Dengue

বর্ধমানে একই ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১২ জন

জেলা

ডেঙ্গু আক্রান্তের খবর পেয়ে পচা দুর্গন্ধময় পরিবেশে স্বাস্থ্যকর্মীরা নাকে কাপড় দিয়ে রসিকপুরে ঢুকছেন।

অস্বাস্থ্যকর মশার আঁতুর ঘর বর্ধমান শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড। দীর্ঘদিন ড্রেন পরিস্কার হয় না, ডোবা, নালা সবই আবর্জনায় দুর্গন্ধময় পরিবেশে মশার উপদ্রবে একই ওয়ার্ডে ১২জন ডেঙ্গু আক্রান্ত। বর্ধমান শহরের ৩নম্বর ওয়ার্ডের রসিকপুর এলাকায় ডেঙ্গুর থাবায় ১২জন আক্রান্ত হবার পর পৌরসভার ঘুম ভেঙ্গেছে। তড়িঘড়ি স্পেশাল ফিভার ক্লিনিক খুলে রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে চোখে পড়েছে ঘিঞ্জি এলাকা রসিকপুরে চারিদিকে জমাজল, নালা অপরিস্কার, দুর্গন্ধময় পরিবেশে মানুষের ক্ষোভ চোখে পড়েছে। 
অন্যদিকে জেলায় ১০০ বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। বর্ধমান শহরের ৩নম্বর ওয়ার্ডের পাশেই জেলখানা সেখানে কয়েকশো মানুষ থাকেন। সেই এলাকায় যাতে কোন ভাবে ডেঙ্গু না ছড়িয়ে পড়তে পারে তার উপর নজরদারি চালাতে জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর। 
গত সপ্তাহে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রসিকপুর এলাকায় তিন জনের রক্তে ডেঙ্গু পজিটিভ পাওয়া যায়। এখনো পর্যন্ত মোট ১২ জনের রক্তে ডেঙ্গু পজিটিভের খবর মিলেছে। লাগাতার ডেঙ্গু পজিটিভ হওয়ায় শহরের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাবার পর এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাগরিকদের লিফলেট বিলি করে সচেতন করা ছাড়া আর কিছুই করছে না পৌরসভা। বাড়িতে জল জমা থেকে নোংরা আবর্জনা সব ক্ষেত্রেই যাতে বাসিন্দারা বিরত থাকেন তার প্রচার চলছে জোরকদমে। প্রচারে পৌরকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি জোর দেওয়া হয়েছে রক্ত পরীক্ষার উপর। 


তবে এলাকার নাগরিক সেখ হাসমত, মহম্মদ হায়দাররা পৌরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তাদের দাবি, ড্রেন থেকে ময়লা তোলা হলেও তা রাস্তার পাশেই পরে থাকে। ওই নোংরা আবর্জনা আবার ড্রেনে গিয়ে মেশে। ফলে ড্রেনে জল জমে থাকে। আবার নিয়মিত পরিস্কার হয়না। এখন ডেঙ্গু ধরা পরেছে বলে পৌরসভা সাফাই অভিযানে জোর দিয়েছে। অন্যদিকে এই অভিযোগও এসেছে লোকসভা ভোটে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে তৃণমূল হেরে যাবার পর দীর্ঘদিন এলাকায় রাস্তাঘাট ড্রেন পরিস্কার করা হয়নি। ময়লা দুর্গন্ধময় আবর্জনার মধ্যেই মানুষকে বাস করতে হয়েছে।

স্বাস্থ্য দপ্তরের কড়া নির্দেশ পেয়ে রসিকপুরের একটি স্কুল ঘরে ফিভার টেস্ট ও রক্ত পরীক্ষার ক্যাম্প করা হয়েছে। ডেঙ্গু আটকাতে ৯৪ জন আশাকর্মী, ২ জন মেডিকেল অফিসার, ১ জন ফার্মাসিস্ট, ২ জন ল্যাব টেকনিশিয়ান, স্টাফ  নার্স ১ জন, ১ জন এ এন এম, ১ জন এল ডি সি সহ নির্মল সাথী কর্মীদের নিযুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে, এলাকার ড্রেন ও রাস্তাঘাট অপরিস্কার তা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।

বুধবার সুডার একটি প্রতিনিধিদল এলাকা পরিদর্শনে যায়।  স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাস থেকে এখন পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমান জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা শতাধিক। বর্ধমান পৌরসভার চেবারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, লিফলেট বিলি, বাড়ি বাড়ি প্রচার করেও এই ওয়ার্ডে এখনো পর্যন্ত ১২ জনের রক্তে ডেঙ্গু পজিটিভ মিলেছে। তারপরই পৌরসভা, স্বাস্থ্যদপ্তর সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মীরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে নামেন। এলাকা আবর্জনা মুক্ত করা থেকে ড্রেনের জল জমা আটকাতে জোরকদমে সাফাই অভিযান করা হচ্ছে। অন্যদিকে জেলা উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ওয়ার্ডে ক্যাম্প খুলে রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধে জোরদার প্রচার চলছে এলাকায়। 

Comments :0

Login to leave a comment