আদালতের ভাষা হোক লিঙ্গ নিরপেক্ষ। এই মর্মে আবেদন জানালেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। কেবল সদিচ্ছা প্রকাশই নয়, শব্দ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে ‘হ্যান্ডবুক’ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট।
মহিলাদের ক্ষেত্রে তো বটেই সুপ্রিম কোর্টের এই পরামর্শ পুস্তিকায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এলজিবিটিকিউ প্লাস অংশকেও। লিঙ্গ পরিচয়ের কারণে কাউকে তাচ্ছিল্য না করার এই উদ্যোগ আদালতের বাইরে, সমাজজীবনেও গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে শীর্ষ আদালত।
যেমন ‘হ্যান্ডবুক’-এ পরামর্শ, রায় বা সওয়াল থেকে শুরু করে নথি লেখার সময়ও কোনও মহিলাকে ‘স্বামী এবং পরিবারের প্রতি দায়িত্বসম্পন্ন’ উল্লেখ করা অপ্রয়োজনীয়। মহিলা বলাই যথেষ্ট। কোনও মা’কে বিবাহিত বলারও প্রয়োজন নেই, কেবল তিনি একজন মা, এই পরিচয়ই প্রয়োজনীয়। তেমনই ‘সংসারী’ বা ‘সৎ গুণ সম্পন্না’ বলারও প্রয়োজন পড়ে না কোনও মহিলার বিষয়ে লেখা বা বলার আগে।
আবার কাউকে ‘জৈবিক পুরুষ’ বা ‘জৈবিক মহিলা’ বলার দরকার নেই, বলছে এই পরামর্শ পুস্তিকা। বলা হয়েছে, তার বদলে উল্লেখ করা হোক যে জন্মের সময় সেই ব্যক্তির যৌনত্ব পুরুষ বা মহিলা। আবার ‘মেয়েলি’ শব্দ ব্যবহার করে কাউকে বর্ণনাও আপত্তিকর বলে জানিয়েছে এই পুস্তিকা।
লিঙ্গচেতনা সম্পর্কে সামাজিক স্থবিরতা কাটাতে উদ্যোগী হতে বলছেন প্রধান বিচারপতিই। মুখবন্ধে তিনি বলছেন, ‘‘এমন শব্দ প্রয়োগে মামলার ফলাফল বদলে যায় না এটা ঠিক। কিন্তু সংবিধানের মর্মবিরোদী ধারণাকে সমাজে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। আইনের পরিধিতে ভাষার গুরুত্ব রয়েছে। শব্দের মধ্যে দিয়েই আইন সম্পর্কে বোধ সমাজে পৌঁছায়।’’
সুপ্রিম কোর্টের সামাজিক ন্যায় সাব কমিটির প্রধান কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য এবং তাঁর সহযোগীরা তৈরি করেন এই পুস্তিকার খসড়া। যুক্ত ছিলেন দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি প্রতিভা এম সিং, প্রাক্তন বিচারপতি গীতা মিত্তল এবং আইনজীবী ও এনইউজেএস’র শিক্ষিকা ঝুমা সেন।
Comments :0