প্রবন্ধ — মুক্তধারা, বর্ষ ৩
বিশ্ব নার্স দিবস
রাজ মন্ডল
বিশ্বজুড়ে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে যে কয়েকটি পেশা নিরলসভাবে কাজ করে, তার মধ্যে নার্স পেশাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোগীর সেবা, যত্ন এবং মানসিক সাহচর্য প্রদান—সবকিছুর মধ্য দিয়েই নার্সরা সমাজে এক অনন্য ভূমিকা পালন করে চলেছেন। এই পেশার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই প্রতিবছর ১২ মে বিশ্ব নার্স দিবস পালিত হয়। ১২ মে তারিখটি বেছে নেওয়া হয়েছে আধুনিক নার্সিং পেশার প্রবর্তক ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মদিন হিসেবে। তিনি ক্রিমিয়ান যুদ্ধে আহত সৈন্যদের সেবা করে নার্সিং পেশার ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। তাঁর আদর্শ অনুসরণ করে আজকের নার্সরা বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যখাতে অমূল্য অবদান রাখছেন। ১৯৭৪ সালে এই দিনটি পালনের সূত্রপাত হয়েছিল।
আমাদের জীবনে নার্সদের ভূমিকা ওপড়ীশীম। নার্সরা শুধুমাত্র ওষুধ প্রদান বা চিকিৎসকের সহকারী নন; তারা একজন রোগীর সুস্থতার যাত্রায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহচর। রাত-দিন এক করে, ক্লান্তিহীনভাবে তারা রোগীদের পাশে থাকেন। বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারির সময় তাদের ত্যাগ ও সাহসিকতা ছিল চোখে পড়ার মতো। বর্তমান সময়ে চিকিৎসকের থেকে চিকিৎসা পরিষেবার মধ্যে নার্সদের ভূমিকা অনেকটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ রোগীদের প্রতিমুহূর্তে নজরদারি করা এবং যাবতীয় প্রয়োজন মেটাবার কাজটা করেন এই সেবাব্রতীরাই। যে কোন হাসপাতালে সিস্টারদের স্নেহময় স্পর্শে অসুস্থ মানুষ তাদের রোগব্যাধির হাত থেকে সেরে ওঠেন।এই মহান পেশার অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। দীর্ঘ সময় কাজ, মানসিক চাপ, উপযুক্ত সম্মান ও বেতন ঘাটতির কারণে অনেকে নিরুৎসাহিত হন। তবে সমাজ ও সরকারের উচিত নার্সদের সঠিক স্বীকৃতি ও মর্যাদা প্রদান করা, যাতে তারা আরও আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে পারেন। আধুনিক যুগে পেশা হিসেবে নার্সিং একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্মক্ষেত্র যেখানে শিক্ষিত এবং পরিশ্রমী মহিলারা স্বনির্ভর জীবন যাপন করতে পারেন।
বিশ্ব নার্স দিবস শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি নার্সদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ। তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এবং তাদের কাজের পরিবেশ উন্নত করে আমরা একটি স্বাস্থ্যবান ও মানবিক সমাজ গঠন করতে পারি।
নতুন বন্ধু / কল্যাণ নগর বিদ্যাপীঠ
Comments :0