Panihati

পানিহাটির তরুণীকে নিগ্রহের ঘটনায় গ্রেপ্তার স্বেতা খান

রাজ্য


পানিহাটির তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত আরিয়ান খানকে গ্রেপ্তার করল হাওড়া সিটি পুলিশ। তদন্তকারী আধিকারিকরা কলকাতার গলফগ্রীন থেকে গ্রেপ্তার করে। বুধবার সকাল ১১ টা নাগাদ গলফগ্রীন  থানা এলাকার প্রিন্স গোলাম মহম্মদ রোডের একটি বাড়ি থেকে অভিযুক্ত আরিয়ান খানকে গ্রেপ্তার করে হাওড়া সিটি পুলিশের তদন্তকারী অফিসারেরা। কলকাতার অন্য জায়গা থেকে আর এক অভিযুক্ত নাবালিকা জোঁয়া খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে এদিন সন্ধ্যার পর আলিপুর থেকে মূল অভিযুক্ত শ্বেতা খানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিন বিকেলে অভিযুক্ত শ্বেতা খানের ডোমজুড়ের বাড়িতে তল্লাসি চালায় বাঁকড়া ফাঁড়ির পুলিশ। আদালতের অনুমতি নিয়েই এদিন বাড়িটি সিল করে দেয় পুলিশ। যদিও সেই সময় বাড়িতে কেউ ছিলেন না। 

এদি দুপুরে ধৃত আরিয়ান খানকে ডোমজুড় থানায় নিয়ে আসা হয়। হাওড়া আদালতে তোলে পুলিশ। বিচারক নয় দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার মূল অভিযুক্ত শ্বেতা খানের দুই ভাই ও বুধবার সকালে তার মাকে আটক করে ডোমজুড় থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডোমজুড় থানার পুলিশ। এদিন ডোমজুড় থানায় এসিপি সাউথ সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘শ্বেতা খান ও আরিয়ান খান গত শনিবার পালিয়ে যাবার পর থেকে পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু করে। মঙ্গলবার পাঁচটি স্থানে তল্লাশি করে ডোমজুড় থানার পুলিশ। খবর পেয়ে বুধবার সকালে কলকাতার প্রিন্স গোলাম মহম্মদ রোডের একটি বাড়ি থেকে আরিয়ান খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আরিয়ান খানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ মূল অভিযুক্ত শ্বেতা খানের খোঁজ পেতে চায়। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের আড়ালে যে সফট পর্ণগ্রাফি চলতো তার সাথে আরও কেউ যুক্ত আছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। 
সোদপুরের এক তরুণীকে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রায় পাঁচ মাস হাওড়ার বাঁকড়ার একটি ফ্লাটে আটকে রেখে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ হাওড়ার বাঁকড়ার বাসিন্দা শ্বেতা খান এবং তাঁর পুত্র আরিয়ানের বিরুদ্ধে। গত শনিবার এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে বেপাত্তা মা ও ছেলে। মা শ্বেতা খানের কোন খোঁজ না পাওয়া গেলেও ছেলে আরিয়ান খানকে বুধবার সকালে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বাঁকড়ার ফকির বাগান এলাকার একটি চারতলা ফ্লাটে বসবাস করতেন শ্বেতা খান ও আরিয়ান। ঘটনার পর থেকেই ফ্লাটে তালা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান শ্বেতা ও আরিয়ান এলাকায় বেশ প্রভাবশালী। নানা ধরনের অসামাজিক কাজকর্মের সাথে যুক্ত ছিলেন বলেও জানান স্থানীয়রা। কেউ প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন। তাদের ফ্লাটে রাতে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের যাতায়াত ছিল বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। 
শ্বেতা খানের সমাজ মাধ্যমে তার সাথে রাজ্যের একজন মন্ত্রী থেকে শুরু করে শাসক দলের বিভিন্ন নেতাদের ছবি দেখা গেছে। শাসক দলের বিভিন্ন মিছিলে তার উপস্থিতিও দেখা গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ শাসক দলের বিভিন্ন নেতাদের সাথে শ্বেতা খানের যোগাযোগ ছিল। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের আড়ালে মা ও ছেলের সফট পর্ণ চক্রের কুকীর্তি চালাত বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। প্রশ্ন উঠছে বিলাসবহুল এই জীবনযাত্রা কিভাবে চালিয়ে যেতেন শ্বেতা ও আরিয়ান। সফট পর্ণ সাম্রাজ্যের জোরেই কি এই প্রভাব প্রতিপত্তি। শাসক দলের নেতাদের সাথে শ্বেতার ছবি ঘিরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। 
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে শ্বেতার বিভিন্ন ‘কীর্তি’র কথা উঠে আসছে। অভিযোগ, দাগী অপরাধীদের সঙ্গে ছিল তাঁর ওঠাবসা। শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তি দখল করতে ২০১৫ সালে গুন্ডা ভাড়া করেছিলেন তিনি। শ্বেতার উপস্থিতিতেই সেই গুন্ডারা গুলি চালায় বলে অভিযোগ। তখন আগ্নেয়াস্ত্র-সমেত গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বাঁকড়ার যুবতী। আরিয়ান খানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে এই খবর পৌঁছাতে এলাকার বাসিন্দারা জানান কিছুটা স্বস্তি পেলেও মূল অভিযুক্ত শ্বেতা খানকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত এলাকায় বাসিন্দাদের মনে শান্তি ফিরবে না। 

Comments :0

Login to leave a comment