ভাঙড়ের বিধায়ক এবং আইএসএফ নেতা নৌশাদ সিদ্দিকি ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকবেন পুলিশ হেপাজতে। পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁর জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করা হয়েছে আদালতে। সিদ্দিকির পাশাপাশি আইএসএফ’র ১৮ কর্মীর জামিনের আবেদন খারিজ করেছে ব্যাঙ্কশাল কোর্ট।
ভাঙড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের হামলার কড়া নিন্দা করেছেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। পাশাপাশি তিনি সমালোচনা করেছেন পুলিশেরও। চক্রবর্তী বলেছেন, পুলিশের সামনেই শনিবার ভাঙড়ে হামলা হয়েছে আইএসএফ কর্মীদের ওপর। দলদাস পুলিশ নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তিনি মনে করিয়েছেন যে এক মাস আগেই সিপিআই(এম)’র মিছিলে মারাত্মক আক্রমণ চালিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস।
পুলিশ এবং তৃণমূল আইএসএফ সমর্থকদের ভূমিকাকে ‘বিনা প্ররোচনায় তাণ্ডব’ বলছে। এই বক্তব্য খারিজ করেছেন চক্রবর্তী।
তিনি বলেছেন, হাতিশালে হামলা হলো, অথচ পুলিশ চুপ করে দাঁড়িয়ে দেখল। তৃণমূলের হামলাবাজদের ধরল না। এ তো সরাসরি প্ররোচনা।
রবিবারই ভাঙড়ে বোমা পাওয়া যায়। তৃণমূল নেতা এবং বহু হামলার মাথা আরাবুল ইসলামের বাড়ির কাছেই মেলে ব্যাগভর্তি বোমা। কিন্তু গ্রামবাসীরা খবর দিলেও বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়নি।
শনিবার দলের প্রতিষ্ঠা দিবসকে কেন্দ্র করে ধর্মতলায় সমাবেশের ডাক দেয় আইএসএফ। তার প্রস্তুতির সময় ভাঙড়ে শুক্রবার রাত থেকে আইএসএফ কর্মীরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ জানান। পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। শনিবার নিউটাউনের আগে হাতিশালে আইএসএফ কর্মীদের ছোট ম্যাটাডোরে হামলা চালায় তৃণমূল। হামলার ঘটনায় তৃণমূলের আরাবুল ইসলামের যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠে।
ভাঙড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ আছড়ে পড়েছে। তৃণমূলের তিনটি দপ্তরে আগুন লেগেছে। এরপরই সক্রিয় হয় পুলিশ। বিরোধী দলের কর্মীদের জমায়েতে বাধা দেয় কলকাতার ধর্মতলায়। প্রতিবাদ জানান আইএসএফ কর্মীরা। নির্বিচারে চলে কাঁদানে গ্যাস। চালানো হয় লাঠি। শনিবার রাতে শতাধিক আইএসএফ কর্মীকে ফেরার পথে আটক করে পুলিশ। তার আগেই ধর্মতলা থেকে টেনে হিঁচড়ে দলের নেতা এবং বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকিকে লালবাজারে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।
চক্রবর্তী বলেন, ভাঙড়ের পরিস্থিতি দেখাচ্ছে কোন রাজ্যে আমরা রয়েছি। বামপন্থীদের কর্মসূচি করলে হামলা তো আছেই। বিরোধী কাউকেই রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে দেবে না।
শনিবার নৌশাদ সিদ্দিকির গাড়ি ভাঙা হয় ভাঙড়ে। শনিবারই সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছিলেন যে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের অধিকার রয়েছে আইএসএফ’র। নির্বাচিত বিধায়কের গাড়ি ভাঙা হয়েছে।
এদিন নৌশাদ সিদ্দিকি আদালত থেকে পুলিশের হেপাজতে যাওয়ার পথে বলেছেন আন্দোলন চলবে।
রবিবার সকালেই ভাঙড়ের কাশীপুর থানায় উত্তর গাজিপুরে ব্যাগভর্তি মোমা পাওয়া গিয়েছে। অথচ সন্ধ্যা পর্যন্ত পৌঁছায়নি বোমা নিষ্ক্রিয়করণ স্কোয়াড। সন্ধ্যে নামার পর তাঁরা এলাকায় পৌঁছে জানান তখন বোমা নিষ্ক্রিয় করার কাজ করা সম্ভব নয়।
Comments :0