বসন্তের সাথে নবজীবনের ধারণা জড়িয়ে। একটা ঋতু থেকে আরেকটা ঋতুতে প্রবেশ হয় বসন্তকালের মধ্যে দিয়ে। শীতের প্রকোপ অতিক্রম করে নতুন প্রাণের স্পন্দন অনুভব করা যায় বসন্তে। ফুল ফোটে, গাছের নতুন পাতা বের হয়।
বিশ্বে উত্তর গোলার্ধে বসন্তের আগমন উদযাপন করা হয়, যাকে বলা হয় 'ভার্নাল ইকুইনক্স'। এই দিন সূর্য আকাশের বিষুবরেখা অতিক্রম করে উত্তর দিকে ঢলে পড়ে। দিন এবং রাতের সময়কাল সমান, অর্থাৎ ১২ ঘন্টা হয়।
ভারতেও বসন্ত উদযাপন করা হয় হোলি বা দোলযাত্রার মধ্যে দিয়ে। এদিন একে অপরের গায়ে রং লাগিয়ে আনন্দ উৎসব পালন করে থাকে ভারতীয়রা। দোলের আগের দিন রাতে 'নেড়া পোড়া' উৎসব পালন করা হয়। শুকনো গাছপালা জোগাড় করে তাতে আগুন লাগিয়ে এই উৎসব পালন করা হয়। এর পেছনে বৈজ্ঞানিক তাৎপর্য হল, এর মাধ্যমে বাতাসের সমস্ত জীবানুকে ধ্বংস করা হয় যাতে আমরা রোগমুক্ত গ্রীষ্মে পা রাখতে পারি।
থাইল্যান্ডের 'সংক্রান' বলেও অনুরূপ একটা উৎসব পালন করা হয় যেখানে লোকজন একে অপরকে জল ছিটিয়ে দেয়। বিশ্বের যতগুলো উদ্ভট বসন্ত উৎসব আছে, তার মধ্যে অন্যতম এটা।
জাপানে বসন্তকে স্বাগত জানানো হয় 'চেরি ব্লসম' উৎসবের মাধ্যমে। এই সময় জাপানে মনোরম সব ফুল ফুটে গোটা দেশ একটা বার্বিল্যান্ডে পরিণত হয়। এই উৎসব প্রকৃতপক্ষে বিশের সবচেয়ে সুন্দর বসন্ত উৎসবগুলোর মধ্যে একটা। সমগ্র এপ্রিল মাস জুড়ে জাপানিরা এই উৎসব পালন করে হানামি, সাকুরা প্রভৃতি গাছের নিচে চড়ুইভাতি করে।
সুইজারল্যান্ডের লোকেরা শীতের শুষ্কতা এবং ঝড়া পাতার মরসুম শেষ হওয়ার জন্য এতটাই খুশি হয় যে তারা 'স্নোম্যান'এর মূর্তি পোড়ানোর মাধ্যমে বসন্তের সূচনা উদযাপন করে। এটি ১৬ শতকের পুরোনো একটা ঐতিহ্য। "Böögg" নামক দৈত্যাকার তুষার মানব শীতের শেষের প্রতিনিধিত্ব করে এবং তা পুরোনো কাপড় এবং আতশবাজি দিয়ে তৈরি করা হয়। সুইসরা বিশ্বাস করে যে এটি যত দ্রুত জ্বলবে, সুইজারল্যান্ডে গ্রীষ্ম তত বেশি রৌদ্রোজ্জ্বল এবং উষ্ণ হবে। দুই দিনের উৎসবে ভোজ, কুচকাওয়াজ এবং কমেডি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় যা বসন্ত উৎসবের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ঐতিহ্যগুলির মধ্যে একটা।
Comments :0