Chandannagar Eve Teasing

বিচার আদায়ে সঙ্গে থাকার বার্তায় চন্দননগরে সুতন্দ্রার বাড়িতে সেলিম, মীনাক্ষী

রাজ্য জেলা

চন্দননগরে সুতন্দ্রা চ্যাটার্জির মা ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন মহম্মদ সেলিম, মীনাক্ষী মুখার্জি।

গাড়ি নিয়ে তাড়া করেছিল দুষ্কৃতীরা। ধাক্কাও দিয়েছিল মেয়ের গাড়িতে। সেই গাড়ি উলটে মৃত্যু হয়েছে মেয়ে সুতন্দ্রা চ্যাটার্জির। মঙ্গলবার চন্দননগরে সেই যুবতীর বাড়িতেই গেলেন মহম্মদ সেলিম এবং মীনাক্ষী মুখার্জি। 
রবিবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ সহকর্মীদের সঙ্গে চন্দননগর থেকে গয়ায় যাচ্ছিলেন একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার আধিকারিক সুতন্দ্রা। তাঁর গাড়ির চালকই জানিয়েছেন বুদবুদে পেট্রল ভরার সময় থেকেই পিছু নেয় একটি গাড়ি। পিছন থেকে কটূক্তি করা হতে থাকে, তাড়া করতে থাকে সুতন্দ্রাদের গাড়িটিকে। কাঁকসার পানাগড়ে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের কাছে জোরে ছুটতে গিয়ে উলটে যায় সুতন্দ্রাদের গাড়ি। মৃত্যু হয় তাঁর।
মঙ্গলবার ডানকুনিতে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশ থেকেই রাজ্য সম্পাদক সেলিম বলেন যে ঘটনায় তৃণমূলের যোগ রয়েছে। সে কারণেই পুলিশ ইভটিজিংয়ের অভিযোগকে আড়াল করতে চাইছে। তিনি এবং মীনাক্ষী যাবেন চন্দননগরে, ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে। 
সন্ধ্যায় চন্দননগরে পৌঁছে যান তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ। সেলিম বলেন, ‘‘এই পরিবারের বিচারের জন্য লড়াইয়ে পাশে থাকবে পার্টি। বিচার আদায় করতে হবে।’’ 
সুতন্দ্রার মা তনুশ্রী চ্যাটার্জি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন ক্ষোভ। তিনি বলেছেন যে রাস্তা দিয়ে মদ খেতে খেতে যাবে? এটা কী? কোথায় বাস করছি আমরা? আমার মেয়ে তো ফিরে আসবে না, কিন্তু আরও মেয়েরা রয়েছে। বাইরে কাজ করতে হচ্ছে, কেউ তো আর ঘরে বসে থাকবে না। মেয়ে মানেই এখন হয়ে গিয়েছে ভোগ্য বস্তু।
রাজ্যে বারবার মহিলাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করা হবে কেন, বারবার বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামতে হয় কেন- ডানকুনি স্পোর্টিং ক্লাবের সমাবেশে সেই প্রশ্ন তুলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির সদস্য দেবলীনা হেমব্রম, মীনাক্ষী মুখার্জি। 
দেবলীনা বলেছেন, ‘‘আসলে প্রশাসনের মাথা থেকে বলে দেওয়া হচ্ছে ছোট্ট ঘটনা। তাই সাহস পাচ্ছে অপরাধীরা।’’ 
মীনাক্ষী মনে করিয়েছেন আর জি কর কাণ্ডকে। তিনি বলেছেন, ‘‘জবাব দিতে হবে কেন তাড়াতাড়ি দেহ সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। কেন সেই গাড়ি আটকাতে জান বাজি করে নামতে হয়েছিল ছাত্র-যুবদের।’’ 
সমাবেশে প্রকাশ কারাতও রাজ্যে ধারাবাহিক নারী নির্যাতনে খেদ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের ব্যবহার করা হয়েছিল কমিউনিস্টদেরকে দুর্বল করতে। আমরা তখন বলেছিলাম প্রথমকে কমিউনিস্টরাই আক্রান্ত হয়। কিন্তু এই বাহিনী সমাজের অন্যদেরও আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করবে। এরাজ্যে তা-ই হচ্ছে।’’ 
কারাত বলেন, ‘‘রাজ্য সম্মেলনের জন্য গত চারদিন ডানকুনিতে ছিলাম। প্রতিদিন সংবাদপত্রে নারীদের ওপর অত্যাচারের খবর। চন্দননগরের সুতন্দ্রা চ্যাটার্জির ঘটনার উল্লেখ করেন তিনি। কারাত বলেন, ‘‘মহিলাদের ন্যূনতম সুরক্ষা নেই রাজ্যে। এই হুগলীতেই গাড়িতে এক মহিলাকে ধাওয়া করেছে গুণ্ডারা। মহিলার মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে।’’

Comments :0

Login to leave a comment