Md Salim Bardhaman

আন্দোলনে আছে, থাকবেও বামপন্থীরা : সেলিম

রাজ্য

শুক্রবার বর্ধমানে সাংবাদিক বৈঠকে মহম্মদ সেলিম ও সৈয়দ হোসেন। শঙ্কর ঘোষাল

আর জি কর হাসপাতালে ধর্ষণ-খুনের বিচারের জন্য মানুষকে রাস্তায় নামতে দেখে দক্ষিণপন্থীরা খুবই রাগ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন উৎসবে ফেরাতে। কিন্তু মানুষের মন খুব ভারী, তাঁরা বিচার চান। আদালতের মধ্যে ও আদালতের বাইরে বিচারের জন্য এই লড়াই চলবে। শুক্রবার বর্ধমানে এক সাংবাদিক বৈঠকে একথা বলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সেলিম বলেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ব্যর্থতা থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছেন। বামফ্রন্টের সময়ে জুন মাস থেকেই প্রত্যেক বছর বন্যা মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া হতো।
সেলিম বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য একই পথেই চলছে প্রতিবাদীদের জেলে ঢোকানো হচ্ছে। যেমন এখানে কলতানকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হলো। বিজেপি’র রাজ্যেও যারা দাঙ্গা করছে, গাড়ি, বাড়ি পোড়াচ্ছে তাদের না ধরে প্রতিবাদীদের জেলে পোড়া হচ্ছে। ওমর খালিদকে ৪ বছর ধরে জেলে পুরে রাখা হয়েছে। 
সেলিম বলেন, আমরা বামপন্থীরা ও গণতান্ত্রিক মানুষ প্রথম থেকেই বিচারের দাবিতে আন্দোলনের পাশে ছিলাম এবং শেষ পর্যন্ত থাকব।  
এদিন মহম্মদ সেলিম বীরভূমের অনুব্রতের জামিন সম্পর্কে বলেছেন, মোহন ভাগবত তো বলেছেন, এই সরকার যা কাজ করবে তাকে আমরা সমর্থন করব।  যাহা নবান্ন তাহাই ছাপ্পান্ন। এখন দেখতে হবে জেল থেকে ঘুরে এসে শুভেন্দুর মতো বিজেপি হবে, না তৃণমূলে থাকবে। 
ঘাটালে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন তিনি ডিভিসি’র সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করবেন। এ প্রসঙ্গে মহম্মদ সেলিম বলেন, এতে কোন কাজ হবে না। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ব্যর্থতা থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছেন। তিনি ২০২১ সালেও এমন চিঠি দিয়েছিলেন। তার পরে ৩ বছর তিনি কেন বসে ছিলেন? এখন বন্যার জল ঢুকেছে, ঘরবাড়ি ভাঙছে, এখন চিঠি দিতে হলো? মানুষ বিব্রত, মানুষ আক্রান্ত, তখন চিঠি লিখতে হলো। বামফ্রন্টের সময়ে জুন মাস থেকেই প্রত্যেক বছর বন্যা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতো। ত্রিস্তর গ্রামপঞ্চায়েত, সেচ দপ্তর, প্রশাসনিক বৈঠক করে  কোথায় বাঁধ নির্মাণ করতে হবে, কোথায় বাঁধ দুর্বল, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হতো। এই রাজ্য বন্যা প্রবন। দামোদর ভ্যালি গঠনের সময় থেকে ডিভিসি আইন অনুযায়ী ঝাড়খন্ড, পশ্চিমবঙ্গ, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দায়বদ্ধ। কিন্তু রাজ্য সরকারের কী ভূমিকা এখানে? পার্লামেন্টেও তৃণমূল ও বিজেপি’র সাংসদরা বন্যা নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেনি। এখন তিনি বিদ্রোহী।  
সেলিম বলেছেন, নদীর জলবহন ক্ষমতা কমেছে, বালি চুরি করেছে অবৈজ্ঞানিকভাবে। এটা সরকারের ব্যর্থতা। তার থেকে তিনি দায় এড়াতে পারেন না। বন্যার প্রতিরোধে তিনি কি প্রস্তুতি নিয়ে ছিলেন? সরকার কেন প্রস্তুতি নিল না। 
ঝাড়খন্ড সীমানে গাড়ি আটকানো প্রসঙ্গে মহম্মদ সেলিম এদিন বলেছেন, এটা একটা দক্ষিণপন্থী কাজ। মমতা ব্যানার্জি চরম দক্ষিণপন্থী। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, তাঁর ব্যর্থতা ঢাকততে দুই প্রতিবেশী রাজ্যের মধ্যে বিরোধ তৈরি করছেন। 
এক ব্যবসায়ীর দুবার অপহরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে এক তৃণমূলের কাউন্সিলর। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, একজনকে দু’বার অপহরণ করেছে এটা তৃণমূলের রেকর্ড। যেদিকে অপরাধ দেখবে তৃণমূলকে পাবে। 
সেলিম বলেন, বন্যা হলেই ত্রিপল, চাল, আটা চুরি। এটা একটা উৎসব। একে বলে রিলিফ উৎসব। 
সেলিম এদিন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, চন্দ্রনাথ সিনহা, স্বপন দেবনাথদের হুমকি প্রসঙ্গে বলেছেন যে  স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, লাইব্রেরি উদ্বোধনে এদের নাম আসে না। এরা হুমকি দিচ্ছে, উসকানি দিচ্ছে নিজেরা ভয় পেয়েছে বলে।

Comments :0

Login to leave a comment