ভারতে ওমিক্রনের ভিন্নরূপ এক্সবিবি এবং বিএফ-৭ সংক্রমণের কিছু ঘটনা সামনে এসেছে। কিন্তু এই সংক্রমণ মারাত্মক আকার নেওয়ার তেমন সম্ভাবনা নেই। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে সাংবাদিকদের এই কথা জানান, বিখ্যাত ভাইরাস বিশেষজ্ঞ গগনদ্বীপ কাঙ।
চীন সহ বিশ্বের কিছু দেশে কোভিডের অত্যন্ত সংক্রামক ওমিক্রনের নবরূপ বিএফ-৭ ছড়িয়ে পড়ার আবহে কাঙয়ের মন্তব্য গুরুত্বপূর্ণ। ‘‘এগুলি ওমিক্রনের অন্যান্য ভিন্নরূপের মতো। প্রতিরোধ শক্তি এড়িয়ে এরা সহজেই সংক্রমণ ছড়ায়। কিন্তু এর ফলে করোনার ডেল্টা রূপের চেয়ে কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই,’’ টুইটে জানান ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিক্যাল কলেজের গ্যাসট্রোইনটেস্টিনাল সাইন্সের অধ্যাপক কাঙ।
কাঙ বলেন, বর্তমানে ভারতের অবস্থা ভালো। কিন্তু ভাইরাসের গতিপ্রকৃতির দিকে লাগাতার ভাবেই নজর রাখতে হবে। প্রসঙ্গত, ওমিক্রনের বিএ-৫’র রূপভেদ বিএফ-৭। এপর্যন্ত কোভিডের ওমিক্রন নবরূপের মধ্যে বিএফ-৭ সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা সব থেকে বেশি। খুব সহজেই বিএফ-৭ আক্রান্তের থেকে অন্যদের সংক্রমিত করতে পারে। ওমিক্রনের এই রূপভেদের সুপ্তাবস্থার মেয়াদও কম। পাশাপাশি বিএফ-৭ পুনরায় সংক্রমণ ছড়াতে এবং টিকা প্রাপ্তদের সংক্রমিত করার ক্ষমতা বেশি।
কাঙ আরও জানান, চীন খুব দ্রুত কোভিডের বিধিনিষেধ খুলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে। এমন একটা সময়ে যখন দেশের বিশাল অংশের প্রাকৃতিকভাবে সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে অক্ষম। চলতি সংক্রমণ ঘটছে ওমিক্রনের ভিন্নরূপ থেকে। টিকা নেওয়া মানুষের যা হয়ে গেছে। এই কারণে চীনে অতি দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে।
ভাইরাস বিশেষজ্ঞ বলেন, চীনের মানুষ কোভিডের দু’টি টিকা নিয়েছেন। ‘‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সংক্রমণ বাড়িতে থেকেই মোকাবিলা করা সম্ভব। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা প্রচুর হওয়া থেকে বোঝা যায় একটা ছোট অংশের রোগীদের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের একটা অংশ মারাও যাবেন,’’ টুইটে লেখেন কাঙ।
তিনি মনে করিয়ে দেন যাথাযথভাবে কোভিডের বিধিনিষেধ কার্যকর হলে ওমিক্রন গুরুতর আকার নেয় না। এর তীব্রতা ডেল্টা রূপের থেকে কম। অবশ্য এর উপসর্গ মৃদু নয়। কিন্তু এক্ষেত্রে রোগীর লোয়ার রেসপিরেটরি ট্রাক্ট থেকে আপার রেসপিরেটরি ট্রাক্ট বেশি সংক্রমিত হয় না।
কাঙ লিখেছেন চীনের কোভিডের নতুন ঢেউ আনা ওমিক্রনের এক্সবিবি এবং বিএফ-৭ রূপভেদগুলি কিছু সময় ধরেই ভারতে ছিল। তাই ভারতে ভাইরাসের রূপভেদগুলি থেকে মারাত্মক আকারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে বলে মনে হয় না।
তিনি বলেন, ভারতীয়রা টিকা নিয়েছেন। এদেশে সংক্রমণের হার ছিল ৯০ শতাংশ। বেশির ভাগটাই ওমিক্রন ছড়ানোর ফলে। এর ফলে ভারতীয়দের মধ্যে সঙ্কর প্রতিরোধ শক্তি তৈরি হয়েছে।
একই সঙ্গে তিনি পরিবারের বয়স্কদের টিকার অতিরিক্ত ডোজ দেওয়া, শ্বাসনালীতে সংক্রমণ ঘটলে বাড়িতে থাকা এবং ভিড়ে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
এদিকে শনিবার থেকে বিমানে আগত বিদেশের যাত্রীদের মধ্যে করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা শুরু হবে। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক থেকে এই কথা জানানো হয়েছে। বিদেশের থেকে আসা যাত্রীদের কোভিড পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে বিমানের কর্মীদের। এই পদ্ধতিতে কোনও একটি উড়ানের মোট যাত্রী সংখ্যার ২ শতাংশের কোভিড পরীক্ষা করা হবে।
Comments :0