TMC LIBEL

কুৎসা তৃণমূলের, শিক্ষাকর্মী নিয়োগের
বিধি জানিয়ে ক্ষোভ শিক্ষাবিদের

রাজ্য

TMC LIBEL

সরকার পোষিত কলেজে ‘গ্রুপ ডি’ শিক্ষাকর্মী নিয়োগের পদ্ধতি কী? কে করত? কোন পদ্ধতিতে হতো এই নিয়োগ? সিপিআই(এম) বা বামফ্রন্ট নেতার কোনও পরিজনকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল কি? 

তৃণমূল সরকারের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং দলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ এখন লক্ষ্যবস্তু করেছেন সিপিআই(এম)’কে। সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী কাজ করতেন গড়িয়া দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে। ১৯৮৭’তে শিক্ষাকর্মী পদে তাঁর নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলছে তৃণমূল। 

মহেশতলা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সৌমেন্দু সেনগুপ্ত বলছেন, সেই সময়ে নিয়োগের নিয়ম কী ছিল জেনে নিতে হবে তৃণমূল নেতাদের। দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজ সরকার পোষিত প্রতিষ্ঠান। ১৯৮৭’তে, যে সময়ের কথা তুলেছে তৃণমূল, তখন শিক্ষাকর্মী নিয়োগের আগে শিক্ষা দপ্তরের অনুমোদন নিতে হতো। অনুমোদন মিললে কলেজর গভর্নিং বডি গড়ে দিত সিলেকশন কমিটি। বাছাইয়ের দায়িত্ব সিলেকশন কমিটির। 

এরপর বিজ্ঞাপন প্রকাশ করতে হতো সংবাদপত্রে। যোগ্যতা মাপকাঠি কী, জানাতে হতো। যোগ্য প্রার্থীদের আবেদন জানাতে বলা হতো। এরপর ইন্টারভিউ করে তিনজনের প্যানেল তৈরি হতো। সেই প্যানেল অনুযায়ী গভর্নিং বডি নিয়োগপত্র দিত। 

সেখানেই শেষ নয় নিয়োগ প্রক্রিয়ার। চাকরি পেলেন যিনি, তাঁকে যোগদান করার ‘জয়েনিং রিপোর্ট’ দিতে হতো। তারপর নিয়োগ সংক্রান্ত সব তথ্য অধিকর্তার দপ্তরে পাঠানো হতো। প্রাক্তন অধ্যক্ষ জানাচ্ছেন, আধিকারিকরা কাগজপত্র পরীক্ষা করে পদ্ধতি মেনে চলা হয়েছে নিশ্চিত হলে বেতন কাঠামো নির্ধারণ সংক্রান্ত আদেশনামা বা ‘পে ফিক্সেশন অর্ডার’ জারি করতেন। 

সেনগুপ্ত মনে করাচ্ছেন, যে অবসরের আগে এই তথ্য হিসেবরক্ষক প্রতিষ্ঠান এজি বেঙ্গলকে পরীক্ষার জন্য পাঠাতে হয়। তথ্য ঠিক এবং যথার্থ হলে পেনশন চালু হয়। 

শিক্ষাবিদরা মনে করাচ্ছেন কলেজে শিক্ষাকর্মী নিয়োগে ১৯৮৭’র বিধিতে আলাদা লিখিত পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল না। সম্প্রতি তা চালু করা ঘোষণা হলেও এই প্রক্রিয়া কোনও নিয়োগ এখনও হয়নি। তাঁদের অনেকেরই দাবি, বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে নিয়োগে দুর্নীতির ফাঁকা আওয়াজ দিয়ে লাভ নেই। বিশদ তালিকা প্রকাশ করুক তৃণমূল সরকার। তখনই স্পষ্ট হবে নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে ভুয়ো অভিযোগ তুলছে তৃণমূলের মন্ত্রী এবং নেতারা। তাঁরা বলছেন, যে ক্ষেত্রে পরীক্ষার নিয়ম ছিল, সেখানে পরীক্ষা থেকে ফল প্রকাশ এবং নিয়ম হয়েছে নিয়ম মেনে। আবার যেখানে ইন্টারভিউতে নিয়োগ হতো, নির্দিষ্ট বিধি মেনেই তা হয়েছে। কারও ওএমআর শিটের নম্বর বেড়ে বা কমে যায়নি রেজাল্টে। শয়ে শয়ে কোটি টাকার বিনিময়ে চাকরির সংগঠিত চক্রের অস্তিত্ব ভাবাও যেত না। 

প্রশ্ন তুলেছেন সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তীও। তিনি বলছেন, আমার জয়েনিং লেটার বের করা হয়েছে ফাইল থেকে। তা’হলে অন্য নথিগুলি কেন বের করা হচ্ছে না? 

মিলি চক্রবর্তীর বক্তব্য, নিয়োগের সময় যে ইন্টারভিউ বোর্ড হয়েছিল, তার পরীক্ষা হয়েছিল, তার ফলাফলে তিনি প্রথম হয়েছিলেন- সেই সব নথি হিসেবে রয়েছে। তিনি বলছেন, ‘‘যাঁরা জয়েনিং লেটার কেবল প্রকাশ করেছেন তাঁরা বাকি সব নথি প্রকাশ করুন। সুপারিশ কোথায় হয়েছে প্রমাণ দিন। আসলে নিজেদের দুর্নীতি একের পর এক ধরা পড়ছে বলে এমন অভিযোগ তুলছেন।’’ 

Comments :0

Login to leave a comment