বর্ষবরণের আপাত রোশনাইয়ের মধ্যেই ভারতবর্ষের অর্থনৈতিক দুরবস্থার ছবি উঠে এল সেন্টার ফর মনিটারিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি(সিএমআইএ)’র করা সমীক্ষায়। দেশের অর্থনীতি নিয়ে কাজ করা প্রথম সারির সমীক্ষা এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলির অন্যতম হল সিএমআইএ।
সিএমআইএ’র করা সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৮.৩০ শতাংশ। এর মধ্যে শহুরে বেকারত্বের হার ১০.০৯ শতাংশ এবং গ্রামে বেকারত্বের হার ৭.৪৪ শতাংশ। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বেকারত্বের হার ছিল সর্বাধিক।
সিএমআইএ’র সমীক্ষায় চোখ বোলালে দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি দুর্বল হওয়ার আগাম ছবি স্পষ্ট হচ্ছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বেকারত্বের হার ৮ শতাংশ ছাড়িয়েছিল। তারপর থেকে কিছুটা গতি ফেরে অর্থনীতির। জুলাই মাসে বেকারত্বের হার কমে দাঁড়ায় ৬.৮৩ শতাংশে। কিন্তু এরপর থেকে ক্রমেই নিচের দিকে নেমেছে বেকারত্বের সূচক।
সেই মোতাবেক আগস্ট মাসে বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়ায় ৮.২৮ শতাংশে। এরমধ্যে শহুরে বেকারত্বের হার ছিল ৯.৫৭, এবং গ্রামের হার ছিল ৭.৬৮। উৎসবের মরশুমে সামগ্রিক চাহিদা বৃদ্ধির ফলে সর্বিক বেকারত্বের হার খানিক কমে হয় ৭.৭৭। কিন্তু নভেম্বর থেকে ফের ৮ শতাংশে পৌঁছে যায় দেশজোড়া বেকারত্বের হার, যা ডিসেম্বের মাসে আরও বৃদ্ধি পায়।
সিএমআইএ’র সমীক্ষা অনুযায়ী ডিসেম্বর মাসে হরিয়ানার বেকারত্বের হার ৩৭.৪ শতাংশ, রাজ্যগুলির নিরিখে যা সর্বাধিক। এর ঠিক পরেই রয়েছে রাজস্থান(২৮.৫%) এবং দিল্লি(২০.৮%)। এরমধ্যে পশ্চিমবঙ্গে কর্মহীনতার হার ৫.৫ শতাংশ।
অর্থনীতির সূত্র অনুযায়ী, মুদ্রাস্ফীতি বাড়লে স্বাভাবিক নিয়মে চাহিদা কমে। আয় না বাড়ায় ক্রয়ক্ষমতা কমে। তারফলে কমে চাহিদা, এবং চাহিদা কমার ফলে জোগানও কমে। জোগান কমার ফলে কর্মী সঙ্কোচন হয়। সরকারি বিনিয়োগ না বাড়লে গ্রাম-শহর সর্বত্র কর্মী সঙ্কোচন চলতে থাকে।
সিপিআই(এম) এবং বামপন্থীরা সরকারি বিনিয়োগ, বিশেষ করে কর্মসংস্থান হয় পরিকাঠামোর এমন ক্ষেত্রগুলিতে, তারজন্য দেশের সরকারের কাছে সরবে দাবি তুলেছে। মূল্যবৃদ্ধি এখনই কমানোর জন্য ব্যবস্থার নেওয়ার কথাও বলেছে। কর্মহীনতার বিপজ্জনক হার বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের গোটা সময়কালেই দেখা গিয়েছে।
Comments :0