Khalida Jarrar Palestine

‘মানুষ মানুষের সঙ্গে এই আচরণ করে না’, ইজরায়েলের জেল থেকে বেরিয়ে খালিদা

জাতীয়

প্রথম যখন বন্দি হয়েছিলেন আর এখন খালিদা জারার। ছবি সোশাল মিডিয়া থেকে।

দফায় দফায় জেলে ভরেছে ইজরায়েলের সেনা। কোনও বৈধ অভিযোগ ছাড়াই ২০১৮ থেকে বারবার জেলে থাকতে হয়েছে খালিদা জারারকে। প্যালেস্তাইনের মুক্তি আন্দোলনের এই কর্মী সদ্য ছাড়া পেয়ে বলেছেন, ‘‘ইজরায়েলের জেল জঘন্য। কোনও মানুষ আরেকজন মানুষের সঙ্গে এমন ব্যবহার করতে পারে না।’’
ইজরায়েলের সঙ্গে গাজার প্রতিরোধী সংগঠন হামাসের যুদ্ধবিরতি চালু হয়েছে গত সপ্তাহ থেকে। গাজাকে ধ্বংস করে ইজরায়েল এখন তাণ্ডব চালাচ্ছে প্যালেস্তাইনেরই আরেক অংশ ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে। কিন্তু যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে হামাস এবং ইজরায়েলকে বন্দি বিনিময় করতে হচ্ছে।
খালিদা জারারের মতো ইজরায়েলের জেলে বন্দি প্রায় হাজার প্যালেস্তিনীয়কে আপাতত মুক্তি দিতে বাধ্য হচ্ছে ইজরায়েল। 
কোনও অভিযোগের আইনি ওয়ারেন্ট ছাড়াই প্যালেস্তাইনের যে কোনও বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করতে পারে ইজরায়েল। নিয়মিত এমন হাজার হাজার প্যালেস্তিনীয়কে হয় বন্দি করা হয়, নয়তো গুলি করে হত্যা করা হয়। সংবাদমাধ্যমের বড় অংশ হামাসের হাতে বন্দি ইজরায়েলের বাসিন্দাদের  দশা নিয়ে খবর করছে। প্যালেস্তাইনের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনরত বিভিন্ন অংশের প্রশ্ন এমন বছরের পর বছর সহস্রাাধিক প্যালেস্তিনীয় বন্দিদের নিয়ে এই সংবাদমাধ্যম নীরব কেন।  
জারার প্যালেস্তাইনের বামপন্থী রাজনৈতিক দল পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্যা লিবারেশন অব প্যালেস্তাইন (পিএফএলপি)’র নেত্রী। ২০১৫-তে তাঁকে বন্দি করার কারণ শুনলে বোঝা যাবে প্যালেস্তাইনে ইজরায়েলের আগ্রাসনের চেহারা কেমন। সামরিক আদালত প্রশ্ন তুলেছিল, কারণ জারার সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতেন, লেখালেখি করতেন। হাঁটতেন মিছিলে। সেজন্য তাঁকে চিহ্নিত করা হয় ‘রাষ্ট্রের পক্ষে বিপজ্জনক প্যালেস্তিনীয়’ হিসেবে। 
রামাল্লায় জারার বলেছেন, ‘‘গত ছ’মাস একেবারে একা বন্দি করে রাখা হয়েছিল আমার মতো অনেককে। ছ’মাস পর কোনও মানুষের সঙ্গে কথা বলছি। জেলে নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলতাম।’’
সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য নীলোৎপল বসু খালিদা জারার প্রসঙ্গেই বলেছেন, ‘‘জায়নবাদী ইজরায়েলের জেলে নাৎসীদের মতো আচরণ করে। জারার প্যালেস্তাইনের আইনসভার সদস্য ছিলেন। তাঁর সঙ্গেও এমন আচরণ। এমন ঘরে তাঁকে রাখা হয়েছিল যে শ্বাস পর্যন্ত ভালোভাবে নেওয়া যায় না।’’
জারার বলেছেন, ‘‘জেলে খারাপ খাবার দেওয়া হয়, এতো সামান্য বিষয়। চরম অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় প্যালেস্তিনীয়দের তুলে নিয়ে রাখা হয়। চালানো হয় নিপীড়ন। আবার প্রয়োজনে জেলে টিয়ার গ্যাসও ব্যবহার করা হয়।’’ 
জারারে সঙ্গেই মুক্তি দেওয়া হয়েছে আবাল সাদাতকে। তিনিও পিএফএলপি’র নেত্রী। সাদাতের স্বামী এবং দলের সাধারণ সম্পাদক ২০০২ থেকে বন্দি ইজরায়েলের জেলে। আবাল সাদাত বলেছেন, ‘‘এই মুক্তির মেয়াদ কতটা তা নিয়ে সংশয় আছে। ফের ইজরায়েল আমাদের সকলকে জেলে ঢোকাতে চাইবে।’’ 
ইজরায়েলের এভাবেই আগ্রাসন চালাবে কেন, এই প্রশ্ন ফের তুলছেন বামপন্থী দলটির এই নেত্রীরা।

Comments :0

Login to leave a comment