেন তাঁদের মনে পড়ছে শৈশব-কৈশোরের দিনগুলোকে। যখন স্কুল বা কলেজ থেকে ফেরার পথে একবার কোথাও দাঁড়িয়ে পড়ে স্কোর জানাটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। যখন বিরাটের কভার ড্রাইভে অনুপম আনন্দ খুঁজে পাওয়া যেত। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে আর সেই প্যাশন, উচ্ছ্বাস, বিদেশের মাটিতে দিনের পর দিন বিপক্ষের চোখে চোখ রেখে লড়ে যাওয়াটা কি থাকবে না! কত বাকি ছিল পাঁচ অঙ্কে পৌঁছাতে? ৭৭০ রান। মাত্র? ইংল্যান্ড আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আগামী ৮টা টেস্টে অনায়াসে রানটা হয়ে যেত। হলো না। এইরকমই যুগে যুগে কিছু ক্রিকেটার অবসর নিয়েছেন। যাঁদের অবসরে মন বলেছে, ‘না যেও না/ রজনী এখনও বাকি’... কিন্তু তাঁরা? তাঁরা থামেননি।
সেটা ১৮৯৯। ট্রেন্টব্রিজে টেস্ট ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ইংল্যান্ডের। প্রথম টেস্টে প্রথম ইনিংসে ডব্লিউ জি গ্রেস মোটামুটি খেললেন। দ্বিতীয় ইনিংসে আউট হয়ে গেলেন শূন্য রানে। খেলার শেষে নির্বাচক কমিটির সভা। সিবি ফ্রাই তার সদস্য। সভায় প্রবেশ করতে যাচ্ছেন, গ্রেস তাঁকে ডাকলেন, ‘চার্লি, ম্যাকলারেন তো বেশ খেলছে, ওকে পরের টেস্টে খেলালে কেমন হয়?’  ফ্রাই বললেন, ‘সত্যি, ম্যাকলারেন টেস্টে স্থান পাবার যোগ্য।’ এরপর সভা বসল। সকলেই একমত, ম্যাকলারেন টেস্টে স্থান পাবার যোগ্য। তাঁকে স্থান দেওয়া হোক। একটু সন্দেহ ছিল। যদিও ফ্রাই ডাঃ গ্রেসকে জানিয়েছেন, ম্যাকলারেনের টেস্টে জায়গা পাওয়া উচিত। তবে কার বদলে? উত্তর এল, ‘ডব্লিউ জি গ্রেস!’ অসহায়ের মতো তাকিয়ে ফ্রাই। নিজের অজান্তেই তিনি গ্রেসের মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর করেছেন। গ্রেসই তা আদায় করেছেন।
সভা শেষ। মাথা নামিয়ে বেরিয়ে এলেন সিবি ফ্রাই। মন খুবই খারাপ। তিনি টেস্টে খেলেছিলেন কারণ ডব্লিউ জির তাঁর উপর আস্থা ছিল। আজ ফ্রাইয়ের কাস্টিং ভোটে ডাঃ গ্রেসের টেস্ট ক্রিকেট-জীবন শেষ হলো! ফ্রাই হঠাৎ চমকে উঠলেন। পিঠের উপর দুটি হাতের স্পর্শ। গমগমে গলায় গ্রেস বললেন, ‘দুঃখ কোরো না। আমি চলে যেতে চাইছিলাম। জ্যাকসনকে (পরবর্তীকালে বাংলা লেফটেন্যান্ট গভর্নর, বীণা দাশ যাঁর উপর গুলি চালিয়েছিলেন) আগেই বলেছিলাম, আর আমি খেলছি না।’ ফ্রাই বিস্মিত। গ্রেস বলে চলেছেন, ‘কাজটা কিন্তু তোমাকে দিয়ে করিয়ে নিলাম।’ ফ্রাই তাকালেন ডব্লিউ জি’র দিকে। বিরাট মুখ, ধূসর কালো এক মুখ দাড়ি, উজ্জ্বল গভীর দুটি চোখ এবং চোখে মুখে মাখানো কৌতুক। ফ্রাই চেয়ে রইলেন। মূর্তিটা অন্ধকারের মধ্যে সরে গেল। 
প্রথম টেস্ট খেলা ভারতীয় ক্রিকেটার রঞ্জির অবসর নিয়ে এ জি গার্ডিনার তো রূপকথা লিখেছিলেন। গার্ডিনার লিখছেন, ‘শেষ বলটি খেলা হয়ে গেছে। লর্ডসের চারপাশে গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডগুলো নির্জন আর বিষণ্ণ। আমরা ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছি। আমরা ক্রিকেটের রাজাকে বিদায় জানিয়েছি। খেলা আবার বসন্তে ফিরে আসবে। কিন্তু হায়, রাজা আর কখনো ফিরবেন না।...তিনি ফিরে যাচ্ছেন তাঁর নিজের মানুষের কাছে। সেই ছোট্ট রাজ্যে, যেটি তিনি রোমান্টিকভাবে পুনরুদ্ধার করেছেন। একজন ভালো লিবারেলের মতো শাসন করছেন। ছুটির ভিড় আর তাঁকে দেখতে পাবে না। কিন্তু তাঁর নাম ব্রিটিশ জনগণের লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবে, যাঁদের তিনি সুখের দিন আর সুন্দর স্মৃতি উপহার দিয়েছেন।’ 
ভিক্টর থমাস ট্রাম্পার। ট্রাম্পার যখনই তার প্রিয় এসসিজি’র মাঝখানে যাওয়ার পথে সবুজ তরবারির উপর সাহসের সাথে পা রাখতেন, তখনই জনতা করতালি দিতে এক হয়ে দাঁড়াতো। বলা হতো যে ঘাসের তলগুলিও মহান ব্যক্তির প্রণাম দেখে শ্রদ্ধার সাথে মাথা নত করে, সবুজের এক গর্জনকারী সমুদ্রে পরিণত হয়, প্রকৃতির নিজস্ব সংস্করণ মেক্সিকান ঢেউ।
১১৩ বছর আগে, ট্রাম্পার তার শেষ টেস্ট ইনিংস খেলেছিলেন। ১ মার্চ, ১৯১২। ১৯১১-১২ অ্যাসেজ সিরিজের পঞ্চম এবং শেষ টেস্ট, সিডনিতে। অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য ৩৬৩ রানের প্রয়োজন ছিল। নন-স্ট্রাইকার হিসাবে, সিড গ্রেগরি পরিস্থিতির গুরুত্ব সম্পর্কে চিন্তা করেছিলেন। সেই সময় সিডনি বার্নস অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম বলটি করার জন্য পাশ কাটিয়ে চলে যান।
ইংল্যান্ডের সেরা বোলার বার্নস সুইং এবং স্পিনের সংমিশ্রণে বল করেছিলেন। দ্রুত লেগব্রেক তার সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র। বার্নস প্রথম ইনিংসে ট্রাম্পারকে ৫ রানে আউট করেছিলেন। যা প্রায় নিখুঁত লেগব্রেক ছিল। শেষ ইনিংসে বার্নসের প্রথম বলটি ছিল ইয়র্কার। কিন্তু ট্রাম্পার বলটি লেগ স্টাম্পের দিকে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, কেবল তাঁর সামনের পা তুলে, পিছনের পায়ে সুন্দরভাবে ঘুরিয়ে, হাফ ভলিতে বলটি মাঠের বাইরে করে দেন। তারপর দুটি বল গালি দিয়ে চলে যায়। একটা মিড-অনে একটি সিঙ্গেল।  
ট্রাম্পার তখনও জানতেন না, এই দিনটি টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর শেষ দিন। ১৯১৫ সালে তার জীবন কেড়ে নেওয়া কিডনি রোগ নেফ্রাইটিস তখনও থাবা বসায়নি। সেদিন ট্রাম্পারের চোখ কেবল বলের দিকেই ছিল। অস্ট্রেলিয়া সেই ম্যাচটি হেরেছিল, কিন্তু ট্রাম্পার ঠিক ৫০ রান করেছিলেন। সেই বার্নসের বলে স্লিপে উলির হাতে ধরা পড়েছিলেন।
ডন ব্র্যাডম্যানের অবসর অবশ্য এরকম ছিল না। বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথম ইংল্যান্ড সফর। ৪০ তম জন্মদিন সেখানেই পালন করেন। এরিক হোলিসের বলে বোল্ড হয়ে ফিরবার আগে অবধি কেউই জানতেন না যে এটাই তাঁর শেষ ইনিংস। চার রান করলেই তিনি ১০০ গড় রাখতেন টেস্টে। সেটা হয়নি। এদিকে, খেলার শেষে তাঁর বক্তৃতা থেকে বোঝা যায় তিনি আর মাঠে নামবেন না। লেভসন–গাওয়ার তাঁকে সংবর্ধনা জানায়।  
সুনীল গাভাসকার খেলা ছেড়েছিলেন ফর্মের চূড়ায় থাকা অবস্থায়। কেউ বলতে পারেনি তাঁর ফর্ম খারাপ। শেষ টেস্টে ৯৬ করেছিলেন এক অত্যন্ত বাজে উইকেটে। পরবর্তীকালে গায়ক কুমারপ্রসাদ লিখেছিলেন এরপর গাভাসকারকে কালীঘাটের ট্রামলাইনে ব্যাট করতে দিলে সেখানেও সেঞ্চুরি করবেন। শেষ একদিনের ম্যাচের ঠিক আগের ম্যাচে গায়ে জ্বর নিয়ে ৮২ বলে জীবনের একমাত্র একদিনের আন্তর্জাতিক শতরানটি করেন। লর্ডসে দ্বি-শতবার্ষিকী টেস্টে ১৮৮ তাঁর শেষ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট শতরান, শেষ ম্যাচও বটে।
তবে প্রায় লোকচক্ষুর আড়ালে অবসর নিতে হয়েছিল গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথকে। ১৯৮৩ সালের পর টেস্টে তাঁকে আর দেখা যায়নি। বিশ্বকাপ দলেও তিনি ছিলেন না। তবে দল জিতে দেশে ফেরার সময় বিমানবন্দরে তাঁর ট্রলির উপর উঠে বিশ্বজয়ী দলের ছবি তুলছিলেন সংবামাধ্যমের লোকজন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আরেক কিংবদন্তী মনসুর আলি খান পাতৌদি। তাঁকে বিশ্বজয়ী দল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি একরাশ অবজ্ঞায় মুখ ফিরিয়ে নেন।
সচিন তেন্ডুলকরের অবসর একই রকম  উন্মাদনা তৈরি করেছিল ভারতে। সেই সচিন যার জন্য থেমে যেত ট্রেন। যিনি ব্যাট ধরলে উৎকণ্ঠায় ভুগত গোটা ভারত। যাঁর করা প্রতিটি রান আসলে আসমুদ্র হিমাচলের করা রান। তিনি ব্যাট করলে ১০০ কোটি ভারতীয় একসঙ্গে ব্যাট করত। সিকি শতাব্দী তাঁর আন্তর্জাতিক কেরিয়ার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত দীর্ঘ আন্তর্জাতিক কেরিয়ার ক্রিকেট দুনিয়ার কারও নেই।
নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে ধীরে ধীরে দূরদর্শন সাধারণ ভারতীয়ের ঘরে প্রবেশ করে, যদিও তখন মেট্রো শহরগুলো বাদ দিয়ে কোথাও দুটোর বেশি চ্যানেল ছিল না। সেই সময় দুনিয়ায় বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে গেছে। (১) সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন। (২) পূর্ব ইওরোপে কমিউনিস্ট ও ওয়ার্কার্স পার্টি পরিচালিত সরকারগুলোর পতন। (৩) বার্লিনের প্রাচীরের পতন। (৪) ভারতের অর্থনৈতিক সঙ্কট। (৫) ভারতে মুক্তবাজার। (৬) উপসাগরীয় যুদ্ধ। ১৯৮৯ সালে সচিন যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসেন তখন ভারতে টেলিভিশন চ্যানেল দু’টো। ১৯৯৬ বিশ্বকাপের সময় টেলিভিশনের চ্যানেলের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়ে গেছে। 
এর মাঝখানে সচিন তেন্ডুলকর— ব্যাঙ্ককর্মী মা ও অধ্যাপক বাবার সব থেকে ছোট ছেলে, কলানগর হাউজিং এস্টেটের সাচ্চু বা তেন্ডলা, সারদাশ্রমের ছাত্র, মাধ্যমিক বোর্ডের পরীক্ষায় প্রথমবার ফেল করেন ছয় নম্বরের জন্য, তখনই টেস্টে তাঁর শতরান হয়ে গেছে। একবার ভাবুন! নয়া উদারবাদের হাতছানি যখন ক্রমবর্ধমান, তখন ভারতে একজন সাধারণ ঘরের ১৮-১৯ বছর বয়সি ছেলে ঠিক কী করে? উচ্চমাধ্যমিক পড়ছে, টিউশন বা কোচিংয়ে যাচ্ছে। খেলার সঙ্গে যুক্ত থাকলে ক্লাবে যাচ্ছে। অনুশীলনে যাচ্ছে। কলেজে পড়ছে, হয়ত ছাত্র রাজনীতি করছে। কলকাতায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বা বড় ফুটবল ম্যাচ হলে খেলা দেখার টিকিট খুঁজছে। সামনে কোনও টেস্ট ক্রিকেটার পেলে তাঁর অটোগ্রাফ নেওয়ার চেষ্টা করছে। 
আর ১৯ বছর বয়সে সচিনের তিনটি টেস্ট সেঞ্চুরি! সবকটি ভারতের সঙ্কটের সময়— তাও বিদেশে, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকায়। তারপর ওদিকে ১৯৯১-৯২সালে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের কান্ডারি, আবার এদিকে হিরো কাপের সেমি ফাইনালে। 
১৯৯৬-২০০১ ভারতে টিভি সম্প্রচারে এল বিরাট পরিবর্তন। প্রচুর টিভি চ্যানেল। সস্তার কেবল কানেকশন। ঘরে ঘরে কমদামি কালার টিভি এবং ক্রিকেটের সর্বগ্রাসী প্রচার। এর অন্যতম ভিত্তি ছিল সচিন তেন্ডুলকরের পারফরম্যান্স। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের মধ্যবর্তী পর্বে সচিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১১,০০০ এর বেশি রান করেন (টেস্ট এবং ওয়ান ডে ইন্টারন্যাশনাল মিলিয়ে)। ৪০টি শতরান সহ। এর সবটা দেখেছে ভারতীয়রা। 
সচিন একদিকে যেমন নয়া উদারবাদের অন্যতম অ্যাম্বাসাডর, তেমনই একটা গোটা প্রজন্মের শৈশব-কৈশোর-যৌবনের স্মৃতি। তাই যেদিন শেষ ইনিংসে তিনি ডারেন সামির হাতে ক্যাচ  দিলেন, সামি কিছুক্ষণ ক্যাচ ধরে হাঁটু গেড়ে বসেছিলেন। শরীরের ভাষা বলে দিচ্ছিল যে নিজেকে তাঁর অপরাধী বলে মনে হয়েছিল। সেদিন সচিনের সঙ্গে মাঠ ছেড়েছিল আশি-নব্বই দশকে জন্মানো কয়েক কোটি ভারতীয়দের শৈশব ও কৈশোর। সেদিন অনেকেই জীবনে প্রথম মাথার চুল বা দাড়িতে সাদা রঙের ছোঁয়া দেখতে পেয়েছিলেন। এটাই সচিনের ক্রিকেট জীবনের ইম্প্যাক্ট। 
বিরাট কোহলির বিষয়টা তার থেকে পুরোপুরি আলাদা নয়। বরং বহুলাংশে একই। মিলেনিয়াম জাতকদের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন যদি কারও জন্য তৈরি হয় তবে তা বিরাট কোহলি। তাঁরা দেখবে না যে শেষ একবছর প্রথম ইনিংসে বিরাটের গড় ৭! তাঁরা জানতে চাইবে না কোভিড পরবর্তী সময়ে বিরাটের কেন টেস্টে মাত্র ৩২ গড়। তাঁরা শুধু ভাববে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৬০ রান তাড়া করার মূল কারিগরকে। তাঁদের অজস্র সুখ স্মৃতি দেওয়া বিরাট। গাভাসকার, সচিনের উত্তরসূরি। ভারতের হয়ে চার নম্বরে নামতেন একসময়ে গুন্ডাপ্পা বিশ্বানাথ। তাঁর লেটকাট ছিল কাটলেটের থেকেও উপাদেয়। ভারতের হয়ে দীর্ঘ ১৭ বছর ওপেন করেছেন সুনীল গাভাসকার। বিশ্বনাথের দু’বছর বাদে অভিষেক হয় সানির। সানির বিদায়ের দু’বছর বাদে আসেন সচিন। সচিন থাকতে থাকতেই বিরাটের আগমন। বিরাটের বিদায়ে সেই স্থান পূর্ণ করার যোগ্য ভারত কবে পাবে জানা নেই কারও।
প্রত্যেক দিনের কর্মব্যস্ততা, হাজারটা সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্যে ক্রিকেট ভারতীয়দের কাছে এক ঝলক টাটকা বাতাস। যদিও আজ তা কর্পোরেটদের করায়ত্তে। তারপরও সেখানে যাঁরা আমাদের আনন্দ দিয়েছেন তাঁদের ছাড়তে মন চায় না। তাঁরাও যেন যাওয়ার সময় বলে যান ... ‘কোনোদিন কর্মহীন পূর্ণ অবকাশে/ বসন্তবাতাসে/ অতীতের তীর হতে যে রাত্রে বহিবে দীর্ঘশ্বাস,/ ঝরা বকুলের কান্না ব্যথিবে আকাশ,/ সেই ক্ষণে খুঁজে দেখো– কিছু মোর পিছে রহিল/ সে তোমার প্রাণের প্রান্তে; বিস্মৃতি প্রদোষে/ হয়তো দিবে সে জ্যোতি,/ হয়তো ধরিবে কভু নাম-হারা স্বপ্নের মুরতি।’

Comments :0

Login to leave a comment