টানা দু’বার বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলার হাতছানি ফ্রান্সের সামনে। আর একধাপ দূরে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ফাইনাল খেলতে হলে টপকাতে হবে শক্ত বিরোধিতা। প্রতিপক্ষ অপ্রতিরোধ্য মরক্কো। দিদিয়ের দেঁশর মতো কোচকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে আফ্রিকার দেশটি। তবুও তাঁকে দেখে বোঝার উপায় নেই তিনি চাপে আছেন। শান্ত আছেন। নিজের মতো দলকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছেন। সতর্ক করতে ভোলেননি। নকআউট ম্যাচ একটা ভুলে সব শেষ হয়ে যেতে পারে।
জিততে হলে তো সমাধানের রাস্তা খুঁজে বের করতেই হবে। যেনতেন প্রকারেণ। মরক্কো ডিফেন্স ভাঙতে কোন পথে হাঁটবেন দেঁশ? এটাই হলো দেখার বিষয়। সাধারণত সাংবাদিক সম্মেলনে এসে কোনও কোচই তাঁর পরিকল্পনার কথা খোলাখুলি বলেন না। দেঁশও বলেননি। শুধু বলেছেন, ‘আমাদের এই সমস্যার সমাধানের রাস্তা বের করতে হবে। মরক্কো দারুণ ডিফেন্স করছে। এখনও অবধি কোনও প্রতিপক্ষই মরক্কোর রক্ষণ ভেদ করতে পারেনি। মরক্কোকে শুধু রক্ষণের দিক থেকে দেখলেই হবে না, আক্রমণভাগকেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে। মরক্কো সবদিক থেকেই ভালো। ওঁদেরকে পর্যবেক্ষণ করেছি ভালো মতো।’ অন্যান্য দলের চেয়ে দেঁশর কিছুটা স্বস্তিতে থাকার একটা কারণ রয়েছে। সেটা হলো, তাঁর দলে কিলিয়ান এমবাপের মতো একজন পার্থক্য গড়ে দেওয়ার মতো ফুটবলার রয়েছে। তাছাড়া এমবাপেকে যোগ্য সঙ্গত করার জন্য রয়েছেন অলিভিয়ের জিরু, আন্তোয়ান গ্রিজম্যান, ওউসম্যান ডেম্বেলেরা। যাঁদের নিয়ে আবার সতর্ক মরক্কো কোচ ওয়ালিদও। মরক্কো ডিফেন্স ভাঙার ক্ষমতা যদি কারোর থাকে, সেটা ফ্রান্সেরই। ফুটবল যুক্তি তো তাই বলে! আবার ফুটবলও একাধারে অনিশ্চয়তার খেলা, কখন হিসাব নিকেশ বদলে যাবে কেউ বলতে পারেন না।
ফ্রান্সের ডিফেন্স ভেঙে হেসেখেলে মরক্কোর ফুটবলাররা গোল করে চলে যাবেন, ব্যাপারটা অত সহজও নয়। ফ্রান্সের ডিফেন্সও যথেষ্ট জমাট। চলতি বিশ্বকাপে ফ্রান্স পাঁচ ম্যাচে পাঁচ গোল খেয়েছে। এই পরিসংখ্যান দেঁশকে ভরসা দিচ্ছে। রাফায়েল ভারানেরা যথেষ্ট অভিজ্ঞ। ফ্রান্সকে এই ম্যাচে খেলতে হবে একঝাঁক আরব সমর্থকদের সামনে। চাপের ম্যাচ জিততে প্রয়োজন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন। দেঁশ জানিয়েছেন, ‘অভিজ্ঞতা তো রয়েছে। তবে আমরা ম্যাচ এবং পরিবেশ দুইয়ের জন্যই প্রস্তুত।’
দেঁশ ভরসা করছেন আন্তোয়ান গ্রিজম্যানের উপর। গত বিশ্বকাপেও জ্বলে উঠেছিলেন। সেমিফাইনালে তাঁর কর্নার থেকে হেডে গোল করছিলেন স্যামুয়েল উমতিতি। এবারও দুর্ধর্ষ ছন্দে আছেন। দলটাকে খেলাচ্ছেন। মরক্কোর বিরুদ্ধে গ্রিজম্যানের উপর নির্ভর করছে সবকিছু। তিনি আটকে গেলে বিপদে পড়তে পারে ফ্রান্স। মঙ্গলবার গ্রিজম্যান প্রসঙ্গে দেঁশ’র মন্তব্য, ‘খেলা চালনা করার দক্ষতা রয়েছে গ্রিজম্যানের। এবার কিছু অন্য স্টাইলে খেলছে, তবুও ভালো খেলছে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে দশ বছর ধরে খেলে চলেছে।
গ্রিজম্যানকে আমার আত্মবিশ্বাসী লাগছে। ড্রেসিংরুমেই হোক বা মাঠে দলকে সর্বদা প্রেরণা জোগাচ্ছে।’ মরক্কোর বিরুদ্ধে দলকে কাউন্টার অ্যাটাকিং ফুটবলই খেলাতে চান। কার্ড সমস্যা নেই। রাবিও, উপামেকামো, চুয়োমেনির শারীরিক সমস্যা ছিল। যা খবর, এই মুহূর্তে তিনজনই সুস্থ আছেন। খেলবেনও। দেঁশ’র রিজার্ভ বেঞ্চ শক্তিশালী। বিকল্প প্রচুর। ইব্রাহিমা কোনাতে, ইউসুফ ফোফানারা তৈরি। তবে যাই হোক, মরক্কো কাঁটা উপড়ে দিয়ে ফ্রান্সের পাখির চোখ ফাইনালে।
Comments :0