‘সেবি’-র প্রাক্তন চেয়ারপার্সন মাধবী পুরী বুচের দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তের নির্দেশ দিল মহারাষ্ট্রের আদালত। এফআইআর দায়ের করে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যের দুর্নীতি রোধ ব্যুরোকে।
ভারতে শেয়ার বাজারেরনিয়ামক প্রতিষ্ঠান ‘সেবি’। এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারপার্সন পদে ছিলেন বুচ। বিদেশে মাধবী পুরী বুচের বিনিয়োগের সঙ্গে ভুয়ো নামে আদানি গোষ্ঠীর চালানো তহবিলের যোগ পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। মার্কিন শেয়ার বাজার বিশ্লেষক সংস্থা হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে এই যোগাযোগ দেখানো হয়। রিপোর্টে বলা হয়েছিল, এই সংযোগের কারণেই ‘সেবি’ ভারতের শেয়ার বাজারে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার ফাঁপিয়ে বাড়ানোর অভিযোগের তদন্ত করেনি।
এদিন মহারাষ্ট্রের বিশেষ আদালত বুচের সঙ্গে ‘সেবি’-র আরও পাঁচ আধিকারিকের নামেও এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিয়েছে। দুর্নীতি রোধ ব্যুরোর অভিযোগ বিচারের বিশেষ আদালত বলেছে, প্রাথমিক বিচারে শেয়ার বাজারের বিধিতে গরমিল থাকলেও তা এড়িয়ে যাওয়ার প্রমাণ রয়েছে। তার পিছনে গভীর যোগসাজশেরও সম্পর্ক রয়েছে। বিষয়টির স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন।
হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টেই বলা হয়েছিল ভুয়ো সংস্থার নামে আদানি গোষ্ঠী ঘুরিয়ে বিদেশে নিজেদের চালানো তহবিল থেকেই ভারতে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করছে। এই বিনিয়োগকারীরা মুখ্যত আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার কিনেছে। এভাবে বাড়ানো হয়েছে শেয়ারের দাম। শেয়ার দামের ৮০ শতাংশই ভাঁড়ানো। দেখা গিয়েছিল রিপোর্ট প্রকাশের পরই আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারের দাম পড়তে থাকে হু-হু করে।
শেয়ার বাজারে এই কেলেঙ্কারিতে সমস্যায় পড়েছে জীবন বিমা নিগম বা স্টেট ব্যাঙ্কের মতো সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আদানি গোষ্ঠীর গভীর যোগাযোগ নিয়ে তোলপাড় হয়েছে সংসদেও। কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে দিয়ে কেনানো হয়েছিল আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার।
এদিন মহারাষ্ট্রের আদালত ৩০ দিনের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। আদালত জানিয়েছে যে তদন্তের গতিপ্রকৃতিতে নজরদারি থাকবে।
দুর্নীতি রোধ আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন এক সাংবাদিক। তিনি গভীর তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। অভিযোগে বলা হয়, ভুয়ো এবং জাল বিভিন্ন সংস্থার নাম শেয়ার বাজারে লেনদেনের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছিল। ‘সেবি’ আইনের ভিত্তিতে শেয়ার বাজার পরিচালনার বিভিন্ন বিধি লঙ্ঘন করা হয়। ‘সেবি’-র নজরদারি ছিল না বলেই তা সম্ভব হয়েছে। তার ফলে বাজারে কারচুপি করা সম্ভব হয়েছে। কর্পোরেট দুর্নীতির সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। যাদের শেয়ার বাজারে লেনদেনের যোগ্যতাই নেই তাদের নাম ঢোকানো হয়েছে তালিকায়।
লক্ষ্যণীয়, বিরোধীদের দাবি সত্ত্বেও কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার বুচকে কার্যকালের পুরো তিন বছরের মেয়াদ সম্পূর্ণ করতে দিয়েছে। শুক্রবারই তাঁর মেয়াদ শেষ হয়েছে চেয়ারপার্সন পদে।
SEBI Madhabi Puri Buch
শেয়ার কারচুপি: ‘সেবি’-র প্রাক্তন প্রধানের বিরুদ্ধে এফআইআর’র নির্দেশ আদালতের

×
Comments :0