বেলা বাড়ার সঙ্গে আশপাশের জমাজল এসে জলের পরিমা বাড়িয়ে পরিস্থিতি আরও বেগতিক করে তুলেছে।
আমহার্স্ট স্ট্রিট এলাকায় কোমর সমান জল জমে। যানবাহন চলাচল কার্যত বন্ধ, বিপুল জমাজল পেরিয়েই অনেককে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস আনতে গিয়ে কার্যত নাকানিচোবানি খেতে হয়। ঝামাপুকুর এলাকার একাধিক জায়গা জমাজলে কার্যত পুকুরের চেহারা নেয়। একাধিক ঘর হাঁটু সমান কোমর সমান জলে ভরে ওঠে।
২৭ নম্বর, ৩২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বিশেষত বস্তিবাসীদের ঘরগুলো জলের তলায় চলে যাওয়ার উপক্রম হয়। চিত্তরঞ্জন হাসপাতাল, এস এস কে এম হাসপাতাল সহ একাধিক হাসপাতালে হাঁটু সমান, কোমর সমান জল জমে চুড়ান্ত নাকাল হতে হয় রোগী ও তাঁদের পরিজনদের।
উল্টোডাঙা, পার্কসার্কাস, বিটি রোড, কলেজ স্ট্রিট, সিআর অ্যাভিনিউ, বড়িশা, বেহালা, ঠাকুরপুকুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় জল জমে আছে।
৬ নম্বর, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক বস্তি জলে প্লাবিত হয়ে পড়ে। ইট পেতে খাট উঁচু করে কোনো মতে ঘরে টিকে থাকার চেষ্টা করেও বিপুল জমা জলের দাপটে ঘরে থাকাই অনেকের কাছে দুষ্কর হয়ে ওঠে।
এদিকে এলাকায় এলাকায় টাইম কলের জল ডুবে যাওয়ার কারনে পানীয় জলের সমস্যায় জেরবার বাসিন্দারা।
এলাকায় এলাকায় নির্বিচারে জলাভূমি, পুকুর ভরাটকেই এই জলযন্ত্রণার অন্যতম কারন বলে অভিযোগ তুলছেন অনেকেই।
বেহালার এক বাসিন্দার কথায়, আগে জল জমলে তা কয়েক ঘন্টায় নেমে যেতো। কিন্তু এবারের বৃষ্টিতে ঠিক উল্টো ছবিটা দেখা যাচ্ছে। বৃষ্টি কমলেও মঙ্গলবার বেলা বাড়ার সাথে সাথে জমাজলের পরিমান বাড়ছে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পাম্পিং স্টেশনগুলোপ্রায় অকেজো, ড্রেনেজের পলি সঠিকভাবে পরিষ্কার করা হয়না। এর জেরে আশপাশের জমা জল বেরোতে না পেরে ওভার ফ্লো হয়ে অপেক্ষাকৃত নিচু জায়গাগুলোকে আরো প্লাবিত করে তুলছে। ঠাকুরপুকুর ও তার সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছেন দুই বেহালা ও দক্ষিণ কলকাতার জল নিকাশী ব্যবস্থার ক্ষেত্রে চড়িয়াল খাল অতি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বর্তমানে চড়িয়াল খাল সংলগ্ন জলাভুমি ভরাট করে প্রোমোটিং, সিন্ডিকেট বাহিনী ও জমি হাঙরদের ব্যবহার করে পকেট ভরার উদ্দেশ্য খালের অর্ধেকটা বুজিয়ে কয়েক ফুটের পাইপ বসিয়ে জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে পরিস্থিতি আরো শোচনীয় হচ্ছে।
কেনা কাঁচা মাল নষ্ট হয়ে যাওয়াতে মাথায় হাত পড়েছে বাজারেরে বিক্রেতাদের। উৎসবের মরশুমে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছেন বিশেষকরে মহানগরের হকাররা। ফুটপাত জলে ভেসে গেছে। অনেকেই চড়া সুদ, ধারদেনা করে উৎসবে বাড়তি রোজগারের আশায় জামা কাপড় থেকে হরেকরকম দ্রব্য কিনেছেন। বৃষ্টির জলে সেগুলোর সিংহভাগ ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। ছোটো দোকানী হকারদের মাথায় দুশ্চিন্তার হাত পড়েছে। ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হকার ও ছোটো দোকানীদের জন্য কলকাতা কর্পোরেশনের কাছে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে সিপিআই(এম)।
Kolkata Waterlogging
ভরাট হয়েছে জলাভূমি-খাল, নামছে না জল

×
Comments :0